ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ান হলো বলটনের হটচিলি

জমকালো আয়োজনে আরতা এওয়ার্ডস অনুষ্ঠিত

রিজিওনাল ও ন্যাশনাল পর্যায়ে ২৪টি এওয়ার্ড প্রদান

জমকালো আয়োজন আর বিনোদনের নানা আকর্ষনের মধ্য দিয়ে সফলতার সাথে অনুষ্ঠিত হলো এ্যাশিয়ান রেস্টুরেন্ট এণ্ড টেকওয়ে এওয়ার্ড (আরতা)-এর ২য় আসর। বৃটেনের বিভিন্ন প্রান্থ থেকে আসা রেস্টুরেটার্স, ইন্ডাস্ট্রি নেতৃবৃন্দ, এমপি, এমইপি, মেয়র, কাউন্সিল লিডারসহ বিশিষ্টজনের উপস্থিতিতে পুরো আয়োজন ছিলো জমজমাট। আরতা ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ান এওয়ার্ড লাভ করে বলটনের হট চিলি রেস্টুরেন্ট। ৫০ হাজার পাউন্ড মূল্যের সোনা খচিত ট্রফি হাতে পেয়ে এর ডিরেক্টররা আনন্দে উদ্বেলিত। বল্লেন, এই এওয়ার্ড সারা জীবন আমাদের হ্রদয়ে থাকবে। উচ্চ মানের সেবা ও ব্যাতিক্রমি খাবারের মাধ্যমেই আমরা এই পর্যায়ে আসতে পেরেছি।

অনুষ্ঠানে ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ান অব দ্য চ্যাম্পিয়ান্স ছাড়াও ৬টি ন্যাশনাল এওয়ার্ড প্রদান করা হয়। ন্যাশনাল শেফ অব দ্য ইয়ার বাকিংহাম শায়ারের রাধুনি, ন্যাশনাল নিউ কামার লন্ডনের হেভারিং-এর মাদার ইন্ডিয়া, ন্যাশনাল টেকওয়ে অব দ্য ইয়ার বাকশায়ার আসকটের পেপার মিলস, বেস্ট থাই রেস্টুরেন্ট লন্ডন ব্রমলির থাই মম, বেস্ট থাই শেফ ব্রমলির থাই ফিউশন, বেস্ট চাইনিজ রেস্টুরেন্ট লন্ডনের হারোর হাকাল্যান্ড। ছিলো লাইফটাইম এবং রেস্টুরেন্ট পার্সনালিটি এওয়ার্ড। মোট ২৪ প্রধানতম এওয়ার্ডের মধ্যে ছিলো ১৪টি রিজিওনাল রেস্টুরেন্ট অব্য দ্য ইয়ার। ১০টি করে রিজিওনাল শেফ এবং রিজিওনাল টেকওয়েকেও সম্মাননা প্রদান করা হয়। আয়ারল্যান্ডের শাপলা লাভ করে ইউরোপিয়ান রেস্টরেন্ট অব দ ইয়ার এওয়ার্ড।

লাইফ টাইম এচিভম্যান্ট এওয়ার্ড পান ৪৫ বছর আগে রেস্টুরেন্ট ইন্ড্রাস্ট্রিতে যুক্ত হওয়া ক্যান্টের নুরুল হক নুর আলী। বল্লেন, আমি ১৯৬৭ সালে তরুন বয়সে পিতামাতার সাথে লন্ডন আসি। কয়েক বছর পর যুক্ত হই রেস্টুরেন্ট-এর কাজে এবং পরে নিজে ব্যবসা শুরু করি। এ পর্যন্ত ১০টি রেস্টুরেন্টের মালিকনায় ছিলাম আমি। এছাড়া দেশে চ্যারিটি ও শিক্ষা সেক্টরে যুক্ত আছি।

অনুষ্ঠানে সাউথামটনের কুটিস ব্রাসারির মালিক কুটি মিয়া এ বছরের রেস্টুরেন্ট পার্সনালিটি এওয়ার্ড পেয়ে তার প্রতিক্রিয়ায় মাতিয়ে তুলেন সবাইকে। তার এলাকার বিশিষ্টজন, সেলিব্রেটি যোগদেন তার সাথে। তিনি বলেন, ব্যবসার পাশাপাশি স্থানীয় হসপিটাল, হোমলস চ্যারিটি ইত্যাদির সাথে নানা সেবা কাজে যুক্ত আমি। কারন, আমি নিজেকে খুুব সাধারন মানুষ মনে করি, আর সাধারনের সেবা করি। রেস্টুরেন্টও আমার জন্য শুধু ব্যবসা নয়, বরং সেবা। ভালোবাসাই আমার মূল সম্পদ।

অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন বিবিসি-এর নিউজ প্রেজেন্টার সামান্তা সিমন্ড এবং বিশ্বখ্যাত ম্যাজিক সার্কেল উপস্থাপক মল মার্টিন। আর অন্যতম আকর্ষন বলিউড শিল্পী ইন্ডিয়ান আইডল (৩য় আয়োজন) ফাইনেলিস্ট পারলিন জিল মাতিয়ে রাখেন পুরো হল। এছাড়া আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেজে, প্রেসিডেন্টের মতো উপস্থাপনার অভিনয় করেও আকর্ষন করেন আরেক শিল্পী। বিশাল সিকিউরিটি টিম নিয়ে অনুষ্ঠান স্থলে আসা-যাওয়া আর সেলফির ভীড় সব মিলিয়ে আলাদা এক পরিবেশ তৈরী করেন কথিত ট্রাম্প। ইংল্যান্ড ক্রিকেট হিরো মন্টি পেনসার, সাবেক চেলিসি ফুটবলার পিটার ব্রাউনসহ বেশ কিছু সেলিব্রেটিও এওয়ার্ড প্রদানে অংশ নেন।

সেন্ট্রা লন্ডনের ওয়েস্টমিনিষ্টার পার্ক প্লাজা হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আরতা এওয়ার্ড ফাউন্ডার এবং শেফ অনলাইনের সিইও এম এ মুনিম সালিক। তিনি বলেন, এ বছর আরতার ২য় বছর। আমরা শুরুতেই বলেছি কাস্টমারদের সাথে যোগসূত্রিতা তৈরীতে সবচেয়ে বেশী ভূমিকা রাখার কথা। আমাদের নিজেদের কানেকশনের প্রায় সাড়ে ৩শ হাজার কাস্টমারকে আমরা স্ব স্ব এলাকার পছন্দের রেস্টুরেন্টের জন্য নোমিনেশন প্রদানের আহবান জানাই। আর সেই প্রতিশ্রুতি থেকে আমরা সরি আসেনি। ফলে ৯ হাজারের বেশী কাস্টমার থেকে নোমিনেশন আসে। এছাড়া আমাদের এওয়ার্ড বিজয়ী এবং ফাইনেলিস্টরা কমিউনিটির পাশাপাশি রিজিওনাল ইংলিশ মিডিয়া এবং মেইনস্ট্রিম মিডিয়ায় খুব ভালো কাভারেজ পাচেছন। আমরা সামগ্রিক ভাবে ইন্ড্রাস্ট্রির জন্যও কাজ করছি। উদাহরন হিসেবে তিনি তুলে ধরেন আরতা অনুষ্ঠানের দুদিন আগে প্রচারিত আরতা এওয়ার্ডস এবং কারী ইন্ড্রাস্ট্রিকে কেন্দ্র করে বিবিসির একটি নিউজ।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন অল পার্টি পার্লামেন্টারি বোড অন কারি ইন্ড্রাস্ট্রি চেয়ার এবং আরতা এমবেসেডর পল স্ক্যালি এমপি, লন্ডনে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মোনা তাসনিম, লিবডেমের ডিপুটি লিডার লুইসা পুরেট এমইপি, আরতা জাজ যথাক্রমে অক্সফোর্ডব্রুক ইউনির্ভার্সিটিরি হসপিটালিটি ডিপাটম্যান্টের চেয়ার চেয়ার ডোনাল সোলন,ক্যামব্রিজ রিজিওনাল কলেজের শেফ লেকচারার গ্রাহাম টেইলর,এক্সিকিউটিভ শেফ চাদ রহমান ও সাবেক করবি মেয়র মুজিবুর রহমান।

বক্তারা বলেন, বৃটিশ বাংলাদেশী বা সাউথ এশিয়ান কারী ইণ্ডাস্ট্রির সামগ্রিক উন্নতিতে এওয়ার্ড বা মূল্যায়ণ একটি বড় ভূমিকা রাখছে। বিশেষজ্ঞদের জাজিং-এর পাশাপাশি রেস্টুরেন্ট কাস্টমারদের মনোনয়নের ভিত্তিতে আরতা এওয়ার্ড কালচারে নতুন একটি মাত্রা তৈরী করছে।

অনুষ্ঠানে চ্যারিটি পার্টনার ছিলো অক্সফাম। এছাড়া নোমিনেশন প্রদানকারী কাস্টমারদের মধ্য থেকে একজন কাস্টমারকে লটারির মাধ্যমে লাক্সারি হলিড প্যাকেজ উপহার প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে আরতা-র এমসিনিয়র এডভাইসার ক্যানারি ওয়ার্ফের ডিরেক্টর জাকির খান, কো ফাউন্ডার কদরুল ইসলাম,টিম মেমবার ও শেফ অন লাইনের মার্কেটিং ডিরেক্টর আখতারুজ্জামানও উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button