সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের আরও একটি সাফল্য!

ডা. ইমাম হোসাইন মামুন: হাফিজ মিয়া ধান ভানার মেশিনে ধান ভানছিলেন। হঠাৎ তার লুঙ্গি মেশিনে আটকা পড়ে। লুঙ্গি বাঁচানোর আগেই তার পেনিস (পুরুষাঙ্গ) চলে যায় মেশিনে। লুঙ্গি বাঁচাবেন নাকি জীবন বাঁচাবেন তা ভেবে ওঠার আগেই মেশিন তার পুরুষাঙ্গ ছিঁড়ে ফেলে। মাঝখানে দুভাগ হয়ে যায়!

কালবিলম্ব না করে বাড়ির লোকজন হাফিজ মিয়াকে নিয়ে পলিথিনে করে পেনিসের কর্তিতাংশসহ চলে আসেন ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে। মঙ্গলবার দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত টানা সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার অপারেশন শেষে পেনিস জোড়া লাগানো সম্পন্ন হলো। পুরো সময়ে একপায়ে খাড়া ছিলাম। একটু পানিও পেটে পড়েনি।

অপারেশন করেছেন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, সহকারী অধ্যাপক ডা. আব্দুল মান্নান স্যার। সাথে ছিলেন প্লাস্টিক সার্জারি, সার্জারি ও ইউরোলজি বিভাগের অন্যান্য চিকিৎসকবৃন্দ (ডা. পল্লব, ডা. পম্পি, ডা. এহসান, ডা. সুমিত, ডা. আশরাফ, ডা. মামুন)। অ্যানেস্থেশিয়ায় ছিলেন ডা. শরীফ ও তাঁর দল।

পুরো প্রক্রিয়া শেষে রক্তনালী ঠিক মতো জোড়া লেগেছে কি না তা চেক করার জন্য গ্ল্যান্স পেনিসে যখন সুঁই ফুটিয়ে চেক করা হলো- রক্ত আসে কি না। রক্ত আসতে দেখে সবার সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার কষ্ট এক নিমিষেই মিশে গেল। যখন বেরিয়ে আসছিলাম তখন রোগীর লোকজন জিজ্ঞেস করছে- স্যার কী অবস্থা? বাঁচানো গ্যাছেনি? তারা কী বাঁচানোর কথা বলেছে তা বুঝতে পেরেছি। বুঝতে পেরেই বাংলা সিনেমার মতো মাথা ঝাঁকিয়ে উত্তর দিয়েছি-‘অপারেশন সাকসেসফুল’।
-লেখক: ইন্টার্ন চিকিৎসক, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ, সিলেট

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button