ভোটের অনুপাতে সংসদের আসন বণ্টনের প্রস্তাব এরশাদের

বর্তমান নির্বাচন-পদ্ধতি পরিবর্তন করে ভোটের আনুপাতিক হারে সংসদীয় আসন বণ্টনের প্রস্তাব দিয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। প্রস্তাব অনুযায়ী, ভোটাররা সরাসরি প্রার্থীকে নয়, দলকে ভোট দেবে। সব দল প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে আনুপাতিক হারে সংসদীয় আসনের সদস্য পাবে।
গতকাল সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাবে বিস্তারিত রূপরেখা তুলে ধরেন এরশাদ।
এরশাদ প্রস্তাবিত নির্বাচন পদ্ধতি অনুযায়ী, জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনে সব রাজনৈতিক দল সামর্থ্য অনুসারে প্রার্থী মনোনীত করে নির্বাচন কমিশনে একটি তালিকা জমা দেবে। তালিকার সঙ্গে সব প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা থাকবে। একই প্রার্থী একাধিক দলের তালিকায় থাকলে তার প্রার্থিতা বাতিল হবে। সব দল নির্ধারিত কোটা অনুসারে (সাধারণ ৫০ শতাংশ, মহিলা ৩০ শতাংশ, সংখ্যালঘু ১০ শতাংশ, পেশাজীবী ১০ শতাংশ হারে) প্রার্থী তালিকা তৈরি করবে।
প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন নির্ধারণ করবে কোন দল কোন কোটায় কত আসন পাবে। যে দল সর্বাধিক ভোট পাবে, সেই দল ভগ্নাংশের সুযোগ লাভ করবে। নির্বাচন কমিশন নির্ধারণ করবে কোন আসনে কোন দলের প্রার্থী প্রতিনিধিত্ব করবেন।
প্রস্তাবে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ভোটার সরাসরি প্রার্থীকে নয়, দলকে ভোট দেবে। সব দল প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে আনুপাতিক হারে সংসদীয় আসনের সদস্য পাবে। কোনো দল ন্যূনতম এক শতাংশ ভোট পেলেও তারা তিনজন সদস্য পাবে।
এরশাদ দাবি করেন, তার প্রস্তাবিত রূপরেখা অনুযায়ী নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার করা হলে ও একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন বহাল থাকলে নির্বাচনকালীন অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থারও প্রয়োজন পড়বে না।
এরশাদ বলেন, এ পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা হলে নির্বাচনে অর্থ, অস্ত্র, সন্ত্রাস ও পেশিশক্তির ব্যবহার ও নির্বাচনকেন্দ্রিক রক্তপাত হবে না। এ পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজন করলে উপনির্বাচনেরও প্রয়োজন হবে না।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এরশাদ বলেন, নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কারের এই প্রস্তাব জাতীয় সংসদের চলতি অধিবেশনে তিনি তুলবেন না। এর আগে এ বিষয়ে তিনি জনমত তৈরি করবেন।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, যদি নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী হতো, তাহলে নিশ্চিন্তে ভোট করা যেত। কিন্তু এই কমিশনের ওপর ভরসা করা যায় না। তাদের ওপর কারও আস্থা নেই। তিনি আরও বলেন, যদি নির্বাচন হয় এবং সব দল অংশ নেয়, তাহলে জাতীয় পার্টি ওই নির্বাচনে অংশ নেবে।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর আহমদ, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা জানিপপের চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button