জোরপূর্বক শ্রমের অভিযোগে টেসকোর চীন থেকে আমদানী বন্ধ
এমএফএ জামান: ব্রিটেনের অন্যতম বৃহৎ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান টেসকো সম্প্রতি জোরপূর্বক শ্রমের অভিযোগে সবধরণের উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। ডিসেম্বরে ক্রিসমাস উপলক্ষে এই প্রতিষ্ঠান চীন থেকে ক্রিসমাস ও নতুন বছরের কার্ড আমদানী করে। সম্প্রতি লন্ডনের টোটিং এর একজন ছয় বছরের স্কুল ছাত্রী ফ্লোরেন্স উইডিকম্ব স্থানীয় টেসকো থেকে তার বন্ধুদের উপহার দেয়ার জন্য কয়েকটি কার্ড ক্রয় করেন। এখান থেকে কয়েকটি কার্ড খোলার পর তারা কয়েকটি ম্যাসেজ সম্বলিত কাগজ দেখতে পান। এতে লেখা ছিল ‘‘আমরা চিনের সাংহাই এর জেলে বন্দী হিসেবে বেঁচে আছি। আমাদেরকে জোরপূর্বক ভাবে ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ করানো হচ্ছে। দয়া করে আমাদেরকে সাহায্য করুন। হিউমেন রাইটস সংস্থা গুলোকে আমাদের বার্তা পৌঁছে দিন।’’
টেসকোর একজন কর্মকর্তা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, আমরা খুবই মর্মাহত এই খবরটি জানতে পেরে। বন্দীদেরকে দিয়ে জোরপূর্বকভাবে কার্ড তৈরী করানোর প্রক্রিয়া আমরা কখনোই মেনে নিতে পারি না। তাই আমরা কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে এর বিপনন প্রক্রিয়া স্থগিত করেছি। এবং এই বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে গত মাসে আমাদের একটি অডিট টিম সেখানে ছিল। তবে তারা জোরপূর্বক শ্রমের কোন আলামত দেখেননি। কিন্তু বর্তমান কমিটি যদি এই অভিযোগের কোন সত্যতা পায়, তবে অবশ্যই এর বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
তবে এধরণের ঘটনা এই প্রথম নয়, ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডর এসেক্স এর ব্রেইনটির সেইন্সবারী সুপার শপের জেসিকা রাগবি একটি ক্রিসমাস কার্ডে এই ধরণের একটি হাতে লোখা বার্তা কাগজে দেখতে পান। যেখানে লেখা ছিল ‘‘আমরা তোমাদের শুভ কামনা করি। থার্ড প্রোডাক্ট শপ, গোয়ান জোহ কারাগার, ৬নং ডিষ্ট্রিক্টড।’’
এছাড়া ২০১৪ সালে নর্দান আয়ারল্যান্ডে ক্যারেন উইসিলসক প্রাইমার্ক থেকে একটি প্যান্ট ক্রয় করেন যাতে লেখা ছিল ‘‘আমাদের কাজ হল জেলের ভেতর ফ্যাশনের কাপড় তৈরী করা। প্রতিদিন ১৫ ঘন্টা কাজ করতে হয়। আর অমাদের যে খাবার প্রদান করা হয় তা কুকুর কিংবা শূকরও খাবে না।’’
উল্লেখ্য, টেসকো প্রতিবছর এই কার্ড বিক্রির উপার্জিত অর্থ থেকে ৩০০০০০ পাউন্ড ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন, ক্যান্সার রিসার্চ ইউকে ও ডায়াবেটিস ইউকে চ্যারিটিকে সাহায্য প্রদান করে।