যুক্তরাজ্যে নতুন গাড়ি নিবন্ধন সাত বছরে সর্বনিম্নে
গত বছর যুক্তরাজ্যে নতুন গাড়ি নিবন্ধন ২০১৩ পরবর্তী সর্বনিম্নে দাঁড়িয়েছে। সোসাইটি অব মোটর ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড ট্রেডার্স (এসএমএমটি) সম্প্রতি এ তথ্য জানায়। এসএমএমটি বলছে, এ নিয়ে টানা তিন বছর নতুন গাড়ি নিবন্ধন কমেছে এবং ২০২০ সালেও এ প্রবণতা অব্যাহত থাকবে।
ভোক্তা আস্থায় পতন এবং পরিচ্ছন্ন বায়ু নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে এ রকম পূর্বাভাস দেয়া হচ্ছে। নতুন কার্বন নিঃসরণ নীতিমালার কারণে গাড়ি শিল্প মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েছে বলে মনে করছে সংগঠনটি। নতুন নীতিমালায় গাড়ি কোম্পানিগুলোকে বৈদ্যুতিক ও হাইব্রিড গাড়িতে বিনিয়োগ বাড়াতে হচ্ছে। এসএমএমটির প্রধান নির্বাহী মাইক হ্যাউইস বলেন, যুক্তরাজ্যের গাড়ি শিল্পের জন্য এখনো সুস্পষ্ট বৃহৎ চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ব্রেক্সিট।
এসএমএমটির উপাত্তে দেখা গেছে, ২০১৯ সালে মোট ২৩ লাখ ১০ হাজার নতুন গাড়ির নিবন্ধন হয়েছে, যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ২ শতাংশ কম। ২০১৬ সালে যেখানে ২৬ লাখ ৯০ হাজার গাড়ি বিক্রি হয়েছিল, সেখানে ব্রেক্সিট গণভোটের অব্যবহিত পরের বছরগুলোয় গাড়ি বিক্রি ক্রমেই কমছে। বিষয়টি গাড়ি শিল্পের জন্য একটি ‘ঝড়’ হিসেবে দেখা দিয়েছে। ২০১৯ সালে গাড়ি বিক্রি কমার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে ডিজেলচালিত গাড়ি বিক্রি হ্রাসের বিষয়টি, যা ২০১৮ সালের তুলনায় ২২ শতাংশ কমেছে। একসময় ডিজেলচালিত গাড়ি যেখানে নতুন বিক্রীত গাড়ির অর্ধেক ছিল, বর্তমানে তা এক-চতুর্থাংশে নেমে এসেছে।
এসএমএমটি বলছে, বায়ুমান নীতিমালা নিয়ে অনিশ্চয়তা বিশেষ করে শহরগুলোয় ডিজেলচালিত গাড়ির ওপর সম্ভাব্য বিধিনিষেধের কারণে ভোক্তারা দ্বিধাগ্রস্ত রয়েছেন। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ভোক্তা আস্থায় পতন। এতে ভোক্তারা নতুন গাড়ি ক্রয়ের চেয়ে পুরনো গাড়ি ব্যবহারেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন।
হ্যাউইস বলেন, শুধু একটি কারণেই গাড়ি বিক্রি কমেছে, আপনি এমনটা বলতে পারবেন না। কয়েক বছর ধরেই গাড়ি শিল্পের ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে যাচ্ছে। বাজার যে সংকোচন হচ্ছে তা বিস্ময়ের নয়। এজন্য আমাদের দ্রুত ব্যবসায় আস্থা ও মজবুত অর্থনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি করা উচিত। চলতি বছর পরিস্থিতির আশানুরূপ উন্নতি হবে বলে মনে করছেন না হ্যাউইস। ২০২০ সালে নতুন গাড়ি নিবন্ধন আরো ১ দশমিক ৬০ শতাংশ কমবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এসএমএমটি।
ব্রেক্সিট পরবর্তী সময়ে কী হবে, তা এখনো গাড়ি শিল্পের জন্য সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হিসেবে দেখছে এসএমএমটি। ৩১ জানুয়ারিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে আসার বিষয়টি প্রায় নিশ্চিত হলেও তত্পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সময় কী হবে তা এখনো অস্পষ্ট।