সৌদি-ইরান বিরোধে মধ্যস্থতা
ইরান সফরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী
রিয়াদ সফর আগামী সপ্তাহে
সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা কমিয়ে আনতে তেহরান সফরে রয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। রোববার ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। ইরানি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে জানিয়ে ইমরান খান বলেন, সৌদি আরব এবং ইরানের মধ্যে আলোচনার ব্যাপারে পাকিস্তান সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবে।
পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, সৌদি আরব এবং ইরান দুই মুসলিম দেশের মধ্যে কোনো রকমের সংঘাত থাকুক পাকিস্তান তা চায় না। তেহরান এবং রিয়াদের মধ্যে আলোচনার বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পেরে আমি ব্যক্তিগতভাবে খুবই খুশি। ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনার পর এ ব্যাপারে আশার আলো বেড়েছে বলেও মন্তব্য করেন ইমরান খান।
এর আগে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি, বিশেষ উপদেষ্টা জুলফিকার বোখারিসহ অন্যান্য সফরসঙ্গীদের নিয়ে তেহরান পৌঁছান ইমরান খান। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ তাদের বিমানবন্দরে স্বাগত জানান। বৈঠক শেষে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ও ইমরান খান যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে হাসান রুহানি বলেন, যেকোনো সদিচ্ছাকে ইরান স্বাগত জানায়। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে বৈঠকে আমরা একমত হয়েছি যে, আঞ্চলিক ইস্যুগুলো কূটনীতি এবং সংলাপের মাধ্যমে সমাধান হওয়া উচিত।
ইরান সফরের পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের রিয়াদ যাওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে সফরসূচিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম ডন। আজ সোমবার ইমরান খানের রিয়াদ সফরের কথা থাকলেও এদিন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সৌদি আরব সফরের কথা রয়েছে। পাকিস্তানের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সে কারণে আজ সোমবার ইমরান খান রিয়াদ সফরের পরিকল্পনা করেছেন না। এর বদলে আগামী সপ্তাহের কোনও একদিন রিয়াদ সফর করবেন তিনি।
সম্প্রতি উপসাগরীয় অঞ্চলের চিরবৈরী ও প্রতিদ্বন্দ্বী এ দুই দেশের মধ্যে টান টান উত্তেজনা চলছে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের দুটি তেল স্থাপনায় ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে দেশটির তেল উৎপাদন অর্ধেকে নেমে গিয়েছিল। এ ঘটনার জন্য ইরানকে হামলার জন্য দায়ী করে সৌদি আরব। এর পরই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চরমে পৌঁছতে থাকে।
বাকিক ও খরিচ তেল স্থাপনায় বিপর্যয়কর হামলার দুই সপ্তাহ পর সব জায়গায় একটি প্রশ্ন ভাসছে- প্রতিশোধ নিতে সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র কী ভাবছে? দুই মিত্রই এ ঘটনায় ইরানকে দায়ী করে শাস্তি পেতে হবে বলেই প্রচার চালিয়ে আসছে। ইরানকে দোষী প্রমাণিত করার পর তারা দেশটিকে কূটনৈতিকভাবে আরও বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে চলা উত্তেজনা প্রশমনে মধ্যস্থতা করার ঘোষণা দেন ইমরান খান।
গত মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নিয়ে ইমরান জানান, এ বিষয়ে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি এবং প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। সেই ঘোষণার অংশ হিসেবে রোববার তেহরানে পৌঁছান ইমরান খান।