সর্বকালের সর্বোচ্চ ঋণের ভারে বিশ্ব
২০১৯ সালের তিন প্রান্তিকে বৈশ্বিক ঋণ বেড়েছে প্রায় ১০ ট্রিলিয়ন ডলার
ঋণের ভারে ডুবতে বসেছে বিশ্ব। আন্তর্জাতিক বাজারে ঋণের পরিমাণ এতোটাই বেড়েছে যে, গত বছরের প্রথম ৯ মাসেই বৈশ্বিক ঋণের হার মোট দেশজ উৎপাদনের হারকে অতিক্রম করে গিয়েছে। ইনিস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল ফাইনান্স জানিয়েছে, গৃহস্থালি ঋণ, সরকারি ও বেসরকারি ঋণের সমন্বয়ে গঠিত বৈশ্বিক ঋণ ৯ হাজার কোটি ডলার (৯ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন ডলার) বেড়ে প্রায় ২৫৩ ট্রিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে বৈশ্বিক ঋণ থেকে মোট দেশজ উৎপাদনের হার ৩২২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। যা ২০১৬ সালের সর্বোচ্চ হারকেও ছাড়িয়ে গেছে। বিশাল অংকের এ ঋণের প্রায় অর্ধেকই ছিল অগ্রসর অর্থনীতিগুলোর, যাদের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তাদের ঋণ-জিডিপির অনুপাত দাঁড়িয়েছে ৩৮৩ শতাংশ।
বৈশ্বিক ঋণ বৃদ্ধিতে অনেকগুলো দেশের ভূমিকা রয়েছে। নিউজিল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড ও নরওয়ের মতো দেশগুলোয় খানা ঋণ বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার ঋণ-জিডিপির অনুপাত ছিল সর্বকালের সর্বোচ্চ। যেসব দেশে ঋণ-জিডিপির অনুপাত রেকর্ড সর্বোচ্চে পৌঁছেছে, সেগুলো হচ্ছে বেলজিয়াম, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, লেবানন, নিউজিল্যান্ড, নাইজেরিয়া, নরওয়ে, সুইডেন ও সুইজারল্যান্ড।
উদীয়মান দেশগুলোয় ঋণের পরিমাণ গত বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে ৭২ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, ২০১৮ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে যা ছিল ৬৬ দশমিক ১ ট্রিলিয়ন ডলার। উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর ঋণের পরিমাণ কিছুটা কম হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোয় তা বাড়ছে বলে জানায় আইআইএফ। এক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছে চীন, যাদের ঋণ জিডিপির অনুপাত পৌঁছেছে ৩১০ শতাংশে। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে ঋণভার কমাতে চীনা কোম্পানিগুলোর প্রয়াস সত্ত্বেও গত বছর তা ফের বাড়ল। চীনের সরকারি ঋণের পরিমাণ ২০০৯ সালের পর সর্বোচ্চ হারে বেড়েছে।
আইআইএফ আরো জানায়, জিবুতি, তাজিকিস্তান, মঙ্গোলিয়া, উজবেকিস্তান, মালদ্বীপ, কেনিয়া ও পাকিস্তানে সরকারি ঋণের পরিমাণ ফুলেফেঁপে ওঠার পেছনে বড় ভূমিকা পালন করেছে চীন থেকে প্রত্যক্ষ ঋণ সংগ্রহ। বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান এ ঋণের বোঝা বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য প্রকৃত হুমকি হিসেবে দেখছে আইআইএফ। তাদের আশঙ্কা, চলতি বছরও এ প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।