বরাদ্দের অভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মার্কিন সেবা খাত
যুক্তরাষ্ট্রে অর্থ বরাদ্দের অভাবে ১৭ বছর পর আবারও বেশ কিছু সরকারি সেবা খাত বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কংগ্রেসের সামনে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা সময় আছে। স্থানীয় সময় ৩০ সেপ্টেম্বর রাত ১২টার আগে সংশ্লিষ্ট সেবা খাতগুলোতে অর্থ বরাদ্দ-সংক্রান্ত বিল পাস না হলে ওই খাতগুলোর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে।
মূলত ক্ষমতাসীন দল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টির মধ্যে মতানৈক্যের কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ রিপাবলিকানদের ও উচ্চকক্ষ সিনেটের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে ডেমোক্র্যাটদের হাতে।
৩০ সেপ্টেম্বর অর্থবছর শেষ হওয়ায় সংশ্লিষ্ট সেবা খাতগুলোতে নতুন অর্থবছরে বরাদ্দের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। বরাদ্দ পাওয়া না গেলে প্রায় আট লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ১ অক্টোবর থেকে বেতন পাবেন না। এ কারণে জাতীয় পার্ক, পরিবেশ রক্ষাবিষয়ক সংস্থা, মহাকাশ গবেষণা সংস্থাসহ (নাসা) সরকারের বেশ কিছু সংস্থার বেশির ভাগ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে। তবে সামরিক বাহিনী, পুলিশ, অগ্নিনির্বাপণ ও নিরাপত্তাবিষয়ক সংস্থাগুলোর ওপর এর কোনো প্রভাব পড়বে না।
সেবা খাতগুলোর কার্যক্রম বন্ধের ঝুঁকি এড়াতে জরুরি বিল পাসের উদ্যোগ নেন ডেমোক্র্যাটরা। কিন্তু রিপাবলিকানরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার স্বাস্থ্যসেবা আইন এক বছর পিছিয়ে না দিলে তাঁরা ওই জরুরি বিলে সমর্থন দেবেন না। রিপাবলিকানরা এরই মধ্যে গত শনিবার প্রতিনিধি পরিষদে একটি প্রস্তাব পাস করেছেন। এতে স্বাস্থ্যসেবা আইন এক বছর পিছিয়ে দেওয়া ও চিকিৎসা সরঞ্জামের ওপর থেকে কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উচ্চকক্ষ সিনেটে পাঠানো হয়েছে।
ডেমোক্র্যাট দলীয় আইনপ্রণেতারাও বলছেন, সিনেটে ওই প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হবে না। সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হ্যারি রিড ইতিমধ্যে বলেছেন, প্রতিনিধি পরিষদে পাস হওয়া রিপাবলিকানদের ওই প্রস্তাব সিনেট অনুমোদন করবে না।
ডেমোক্র্যাট নেতা ও প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য ক্রিস ভ্যান হোলেন রিপাবলিকানদের উদ্দেশে বলেন, ‘লাখ লাখ জনগণকে সেবা থেকে বঞ্চিত রাখতে চাইলে আপনারা সেবা খাত বন্ধের দিকে এগিয়ে যেতে পারেন।’
রিপাবলিকান নেতা ও সিনেটর টেড ক্রুজ বলেন, ‘সরকারের সামনে দুটি পথই খোলা। সেবা খাতে বরাদ্দ বন্ধ হলে তা সিনেটের কারণেই হবে।’
বর্তমান পরিস্থিতির জন্য ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানরা পরস্পরকে দায়ী করার খেলায় মেতেছেন। এএফপি, এপি।