ব্রিটিশ পার্লামেন্টে প্রথম হিজাবধারী নারী

হিজাবে চমক আপসানার

নানা কারণে ব্রিটেনের ব্রেক্সিট ছিল স্মরণ রাখার মতো। প্রায় এক শ’ বছরের মধ্যে এবারই প্রথম ডিসেম্বর মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো ব্রিটেনে। ১৯২৩ সালের পর ডিসেম্বরে এই প্রথম নির্বাচন হচ্ছে। আর এই নির্বাচনেই হিজাব বিপ্লব ঘটালেন বাংলাদেশের মেয়ে আপসানা বেগমন। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে তিনিই প্রথম হিজাবধারী নারী হিসেবে প্রবেশ করছেন। তিনি লেবার পার্টির টিকেটে জয়ী হয়েছেন।

ডিসেম্বরে বড়দিন থাকায় ব্রিটেনে সাধারণত কোনো নির্বাচন রাখা হয় না। ৫ বছরের কম সময়ের মধ্যে এটি ব্রিটেনের তৃতীয় জাতীয় নির্বাচন। এর আগে এ নির্বাচন হয়েছেন ২০১৫ ও ২০১৭ সালে। এছাড়া ১৯৭৪ সালের পর এবারই প্রথম শীতকালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো।

এসব তো গেল নির্বাচনের সময়ের বিষয়ে। ব্রিটেনের নির্বাচনে এর আগে মুসলিম সংসদ সদস্য থাকলেও এবারই প্রথম হিজাব পরিহিতা মুসলিম যাচ্ছেন হাউস অব কমন্সে। তিনি হচ্ছেন বাংলাদেশী অধ্যুষিত পূর্ব লন্ডনের পপলার ও লাইম হাউস আসনের লেবার পার্টি থেকে নির্বাচিত আপসানা বেগম।

১২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবারের যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে হাউজ অব কমন্সে যোগ হলেন আরেকজন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত এমপি আফসানা বেগম। লেবার পার্টির পপলার এন্ড লাইম হাউজ (সিএলপি) ব্রাঞ্চের সাবেক সেক্রেটারী ও বর্তমান ভাইস চেয়ার আপসানা বেগম জীবনের প্রথম ইলেকশনে বাজিমাত করলেন।

তিনি তার আসনে তার প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে ২৮ হাজার ৯০৪ ভোট বেশি পেয়ে পার্লামেন্ট মেম্বার নির্বাচিত হন। এ আসনের মোট ভোটার ৯১ হাজার ৭৬০ জন। এখানে গড় ভোট পড়ে ৬৭ দশমিক ০৩ শতাংশ।

রাত ১০টার পর টাওয়ার হ্যামলেটসের আসনগুলোর ভোট গণনা প্রক্রিয়া শুরু হয় পূর্ব লন্ডনের এক্সেল এক্সিবিউশন সেন্টারে। ভোর সাড়ে চারটায় এক্সেল এক্সিবিশন সেন্টারে পপলার এন্ড লাইমহাউজ আসনের ভোট গণনা শেষে দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত নির্বাচনী রিটার্নিং অফিসার স্পিকার কাউন্সিলার ভিক্টোরিয়া অবাজে আপসানা বেগমকে বিজয়ী ঘোষণা করেন।

তার প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা ৩৮ হাজার ৬৬০। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কনজারভেটিভ পার্টির অলুয়া শনের প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা ৯ হাজার ৭৫৬। অর্থাৎ আপসানা তার প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে ২৮ হাজার ৯০৪ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হন। তার বিজয়ে বাংলাদেশি কমিউনিটি আরেকজন বাংলাদেশি এমপি পেল। আর তার বিজয়ে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে বইছে আনন্দের বন্যা।

এদিকে প্রথম বিজয়ী এমপি আপসানা তার আসনের ভোটার, ক্যাম্পেইনার এবং নির্বাচনের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে তার প্রথম প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

তিনি তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আমার নির্বাচনী প্রচারণায় লেবার পার্টি এবং আমার বন্ধু ও পরিবারের সদস্যরা যে সহযোগিতা করেছেন তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। আমার ভবিষ্যত কাজেও তারা সহযোগিতা করবেন বলে আমার প্রত্যাশা থাকবে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button