ই-পাসপোর্ট বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে: প্রধানমন্ত্রী

১১৯তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট যুগে প্রবেশ করল

‘ই-গেট’ দিয়ে সুবিধা মিলবে ‘ই-পাসপোর্ট‘ ব্যবহারের

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বহুল প্রতিক্ষিত ইলেট্রনিক্স পাসপোর্ট (ই-পাসপোর্ট) চালু হওয়ার মাধ্যমে ডিজিটাল বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও একবার উজ্জ্বল হয়েছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘জাতির জনকের জন্মশতবর্ষ উদযাপনের বিশেষ বছরে আমরা মানুষের হাতে ই-পাসপোর্ট সরবরাহ করতে পারছি। আমি বিশ্বাস করি, এটি নিঃসন্দেহে ডিজিটাল বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও একবার আলোকিত করবে।’ এর মাধ্যমে ই-পাসপোর্টে যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ। আজ বুধবার (২২ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে কেন্দ্রে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুজিববর্ষে ই-পাসপোর্ট জাতির জন্য একটি উপহার। এ পর্যন্ত বিশ্বের ১১৮টি দেশে ই -পাসপোর্ট চালু হয়েছে। ১১৯তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট যুগে প্রবেশ করল।’ এরই মধ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ই-পাসপোর্ট প্রস্তুত করা হয়েছে। এই উদ্বোধনের ফলে আজ থেকে সর্বসাধারণের জন্য ই-পাসপোর্ট উন্মুক্ত হলো।

অভিবাসন ও পাসপোর্ট অধিদফতর (ডিপিআই) সূত্র জানিয়েছে, দেশের নাগরিকদের মধ্যে প্রথম ই-পাসপোর্ট পাবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই মধ্যে ই-পাসপোর্টের জন্য তাদের দু’জনেরই ডিজিটাল ছবি ও ডিজিটাল সই সংগ্রহ করা হয়েছে। আজ থেকে প্রথমে রাজধানীর উত্তরা, যাত্রবাড়ী ও আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে ই-পাসপোর্টের কার্যক্রম শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে ২০২০ সালের মধ্যেই সারাদেশে চালু হবে এই পাসপোর্ট সেবা। প্রতিদিন ২৫ হাজার ই-পাসপোর্ট ইস্যু করা হবে।

অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণ করে সাবমিট করতে হবে নতুন পাসপোর্টের জন্য। সেক্ষেত্রে আগেই ব্যাংকের অনলাইন মাধ্যমে টাকা জমা দিয়ে ব্যাংক থেকে সরবরাহ করা রেফারেল নম্বর কোডটি ব্যবহার করতে হবে অনলাইন আবেদন ফরমে। আবার কেউ চাইলে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড দিয়েও পাসপোর্ট ফি জমা দিতে পারবেন। প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করে সাবমিট করার পর প্রিন্ট কপি নিতে হবে। সেই কপি সশরীরে গিয়ে পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে। আবেদন ফরমে ছবি ও সত্যায়ন করা না লাগলেও পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে।

অনলাইনে পূরণ না করে পিডিএফ ফরম ডাউনলোড করে হাতেও পূরণ করা যাবে। ফরম পূরণের সময় ছবি সত্যায়ন করতে হবে না। তবে বয়স্কদের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে জন্মনিবন্ধন সনদ দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

আবেদনপত্র জমা দেওয়ার সময় ই-পাসপোর্টের জন্য ডেমোগ্রাফিক তথ্য, ১০ আঙুলের ছাপ, চোখের কর্নিয়ার ছবি ও ডিজিটাল সই সংগ্রহ করবে পাসপোর্ট অফিস। এসব তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ডাটা সেন্টার ও ডিজ্যাস্টার রিকভারি সেন্টারের সার্ভারে সংরক্ষণ করা হবে। পাশাপাশি পাসপোর্টের আবেদনকারীদের পাসপোর্ট দেওয়ার জন্য পার্সোনালাইজেশন সেন্টারে পাসপোর্ট প্রিন্টিংয়ের পর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ও দূতাবাসগুলোয় পাসপোর্ট বিতরণ করা হবে। সব তথ্য চিপে যুক্ত থাকবে। ইমিগ্রেশন পুলিশ বিশেষ যন্ত্রের সামনে পাসপোর্টের পাতাটি ধরতেই সব তথ্য বেরিয়ে আসবে।

‘ই-গেট’ দিয়ে সুবিধা মিলবে ‘ই-পাসপোর্ট‘ ব্যবহারের

সারাদেশে বিভিন্ন স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে মোট ৫০ টি ‘ই-গেট’ স্থাপন করা হবে। প্রাথমিকভাবে ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্থাপন করা ৯টি ‘ই-গেট’ দিয়ে সুবিধা মিলবে ই-পাসপোর্ট ব্যবহারের। সূত্র জানায়, ই-পাসপোর্ট ব্যবহার করতে সারাদেশে বিভিন্ন স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে মোট ৫০ টি ‘ই-গেট’ স্থাপন করা হবে। এরমধ্যে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৬টি, চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৮টি, সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ৮টি, বেনাপোল স্থলবন্দরে ৪টি, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ৪টি ই-গেট স্থাপন করা হবে। প্রাথমিকভাবে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৯টি ই-গেট চালু করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button