ছয় বছরে সর্বনিম্ন জিডিপি ভারতের
গত ৬ বছরের মধ্যে ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি তলানিতে এসে ঠেকেছে, অন্তত সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যান সেই সঙ্কটের কথাই তুলে ধরেছে। দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের বৃদ্ধি চলতি অর্থবছরের (২০১৯-২০) প্রথম ত্রৈমাসিকে ৫ শতাংশে নেমে দাঁড়িয়েছে। জানুয়ারি থেকে মার্চ, তার আগের ত্রৈমাসিকে আর্থিক বৃদ্ধির হার ছিল যেখানে ৫.৮ শতাংশ, সেখানে সেই হার আরও কমল এবারে। অথচ এক বছর আগে ২০১৮ সালের ৩০ জুন আর্থিক বৃদ্ধির হার ছিল ৮ শতাংশ।
এর আগে, ২০১৩ সালের মার্চ মাসে আর্থিক বৃদ্ধির হার ৪.৩ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছিল। তারপর এই প্রথম আর্থিক বৃদ্ধির হার এতখানি নেমে গেল। দেশের গাড়ি শিল্প ও বিস্কুট শিল্পতে মন্দা এবং সেক্টর জুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের কাজ হারানোর ঘটনাই দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হারকে প্রভাবিত করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দাগতি, দেশের বাজারে নতুন শিল্প-বিনিয়োগের অভাব, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলোর খারাপ পারফরম্যান্স, বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত, কর্মসংস্থানে ছাঁটাই ও পড়তি-সব কিছুর মিলিত প্রভাবেই অর্থনীতি তথা বৃদ্ধির হারে এমন দুর্দশা বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
বৃদ্ধির হারে লাগাতার এই পতন এবং প্রথম ত্রৈমাসিকে ছয় বছরের সর্বনিম্ন বৃদ্ধির হার দেশটির আর্থিক মন্দার সম্ভাবনারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে জিডিপির এই পতনকে ‘মন্দা’ বলতে মানতে নারাজ ভারত সরকার। দেশটির কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের দাবি, এটা ‘মন্দা’ নয় বৃদ্ধির হারে ‘শ্লথগতি’। যার অর্থ দাঁড়ায় আর্থিক বৃদ্ধি আশানুরূপ নয়।
সারা বিশ্বে অর্থনীতির মন্থর গতির প্রভাবই এর জন্য দায়ী বলে বরাবরই দাবি করে করে আসছেন নির্মলা। তার বিশ্বাস, খুব শিগগিরই ঘুরে দাঁড়াবে ভারতের অর্থনীতি। বাজার চাঙা করতে কর্পোরেট করে ছাড়, ব্যাংক এবং টেলিকম সংযুক্তিকরণের মতো একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। কিন্তু তারপরও জিডিপির পতন ঠেকানো যায়নি। তাই তো দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের এই জিডিপি বৃদ্ধির হার প্রকাশিত হওয়ার পর ফের অশনি সংকেত দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।