আজ শুভ বড় দিন, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা (ভিডিও)

আজ ২৫ ডিসেম্বর, শুভ বড় দিন। ‘পাপীকে নয়, ঘৃণা করো পাপকে। আর ‘ঘৃণা নয়, ভালোবাসো’ ‘সদা দীপ্ত রহে অক্ষয় জ্যোতির্ময়’- এই আহ্বান নিয়ে যিশুখ্রিস্ট এদিন আসেন এ পৃথিবীতে। বর্ণিল আলোক সজ্জার রোশনাইয়ে অনাবিল আনন্দধারার মধ্য দিয়ে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড় দিন।
বিশ্বব্যাপী ক্রিস্টান সম্প্রদায় এ দিনটি উদযাপন করছে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায়। গির্জা, গৃহ-দুয়ার সাজানো হয়েছে গো-সালা, ক্রিসমাস ট্রি আর বর্ণময় বাতি দিয়ে। পুনর্জন্ম, নতুন শুরু, ক্ষমা ও শান্তি এবং ঈশ্বর ও মানুষের সম্পর্কের নবজীবন দানের উৎসবই হলো বড়দিন। রঙিন বাতিতে ক্রিসমাস ট্রি সাজানো, বিশেষ প্রার্থনা, শিশুদের মাঝে উপহার বিতরণ এবং স্বজনদের সাথে সাক্ষাৎ এ উৎসবের মূল অনুষঙ্গ। গির্জায় প্রার্থনা শুরু ও শেষের পর গাওয়া হয় বড়দিনের বিশেষ গান ও বন্দনা সঙ্গীত।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো লন্ডনের খ্রিস্টান সমপ্রদায়ও আজ যীশুখ্রিস্টের জন্মোৎসব পালনে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। আজ তারা যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য, আনন্দ-উৎসব ও প্রার্থনার মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করবেন। দিবসটি উপলক্ষে লন্ডনসহ সারা দেশে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। আজ বুধবার ও কাল বৃহষ্পতিবার ব্রিটেনে সরকারি ছুটি। ক্রিসমাস ডে তে সবধরণের পাবলিক ট্রান্সপোর্ট বন্ধ থাকবে। পরের দিন অর্থাৎ ২৬ ডিসেম্বর বক্সিং ডে পালন করা হয়। প্রাচীন সনাতনী রীতি-নীতি অনুযায়ী গরীব লোকদেরকে উপহার প্রদান করাই এদিনের প্রধান উপজীব্য বিষয়।
বড়দিন উপলক্ষে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, ব্রিটেন হচ্ছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। তিনি একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক পৃথিবী গড়ে তুলতে সবাইকে একসাথে কাজ করার আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে আরও বলেন, বড়দিন খ্রিস্টান ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পর্কের বন্ধন আরও দৃঢ় করবে। যারা ক্রিসমাস দিনেও কাজ করছে তাদের প্রতি তিনি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বিশেষত: এনএইচএস এর হাজার হাজার কর্মীরা যারা ক্রিসমাসের দিনেও রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস খ্রিষ্ট ধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিষ্ট এই পুণ্যময় দিনে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে পবিত্র বেথেলহেমে গরিব কাঠমিস্ত্রির গোয়ালঘরে মাতা মেরির গর্ভে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, ঈশ্বরের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য একজন নারীর প্রয়োজন ছিল। সেই নারীই কুমারী মেরি। ধর্ম বিশ্বাস বলে ‘ঈশ্বরের অনুগ্রহে ও অলৌকিক ক্ষমতায়’ মেরি কুমারী হওয়া সত্ত্বেও গর্ভবতী হন। ঈশ্বরের দূত গাব্রিয়েল-এর কথামতো শিশুটির নাম রাখা হয় যীশাস, যা বাংলায় যীশু। ধর্মে শিক্ষাভ্রষ্ট তৎকালীন ইহুদি সমপ্রদায়ের মধ্যে ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসেবে আবির্ভূত এ শিশুটিই বড় হয়ে খ্রিষ্ট ধর্ম প্রচার করেন। ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, যীশুর জন্মের অনেক বছর পর থেকে খ্রিস্টানরা এ দিনটিকে আনন্দ ও মুক্তির দিন হিসেবে পালন করতে শুরু করে। ৪৪০ খ্রিস্টাব্দে পোপ এ দিনটিকে স্বীকৃতি দেন। তবে উৎসবটি জনপ্রিয়তা পায় মধ্য যুগে। সে সময় এর নাম হয় ‘ক্রিসমাস ডে’। খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারীরা বিশ্বাস করেন, মানবজাতিকে সুপথ প্রদর্শন, সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করা এবং সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচারের জন্য যীশু জন্ম নিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button