ইমরানের সঙ্গে বৈঠকের পর ট্রাম্পের সুর বদল, হতাশ নয়াদিল্লি
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টনে ‘হাউডি মোদি’ অনুষ্ঠানে গিয়ে কার্যতঃ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে পড়তে দেখা যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। মোদি ভেবেছিলেন, অতিথি রাষ্ট্রপ্রধান হয়ে সেখানে গিয়ে ট্রাম্পের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় নামলে ডেনাল্ড ট্রাম্প বেশ খুশিই হবে। বিনিময়ে কাশ্মিরসহ নানা ক্ষেত্রে মার্কিন সাহায্য পাওয়া যাবে বলে আশা করেছিল নয়াদিল্লি। তবে মোদির এই চিন্তা ভাবনায় পানি ঢেলে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। পাশাপাশি কূটনীতিতে ট্রাম্প ও ইমরান খান যে নরেন্দ্র মোদির মাথার উপর দিয়ে চলেন সেটাও প্রমাণ হয়ে গেছে।
ট্রাম্পের পক্ষে মোদির নির্বাচনী প্রচারের পরদিন সোমবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে বৈঠকের পরে আবারো কাশ্মির প্রশ্নে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেন ট্রাম্প। ভারতীয় কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, তৃতীয়বারের মতো প্রস্তাব দিয়ে কার্যতঃ পাকিস্তানের পক্ষ নেয়ায় ট্রাম্প আরো একবার নয়াদিল্লিকে অস্বস্তিতে ফেললেন।
ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ করার পরে জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে গিয়ে নানা অনুষ্ঠানে কাশ্মির সঙ্কট নিয়ে আলোচনা করছেন ইমরান খান। কিন্তু সোমবার ট্রাম্পের উপস্থিতিতে মোদি যেভাবে কাশ্মির নিয়ে সুর চড়িয়েছেন, ‘সন্ত্রাস প্রশ্নে’ পাকিস্তানকে আক্রমণ করেছেন, তাতে ইমরান আর বিশেষ সুবিধা করতে পারবেন না বলে দাবি করছিলেন ভারতীয় কূটনীতিকরা।
কিন্তু পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি পাকিস্তানের ওপর ভরসা করি। আমি চাই কাশ্মিরে সকলে ভাল থাকুন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভাল। তারা দু’জনই যদি বলেন যে- আমাদের একটা সমস্যা দূর করার আছে, তাহলে আমি সেটা করতে পারি।’ একই সঙ্গে ট্রাম্প আরো বলেন,‘আমি খুবই ভাল মধ্যস্থতাকারী।’
এর আগে ইমরানের পাশে বসে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, কাশ্মীর নিয়ে মোদিই তাকে মধ্যস্থতাকারী হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। ভারত তার প্রতিবাদ করে জানিয়ে দেয়, কাশ্মীর দ্বিপাক্ষিক সমস্যা। শুরুতে নিজের অবস্থানে অনড় থাকলেও পরে মধ্যস্থতাকারী হতে চান না বলে মন্তব্য করেছিলেন ট্রাম্প।
হিউস্টনের মঞ্চে সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে নাম উল্লেখ না করে পাকিস্তানের সমালোচনা করেন মোদি। পাশাপাশি মোদিকে পাশে রেখে উগ্রবাদের বিরুদ্ধে যৌথ লড়াইয়ের কথা বলেন ট্রাম্পও। কিন্তু দিন পার হতে না হতেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে পাশে রেখে ট্রাম্প বলেন, ‘কাল ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণাত্মক মন্তব্য করতে শুনলাম। মোদির নিকট থেকে এ ধরণের মন্তব্য আমি আশা করিনি।’ ট্রাম্পের মুখে মোদির সমালোচনার পর ভারতের কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করতেই পারেন যে, পাকিস্তানের কূটনীতি নয়াদিল্লির মাথার উপর দিয়ে চলে।