কঠোর হবে অভিবাসন, ব্রেক্সিট পরবর্তী পরিকল্পনা প্রকাশ বরিস জনসনের
বরিস জনসনের ব্রেক্সিট পরবর্তী অভিবাসন পরিকল্পনার আওতায় স্বল্প দক্ষ অভিবাসীরা যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে থাকতে পারবেন না। আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে শনিবার সানডে টাইমসের সাথে দেয়া সাক্ষাৎকারে ব্রেক্সিট পরবর্তী পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করার পরে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের জন্য ‘অস্ট্রেলিয়ার মতো পয়েন্ট ভিত্তিক ব্যবস্থা’ নেয়া হবে বলে সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন।
আগামী ১২ই ডিসেম্বর ব্রিটেনে সাধারণ নির্বাচন। পুরো দেশ জুড়েই এখন নির্বাচনী হাওয়া, সারা ব্রিটেন জুড়ে চলছে প্রচারাভিযান, আর নির্বাচন নিয়ে আলোচনা-বিতর্কে সরগরম সংবাদ মাধ্যম আর সোশ্যাল মিডিয়া। যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে এমন একটি নির্বাচন হয়তো আর কখনোই হয়নি – যেখানে পুরো দেশটা মনে হচ্ছে যেন দু’ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। এর কারণ একটাই – ব্রেক্সিট, অর্থাৎ ব্রিটেনের ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ত্যাগ। এই নির্বাচনকেই বলা হচ্ছে ‘দ্য ব্রেক্সিট ইলেকশন।’
সানডে টাইমসকে জনসন জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যে তিনটি শ্রেণীতে ‘ভিসা’ পদ্ধতি চালু করা হবে। প্রথমটি হল ‘অসাধারণ প্রতিভা’। এই শ্রেণীতে কোন চাকরীর প্রস্তাব ছাড়াই যুক্তরাজ্যে আসার দ্রুত ভিসা দেয়া হবে। দ্বিতীয় শ্রেণীতে ‘এনএইচএস’ কর্মীদের মতো দক্ষ শ্রমিকদের চাকরী পাওয়ার সাপেক্ষে কাজ করার জন্য ভিসা দেয়া হবে। এই দুই শ্রেণীতে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করার সুযোগ থাকবে।
তৃতীয় শ্রেণীতে যে খাতে কর্মচারীর ঘাটতি রয়েছে সে সব খাতে কাজের জন্য অদক্ষ শ্রমিকদের স্বল্পমেয়াদী ভিসা দেয়া হবে। জনসন ব্যাখ্যা করেন, ‘এই শ্রেণীতে স্থায়ীভাবে থাকার কোনও সুযোগ নেই।’ তিনি জানান, ব্রিটেন সমগ্র বিশ্বের জন্য দরজা বন্ধ করে দিচ্ছে ব্যপারটি এমন নয়। বরং এই পদ্ধতি ‘সুষ্ঠুভাবে’ ব্রিটেনকে বিশ্বের জন্য উন্মুক্ত রাখবে তবে।
ইতোমধ্যে স্বাধীন অভিবাসন পরামর্শদাতা কমিটিকে নির্দিষ্ট কয়েকটি সেক্টরের জন্য ভিসা কোটা নির্ধারণের ক্ষমতা দেওয়া হবে, যেভাবে সুদের হার নির্ধারণের ক্ষেত্রে ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।
পরিকল্পনার মধ্যে আরো আছে, সরকারী সংস্থাগুলো কীভাবে সামগ্রিক অভিবাসন হ্রাস করা যায় সে বিষয়ে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা শুরু করবে। পাশাপাশি তারা শ্রমবাজারে ‘জনশক্তির ঘাটতি’ নির্ণয় করবে।
ডেইলি টেলিগ্রাফ অনুসারে, কনজারভেটিভরা ২০২২ সাল থেকে অভিবাসীদের তাদের দেশে থাকার অধিকার প্রমাণ করার জন্য একটি ‘ডিজিটাল ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাস’ প্রবর্তন করবে এবং অবৈধভাবে যারা রয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিতে শুরু করবে।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রসচিব প্রীতি প্যাটেল বলেন, ‘ইইউ ছেড়ে যাওয়ার ভোটটি আমাদের সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে আনার ভোট। এভাবেই কনজারভেটিভরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করলে ব্রেক্সিট সম্পন্ন করা হবে।
এদিকে, রোববার বরিস জনসন ভোটারদের উদ্দেশ্যে একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি বলেন, জনগণ এমন একটি ঐতিহাসিক নির্বাচনের মুখোমুখি হয়েছে যা ‘ভবিষ্যতের দশকগুলো’ নির্ধারণ করবে।