ব্রিটেনে জাতীয় নির্বাচন আজ
আজ বৃহষ্পতিবার ব্রিটেনের আগাম জাতীয় নির্বাচন। আজ ০৭:০০ জিএমটিতে নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে ২২:০০ জিএমটিতে শেষ হবে। একে সামনে রেখে গতকাল বুধবার শেষ দিন ব্রিটেনজুড়ে জোর প্রচারণা চালিয়েছেন দেশটির প্রধান দুই দলের নেতারা। জনমত জরিপের ফলগুলোতে এগিয়ে রয়েছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের কনজারভেটিভ দল। তবে কিছু কিছু জরিপ বলছে, সুযোগ রয়েছে লেবার দলেরও। এর নেতৃত্বে রয়েছেন বামধারার রাজনীতিক জেরেমি করবিন। শেষ মুহূর্তে এসে দু’দলই নিজেদের পক্ষে সর্বোচ্চ প্রচারণা চালাচ্ছে। এ লক্ষ্যে বুধবার দিনভর দেশের গুরুত্বপূর্ণ আসনগুলোতে প্রচারণা সভা করেছেন বরিস জনসন ও জেরেমি করবিন। এ নির্বাচনকে বলা হচ্ছে, ২০১৬ সাল থেকে চলে আসা ব্রেক্সিট সংকটের চূড়ান্ত সমাধান। ব্রেক্সিট নিয়ে চলমান অচলাবস্থা কীভাবে কাটবে সেটা নির্ধারিত হবে এ নির্বাচনে কোন দল জিতছে তার ওপর ভিত্তি করে।
এ নির্বাচনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন চাইবেন একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গঠন করতে। এতে তিনি তার ইচ্ছানুযায়ী ৩১শে জানুয়ারিতেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বৃটেনকে বের করে নিয়ে আসতে পারবেন। নির্বাচনের পূর্বে যতগুলো জনমত জরিপ চালানো হয়েছে তার প্রায় সবগুলোতেই এগিয়ে ছিলেন তিনি। তবে সমপ্রতি ইউগভের চালানো সর্বশেষ জরিপ বলছে, দুই দল কাছাকাছি সংখ্যায় আসনে জয় পেতে যাচ্ছে।
ইউগভের রাজনৈতিক গবেষণা প্রধান ক্রিস কারতিস বলেন, ব্যবধান সত্যিকার অর্থেই একদম সামান্য এবং অল্প কয়েকটি আসনে। লেবারদের সামপ্রতিক উত্থানই এর পেছনে রয়েছে। ফলে স্বস্তিতে নেই কনজারভেটিভরা। ৫৫ বছর বয়সী বরিস জনসন ইয়র্কশায়ার থেকে উত্তর লন্ডনে প্রচারণা চালিয়েছেন শেষদিনে। প্রচারণা সভায় তিনি বলেছেন, যদি আমরা এখনই ব্রেক্সিট নিয়ে সমাধানে না পৌঁছাতে পারি তাহলে বৃটেনের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়বে। তাই এখনই ব্রেক্সিট বাস্তবায়িত হতে দিন এবং বৃটেনজুড়ে সুযোগ ও আশা ছড়িয়ে দিন। বৃটেনের সর্বোচ্চ শক্তিকে বের করে আনুন।
এদিকে ৭০ বছর বয়স্ক জেরেমি করবিন উত্তর ইংল্যান্ডে বৃহসপতিবার বলেন, এই নির্বাচন এ কালের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। যেসব ভোটাররা এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি তাদের জন্য বলতে চাই, আপনি সম্ভাবনার পক্ষে ভোট দিন। আমরা আপনার পকেটে অর্থ ভরতে চাই, কারণ এই অর্থ আপনাদেরই। ধনিক শ্রেণি ও বড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এই অর্থ পরিশোধ করবে।
ঝানু এই সমাজতান্ত্রিক নেতা বৃটেনকে একটি জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার আশ্বাস দিয়েছেন। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, বেশকিছু কোমপানিকে সরকারিকরণ ও জনসেবামূলক কার্যক্রম বৃদ্ধির। একইসঙ্গে তিনি ব্রেক্সিট নিয়ে আরো একটি গণভোটের কথা বলছেন। যেখানে তার প্রতিদ্বন্দ্বী বরিস জনসন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়তে বদ্ধপরিকর।
প্রধান দুই দল বাদে অন্য দলগুলোও ছিল যথেষ্ট সক্রিয়। ব্রেক্সিটবিরোধী দল লিবারেল ডেমোক্রেট নেতা জো সুইনসন বুধবার কনজারভেটিভ নিয়ন্ত্রিত আসনগুলোতে প্রচারণা চালিয়েছেন। তিনি বলেন, ব্রেক্সিটকে থামাতে হলে আমাদের সবার আগে বরিস জনসনকে থামাতে হবে। আমাদের হাতে মাত্র আর একদিন আছে এটি করার জন্য। এদিকে এসএনপি নেতা নিকোলা স্টারগন এক খোলা চিঠিতে বলেন, স্কটল্যান্ডের জন্য সামপ্রতিক সময়ে সব থেকে বড় হুমকি বরিস জনসন।
‘ঝুলন্ত পার্লামেন্ট’ হলে ব্রেক্সিট নিয়ে চলা অচলাবস্থার সমাধান কোনো দলই করতে পারবে না, এমন ধারণা প্রচলিত থাকায় তা অল্প সময়ের জন্য হলেও ব্রিটেনের অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে খারাপ পরিণতি ডেকে আনবে বলে অনেক বিশ্লেষকের ধারণা।