ছাত্র বিক্ষোভে উত্তাল মিসর

Egyptনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে অপসারণ ও রাবেয়া স্কয়ারে গণহত্যায় বিুব্ধ ছাত্রসমাজ। শিাবর্ষ শুরু হওয়া মাত্রই সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে উত্তাল বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে প্রাচীন আল আজহার ও কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিাপ্রতিষ্ঠানের সাধারণ ছাত্ররা। অপর দিকে পুলিশের সাথে দফায় দফায় সংঘর্ষের ফলে অচল হয়ে যাচ্ছে শিাব্যবস্থা। বেকায়দায় পড়ছে সেনাসরকার। সেনাদের পক্ষে সরাসরি অবস্থান নেয়ায় কঠোর নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও আল আজহার বিশ্ববিদ্যায়ের গ্র্যান্ড ইমামের কার্যালয় ‘মাসিখাতুল আজহার’ ঘিরে লাগাতার বিক্ষোভ করছে ছাত্রছাত্রীরা। এ ছাড়া কায়রো, মানছুরা, জাকাজিক, ফাইউম, আল মেনিয়া, দুমিয়াত, সিনাই, সুহাগ, হেলোয়ানসহ মিসরের বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিদিন জড় হচ্ছেন শিার্থীরা। সকাল থেকে বিকেল নাগাদ রাবেয়া স্কয়ার প্রতীকে চিহ্নিত ব্যানার, বিভিন্ন পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভ করছেন তারা। আবার অনেক শিাপ্রতিষ্ঠানের সামনে রাস্তাজুড়ে দীর্ঘ মানববন্ধন করছেন মুরসি সমর্থক সাধারণ ছাত্ররা। ছাত্রদের পাশাপাশি ছাত্রীদেরও কমতি নেই বিক্ষোভে। ফ্যাকাল্টিভিত্তিক বিক্ষোভ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে জড় হয়ে সারা ক্যাম্পাস প্রদণি করেন শিার্থীরা। কাস বর্জন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে পড়েছে। দিন যতই যাচ্ছে বিক্ষোবভ ছাত্রসংখ্যা আরো বাড়ছে। অচিরেই সেনাশাসন নিপাতে ২৫ জানুয়ারির বিপ্লবের মতো জনসমর্থন সৃষ্টি হচ্ছে। কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনেই আল নাহাদা স্কয়ার। মুরসি সমর্থক ছাত্ররা তার পাশেই বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে চলছেন। জরুরি অবস্থা ভেঙে ছাত্ররা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রাতেও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। তা ছাড়া কায়রোসহ জেলা শহরেও বিক্ষোভ অব্যাহত আছে। অন্য দিকে শিাবর্ষ শুরু হলেও ছাত্রদের উপস্থিতি তুলনামূলক অনেক কম। ধনী পরিবারের ছাত্ররা বিদেশ পাড়ি দিচ্ছেন। সিসিপন্থী শিকদের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অপমান করছেন ছাত্ররা। পড়ানো অবস্থায় কাস থেকে সব ছাত্ররা দল বেঁধে বেরিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে এমফিল ডক্টরেট প্রদান অনুষ্ঠানে সাবেক গ্র্যান্ড মুফতি সেনা অভ্যুত্থানের দোসর মুফতি আলী জুমাকে অপমানিত করেন দারুল উলুম বিভাগের ছাত্ররা। গ্র্যান্ড ইমামের পরেই গ্র্যান্ড মুফতি মুরসিকে অপসারণের নেপথ্য ভূমিকা পালন করেন। এমনকি যারা আন্দোলন করছেন তাদের হত্যা করা জায়েজ বলে ফতোয়া দেয়ায় ছাত্ররাই তার ওপর প্তি। যার দরুণ তাকে হেস্তনেস্ত করেন ছাত্ররা। এ দিকে শিাব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় চিন্তিত অভিভাবক মহল। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অনেক প্রাইভেট শিাপ্রতিষ্ঠান। আবার মোটা অঙ্কের ঘাটতি দিয়ে চলছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। তাছাড়া অর্থনৈতিক দুরবস্থায় অনেক পরিবারই তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ বহন করতে পারছে না। ছাত্রদের চলমান আন্দোলন মুসলিম ব্রাদারহুডসহ ইসলামপন্থীদের আন্দোলনে অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করছে। তাদের সাথে ৬ এপ্রিলসহ অনেক রাজনৈতিক দলের ছাত্ররা অংশগ্রহণ করছে। আগামী ৬ অক্টোবর ইসরাইলের সেনাদের থেকে সিনাই উদ্ধারের ৪০ বছর পূর্তিতে তিন দিনের কর্মসূচি দিয়েছে ছাত্রসমাজ। উত্তাল বিক্ষোভের লক্ষ্যে দেশজুড়ে সিসিবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান সংবলিত ব্যানার ও দেয়ালে লিখছেন ছাত্ররা। কায়রোর অফিস-আদালত ও বিভিন্ন বাড়ির দেয়ালে দেয়ালে সিসি প্রতারক, সিসি হত্যাকারী, সেনাশাসন নিপাত যাক ও দেখা হবে ৬ অক্টোবর ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের মোটা কালির লেখা শোভা পাচ্ছে। পুলিশ ছাড়াও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে দমন করতে পারছে না ছাত্রদের। সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে স্লোগানের গর্জনে কাঁপছে ক্যাম্পাসগুলো।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button