মুন্নী সাহার কান্ড নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিবের বর্ণনা
বাংলাদেশের নারী সাংবাদিক মুন্নী সাহার বিরুদ্ধে নিউইয়র্কে গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথাবার্তা বিনা অনুমতিতে ভিডিও করার যে অভিযোগ উঠেছিল সে ব্যাপারে নিজের ফেসবুকের পাতায় দেয়া এক স্ট্যাটাসে মতামত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব (ডিপিএস) আশরাফুল আলম খোকন। মঙ্গলবার তাঁর ফেসবুকের পাতায় দেয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি ওই দিনের ঘটনা তুলে ধরেন।
আশরাফুল আলম খোকন তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন- ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটি সাক্ষাৎকার আর একজন নারী সংবাদ কর্মীর ক্যাসেট জব্দ’- এই নিয়ে গত কিছুদিন ধরে কয়েকটি পত্রিকা সোশ্যাল মিডিয়া আর টিভি মিডিয়াতে সংবাদ ক্যাম্পেইন দেখে খুবই হতাশ হয়েছি ! আরো বেশি হতাশ হয়েছি অভিযুক্ত সংবাদ কর্মীর আত্মপক্ষ সমর্থনের নমুনা দেখে!’
প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আরও লেখেন- ‘আমি পুরা ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসাবেই বলছি – পত্রিকাগুলোর সংবাদের অনেক মৌলিক অংশেই ভুল ছিল ! এর আগে একটু চিন্তা করে দেখুনতো একজন প্রধানমন্ত্রীর রুমে গোপন ক্যমেরা নিয়ে প্রবেশের কোনো সুযোগ আছে কিনা ? অর্থাৎ সাক্ষাতের বিষয়টি পূর্ব নির্ধারিতই ছিল ! সংশ্লিষ্ট সংবাদ কর্মী তার ক্যামেরাম্যানসহই রুমে ছিলেন ! আরো ছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা এবংদুজন এসএসএফ সদস্য! সাক্ষাতকার নেয়া শেষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ওনাদের সাথে রাজনীতিসহ নানা বিষয় নিয়ে কথাবার্তা ও খোজখবর নিচ্ছিলেন! এইসময় এসএসএফ থেকে ক্যামেরাম্যানকে ক্যামেরা বন্ধ রাখতে বলা হয়! ক্যামেরাম্যান ক্যামেরাটি বন্ধ আছে বললেও আসলে ক্যামেরাটি চালু করা ছিল এবং ক্যামেরার ফ্রেম অন্যদিকে তাক করা ছিল! ক্যামেরাম্যান এটা ভুলবশত করুক আর উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবেই করুক! কিন্তু আমার সন্দেহ হওয়াতে আমি ক্যামেরাম্যানকে আবারও জিজ্ঞেস করি ক্যামেরাটি বন্ধ করা হয়েছে কিনা! ক্যামেরাম্যান আমাকেও বলল ক্যামেরা বন্ধ আছে! আমার সন্দেহ দূর না হওয়াতে আমি নিজেই ক্যামেরাটি চেক করে দেখতে পাই যে ক্যামেরাটি চালু ছিল এবং আমি নিজ হাতেই ক্যামেরাটি বন্ধ করি! এবং ঘটনাটি এসএসএফকে বলি! ইতিমধ্যে দশ মিনিট অতিবাহিত অর্থাৎ এতক্ষণের এই ব্যক্তিগত আলোচনা গুলোও রেকর্ড হয়েছিল! এরপর এসএসএফ যা করার তাই করেছে! কিন্তু এইঘটনাটি নিয়ে পত্রিকাগুলো এবং টকশোতে যা হয়েছে তাতে আমার সাবেক পেশা সাংবাদিকতার দৈনতাই প্রকাশ পেয়েছে বলে মনে হয় ! এটা একেবারেই আমার ব্যক্তিগত মতামত!’
উল্লেখ্য, গত ২৮ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যোগ দিতে যাওয়া বাংলাদেশি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে থাকা বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলের নারী সাংবাদিক মুন্নী সাহা সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কথোপকথন গোপনে রেকর্ড করেন। পরে কর্মকর্তারা রেকর্ডটি জব্দ করেন। এনিয়ে দেশের সাংবাদিক মহলে বেশ তোলপাড়া সৃষ্টি হয়।