বিরোধীদের আসন টার্গেট জনসনের
শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত ব্রিটিশ রাজনীতি
ঘনিয়ে এসেছে নির্বাচন। আর মাত্র দুই দিন। এরপরই চার বছরে তৃতীয়বারের মতো জাতীয় নির্বাচনে ভোট দেবেন ব্রিটেনের ভোটাররা। এর আগ দিয়ে দেশজুড়ে তুমুল প্রচারণা চালাচ্ছেন শীর্ষ প্রার্থীরা। দল হিসেবে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি ও প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টি। শেষ মুহূর্তে এসে লেবারের দখলে থাকা আসনগুলোয় প্রচারণা শুরু করেছেন কনজারভেটিভ পার্টি প্রধান ও ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে ব্রিটেনের বিচ্ছেদ বা ব্রেক্সিট সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতিই তার প্রচারণার মূল আকর্ষণ। সমপ্রতি অভিবাসন কমানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লেবার নিয়ন্ত্রিত যেসব আসনে ব্রেক্সিটের প্রতি সমর্থন বেশি সেসব আসন টার্গেট করে প্রচারণা শুরু করেছেন জনসন। সোমবার লেবার নিয়ন্ত্রিত গ্রিমসবি থেকে প্রচারণা শুরু করেন জনসন। সেখানকার এক মাছের বাজার পরিদর্শন করেন তিনি। এই আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটার ২০১৬ সালের ব্রেক্সিট গণভোটে ইইউ ছাড়ার পক্ষে ভোট দিয়েছিল। এমন আরেক আসন হচ্ছে সান্ডারল্যান্ড। সেখানকার ৬১ শতাংশ ভোটার ব্রেক্সিটের পক্ষে ভোট দিয়েছিল গণভোটে। এ ছাড়া ইংল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলেও সফর করবেন তিনি। সেখানে তিনি অপর এক বিরোধী দল লিবারেল ডেমোক্র্যাটদের বিপক্ষে সমর্থন জোগাড়ের চেষ্টা চালাবেন।
লেবার নেতা জেরেমি করবিনের বিরুদ্ধেও প্রচারণা চালিয়েছেন জনসন। করবিন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, জয়ী হলে আগামী ছয় মাসের মধ্যে ব্রেক্সিট নিয়ে নতুন গণভোটের আয়োজন করবেন তিনি। তার এই প্রতিশ্রুতিকে আগের গণভোটের প্রতি অশ্রদ্ধার শামিল বলে আখ্যায়িত করেছেন তিনি।
এদিকে, ছায়া চ্যান্সেলর ও জ্যেষ্ঠ লেবার নেতা জন ম্যাকডনেল জানিয়েছেন, বাজেট কঠোরতার অবসানের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত বাজেট প্রকাশের পরিকল্পনা করছে লেবার। নির্বাচনে জয়ী হলে প্রথম ১০০ দিনের মধ্যেই এই বাজেট প্রকাশ করা হবে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় জনপ্রিয় হয়ে ওঠা লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা জয়ী হলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্রেক্সিট বাতিলের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে। এজন্য তারা নতুন গণভোট আয়োজনের জন্য দুটি বিল পাস করানোর পরিকল্পনা করছে। এর মধ্যে একটি বিল নির্বাচন কমিশনকে নতুন ব্রেক্সিট গণভোটের প্রশ্ন নিয়ে কাজ করার সুযোগ পাবে ও দ্বিতীয়টির মাধ্যমে আগের গণভোটকে চ্যালেঞ্জ করে নতুন গণভোটের আয়োজন করা হবে।
এদিকে, বৃটিশ রাজনীতিতে অন্যতম প্রভাবশালী দল হচ্ছে স্কটল্যান্ডের স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি। নির্বাচনে ঝুলন্ত পার্লামেন্ট হলে লেবারের সঙ্গে তাদের জোট গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে, লেবারের কাছে বৃটেন থেকে স্বাধীনতার ব্যাপারে দ্বিতীয়বারের মতো স্কটল্যান্ডে গণভোট আয়োজনের প্রতিশ্রুতি চাইবেন তিনি। করবিন অবশ্য আগেই বলে দিয়েছেন, ২০২১ সালের আগে এমন কোনো গণভোটের অনুমোদন দেবেন না তিনি।