বসল ব্রিটিশ পার্লামেন্ট, ফিরলেন বরিস

সুপ্রিম কোর্টের রায়কে ভুল বললেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

পার্লামেন্ট সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত বেআইনি— গতকাল বুধবার ব্রিটেনের সুপ্রিম কোর্ট এই রায় ঘোষণা করার পরে আজ বৃহষ্পতিবারই আবার পার্লামেন্টে অধিবেশন বসল। নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ সভার অধিবেশন ছেড়ে মাঝপথেই দেশে ফিরে আসতে হল প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে। যদিও সরকারি অ্যাটর্নি জেনারেল জিওফ্রে কক্স আজও নিজের সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়ে আর এক বিতর্ক তৈরি করলেন। তিনিই পার্লামেন্ট সাসপেন্ড করার উপদেশ দিয়েছিলেন সরকারকে।

আজ পার্লামেন্টে তার পদত্যাগের দাবি উঠলেও রীতিমতো উত্তেজিত কক্স সে দাবি উড়িয়ে বলেন, পার্লামেন্ট ‘অনৈতিক’ ভাবে একটি নির্বাচন আটকে দিতে চাইছে। সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ বিচারপতিরা তার মতামত খারিজ করে দিয়েছেন। এর পরেও কেন পদত্যাগ করবেন না কক্স, এ প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল এমপি-দের বলেন, সুপ্রিম কোর্ট এ ক্ষেত্রে ‘নতুন আইন’ তৈরি করেছে। সেটা তারা করতেই পারে বলে জানিয়েছেন কক্স। কিন্তু বিরোধীরা সাধারণ নির্বাচনের পথে বাধা তৈরি করতে চাইছে অভিযোগ তুলে কক্স বলেন, ‘এই পার্লামেন্ট মৃত। এর কোনও অধিকার নেই এই সবুজ বেঞ্চে বসার। ভোটারদের মুখোমুখি দাঁড়ানো সাহস থাকা উচিত পার্লামেন্টের।’ কক্সের একের পর এক মন্তব্যে আজ বসতে না বসতেই তুমুল হইহল্লা শুরু হয় পার্লামেন্টে। স্পিকার জন বার্কো অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেন, আপনার মতামত সুপ্রিম কোর্টে খারিজ হয়ে গিয়েছে। এমপি-রা ফের কাজ শুরু করুন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের দাবি, বার্কো এমন ভাবে কথা বলেছেন, যাতে মনে হয়েছে আদপে পার্লামেন্ট সাসপেন্ড করাই হয়নি!

আপাতত প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন সবাই। এ মাসের গোড়ায় টানা পাঁচ সপ্তাহের জন্য পার্লামেন্ট সাসপেন্ড করে বরিস জানিয়েছিলেন, তার নিজস্ব নতুন নীতি নিয়ে রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথ যাতে বক্তৃতা দিতে পারেন, তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। সাধারণত রানির বক্তৃতার আগে পার্লামেন্টে বিরতি ঘোষণা করা হয়। কারণ নতুন সরকার তার নীতি ঘোষণা করে রানির বক্তৃতার মাধ্যমেই। কিন্তু এ বার বিরতির বদলে বরিস পার্লামেন্ট সাসপেন্ড করায় সদস্যরা প্রশ্ন করা, কমিটি তৈরি বা বিল উপস্থাপন করার সুযোগই পাচ্ছিলেন না। সুপ্রিম কোর্টের প্রেসিডেন্ট লেডি ব্রেন্ডা হেল কাল বলেছেন, ‘গণতন্ত্রের মূল ভিত্তির উপরে এই সিদ্ধান্তের প্রভাব মারাত্মক।’

এদিকে প্রধানমন্ত্রী বরিস বলেছেন, পার্লামেন্ট স্থগিত করার সিদ্ধান্ত বেআইনি বলে সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন সেই রায় ভুল । তিনি বলেন, জাতীয় এই বিতর্কের সময় রাজনৈতিক প্রশ্নে এমন রায় দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের ভুল হয়েছে। দেশের এমন জাতীয় বিতর্কিত রাজনৈতিক একটি বিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ করা ঠিক হয়নি। গতকাল বুধবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টের অধিবেশনে সংসদ সদস্যদের (এমপি) উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। এ সময় বরিস জনসন সুপ্রিম কোর্টের রুল ‘ভুল’ ছিল বলে মন্তব্য করেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button