দুবাই এক্সপো পরিবেশ বান্ধব জীবন প্রণালী উপস্থাপন করবে
দুবাই এক্সপো ২০২০-এর সাইসটেন্যাবিলিটি প্যাভিলিয়নসমূহের অনন্য ডিজাইন ও বৈশিষ্টসমূহের লক্ষ্য হচ্ছে জলবায়ূ পরিবর্তন সম্পর্কে শিক্ষা প্রদান এবং একটি ব্যাপক ভিত্তিক পরিবেশ বান্ধব জীবন প্রণালী গ্রহনের বিষয়ে দর্শনার্থীদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি। ৩টি থেমাটিক প্যাভিলিয়নের মধ্যে একটির সাসটেইন্যাবিলিটি কাঠামো সম্পূর্ণভাবে সেলফ-সাসটেইনিং অর্থাৎ আত্মরক্ষণশীল যা নিজেই নিজের জ্বালানী ও পানির ব্যবস্থা করতে সক্ষম। এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে একটি বিল্ডিং, এর ১০৫৫টি সৌর প্যানেলের সাথে সংযুক্ত প্যানেলগুলো বার্ষিক ৪ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সহায়তা করে। এটা ৯ লাখ মোবাইল ফোন চার্জের জন্য আবশ্যক বিদ্যুতের সমতূল্য।
এছাড়াও এখানে আছে মোটরসহ ১৭টি আকৃতির সোলার ট্রি অর্থাৎ সৌরবৃক্ষ, যেগুলো সূর্যের গতি অনুসরণ করে, রয়েছে গ্রেওয়াটার রিসাইক্লিং সিস্টেম, যা দৃশ্যপটে ৭৫ শতাংশ পানির ব্যবহার সাশ্রয় করে এবং আরো আছে একটি শামিয়ানা ডিজাইনের উদ্ভাবনী ভবন, যা সূর্য থেকে জ্বালানী সংগ্রহ করে। এটাও পুনঃব্যবহৃত নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে তৈরী। ভবনটির কাঠামো এখন সম্পূর্ণ এবং ভেতরে পরিবেশ পদ্ধতি সংযোজন করা হচ্ছে- জানালেন যুক্তরাজ্য ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘গ্রিমশো আর্কিটেক্টস-এর চেয়ারম্যান এন্ড্রু হোয়েলি। তিনি বলেন, আমরা প্রায় ৩ বছর আগে প্যাভিলিয়নটির ডিজাইন করি এবং ঐ সময়, আমরা জলবায়ূ পরিবর্তনের ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন ছিলাম। কিন্তু আমি মনে করি জলবায়ূ সংকট নিয়ে সাধারণ সচেতনতা আরো বেশী স্পষ্ট হয়েছে, এমনকি গত ২৪ মাস বা এমন সময়ে। বিশেষভাবে একটি তরুণ প্রজন্মের মধ্যে, যারা পরিবর্তন চাইছে। হোয়েলী আশা করেণ, সাসটেইন্যাবিলিটি প্যাভিলিয়নের দর্শনার্থীরা বিশ্বে জলবায়ূ পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়ার প্রকৃতি সম্পর্কে অধিকতর সচেতনতা অর্জন করবেন।
উল্লেখ্য, প্যাভিলিয়নের ডিজাইন বা নকশার পেছনে যে বিষয়টি মূল অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করছে, তা হচ্ছে প্রকৃতি এবং সমগ্র কাঠামোতে এটা চমৎকারভাবে ব্যবহৃত হয়েছে। প্যাভিলিয়নের ভবনের ক্যানোপি অর্থাৎ শামিয়ানা তৈরী হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের জাতীয় বৃক্ষ ‘ঘাফ’-এর অনুপ্রেরণা থেকে।
হোয়েলী বলেন, ক্যানোপির আকৃতি হচ্ছে এটি ‘ঘাফ’। এটা ঐ বৃক্ষের অনুরূপ, কারণ এটা আসলেই ছায়াদানকারী বৃক্ষ। গাছটি সারা এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এবং ছাদ, আঙ্গিনা ও নীচের সবাইকে ছায়া দিচ্ছে। কম্পিউটার বিশ্লেষণের একটি সিরিজ এবং বায়ূ সুড়ঙ্গের টেস্টিংও এর ডিজাইনের অভ্যন্তর দিয়ে চলে গেছে। এর ফলে এটা কার্পেট, আঙ্গিনা দিয়ে মৃদুমন্দ বায়ূ টেনে আনতে এবং ফিরিয়ে দিতে সাহায্য করবে। এটা গোটা পরিসর শীতল রাখতে সাহায্য করবে। তিনি বলেন, দর্শনার্থীদের কাছে বিপুল সংখ্যক পদ্ধতি উপস্থাপন করা হবে, যখন তারা এগুলো দেখবেন বুঝতে পারবেন, এগুলো যে কোন ভবনে সংযোজন করা যেতে পারে।
জাতিসংঘ বিশ্বের সকল স্থপতির প্রতি ‘নেট-জিরো’ নিশ্চিত করার জন্য আহŸান জানিয়েছে, যাতে আসন্ন জলবায়ূ সংকট মোকাবেলা করা যায়। বিশ্ব সংস্থা ২০৩০ সাল থেকে সকল ভবন ‘নেট জিরো’ করার আহŸান রেখেছে। ‘নেট জিরো’ হচ্ছে এমন একটি ভবন, যা উচ্চ জ্বালানী সাশ্রয়ী এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানী উৎসমূহের দ্বারা চালিত।