সেরা সাংবাদিক থেকে দেশের রানি!
স্পেনের টিভিই টেলিভিশনে সাংবাদিকতা করতেন লেতিজিয়া অরতিজ। বর্তমানে তিনি স্পেনের রানী। তার জীবন কাহিনী চমকে দেয়ার মতো। ১৯৭২ সালে ১৫ সেপ্টেম্বর স্পেনের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম। মাদ্রিদের পাবলিক স্কুলে পড়াশোনা। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে স্নাতক। তারপর সাংবাদিকতা শুরু করেন। ২০০০ সালে তিনি অনূর্ধ্ব ৩০ বিভাগে দেশের সেরা সাংবাদিকের পুরস্কার পান।
২০০২ সালে এক বন্ধুর ব্যক্তিগত পার্টিতে যান লাতিজিয়া। সেই পার্টিতে আমন্ত্রিত ছিলেন স্পেনের রাজকুমার ফিলিপও। সেখানেই দু’জনের পরিচয়। তখনও তারা জানতেন না যে, তাদের সম্পর্ক একদিন পরিণতি পাবে। পরবর্তী এক বছরের মধ্যে দু’জনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা ভীষণ বেড়ে যায়। ২০০৩ সালে তারা একসঙ্গে ছুটিও কাটান। ছুটি কাটিয়ে ফিরে প্রিন্স ফিলিপ তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। এক আগেও লাতিজিয়ার একবার বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু সেই সম্পর্ক বেশিদিন টেকেনি। লাতিজিয়ার অতীত নিয়ে রয়্যাল পরিবারে কোনও মাথাব্যাথা ছিল না। ২০০৩ সালের ১ নভেম্বর তাঁরা আনুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ের কথা ঘোষণা করেন। সামান্য সাংবাদিক হয়ে যান স্পেনের পরবর্তী রানি!
২০০৪ সালে তাদের রাজকীয় বিয়ে হয়। ১২০০ অতিথি আমন্ত্রিত ছিলেন বিয়েতে। লাতিজিয়া হয়ে যান প্রিন্সেস অব অস্ট্রিয়াস। তারপর মিয়ামিতে হানিমুন। ঠিক যেন কোনও সিনেমার গল্প। এরপর থেকে লাতিজিয়ার জীবন পুরোপুরি বদলে যায়। তার পোশাক-পরিচ্ছদ থেকে আদবকায়দা বদলাতে হয় সবই। রাজ পরিবারের সঙ্গে তাল মেলাতে নিজের চালচলনও বদলে ফেলেন লাতিজিয়া। এর পর সাংবাদিকতা ছেড়ে পুরোপুরি রাজ পরিবারের কাজে মন দেন। এতদিন তিনি খবরের পিছনে দৌড়তেন। এ বার তার পিছনে দৌড়তে শুরু করল ক্যামেরা। তিনি যেখানেই যেতেন, সাংবাদিকরাও সেখানে গিয়ে ভিড় করতে শুরু করলেন। ২০০৫ সালে প্রিন্স ফিলিপ এবং লাতিজিয়ার প্রথম সন্তানের জন্ম হয়। নাম রাখা হয় লিওনর। সন্তানের জন্ম উপলক্ষে এই নামে যতজন স্পেনীয় রয়েছেন, ওই দিন তাদের সমস্ত ফ্লাইট বিনামূল্যে করার ঘোষণা করেন প্রিন্স ফিলিপ। এরপর ২০০৮ সালে সোফিয়া নামে আরও এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তারা। মায়ের মতো দুই সন্তানও মিডিয়ার অন্যতম আকর্ষণ হয়ে ওঠে। ২০১৪ সালে ১৯ জুন রাজা জুয়ান কার্লোসের মৃত্যুর পর ফিলিপ এবং লাতিজিয়া স্পেনের রাজা এবং রানী হন।