আল্লাহর রাহে সর্বোচ্চ ত্যাগের দৃষ্টান্ত স্থাপন করাই কুরবানীর মূল শিক্ষা : আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী
হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী বলেছেন, আল্লাহর রাহে সর্বোচ্চ ত্যাগের দৃষ্টান্ত স্থাপন করাই কুরবানীর মূল শিক্ষা। বর্তমান প্রচলিত কুরবানী মূলত: হযরত ইব্রাহীম (আ.)-এর অতুলনীয় খোদাপ্রেম ও ইসমাঈল (আ.)-এর অমর ত্যাগের দৃষ্টান্তের স্মারক। হযরত ইব্রাহীম (আ.) তাঁর নবুওয়াতী জীবনে বহু কঠিন পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। সব পরীক্ষায় তিনি খোদাপ্রেমের অতুলনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। ফলে তিনি সাফল্যের শীর্ষ চূড়ায় আরোহন করেন। আমরাও যদি সকল ইবাদত, দ্বীনের হেফাজত ও প্রত্যেক কাজে সর্বোপরি পুরো জীবনে সে ইব্রাহিমী চেতনা আর ইসমাঈলী ত্যাগের আদর্শ ধারণ করি, তাহলে অবশ্যই ইব্রাহিম (আ.)-এর মতো সফল হবো।
গতকাল বুধবার এশিয়ার বৃহত্তম দ্বীনি শিক্ষা নিকেতন জামিয়া আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারীর উচ্চতর হাদীস গবেষণা বিভাগ কর্তৃক অনুষ্ঠিত ‘কুরবানীর শিক্ষা, তাৎপর্য ও আহকাম’ শীর্ষক এক সেমিনারে হেফাজতের আমির শায়খুল হাদীস আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী প্রধান অতিথির বক্তবে এসব কথা বলেন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল-জামিয়াতুল আহ্লিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলামের মুহাদ্দিস, প্রখ্যাত হাদীস বিশারদ আল্লামা হাফেজ জুনায়েদ বাবুনগরী।
সেমিনারে মাওলানা আরিফ মাহমুদ ও মাওলানা আছেমের পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন মুফতি শাহেদ, মুফতি শামসুর রহমান, মাওলানা ফরিদুল আলম আমিনী, মাওলানা মুফতি মাহমুদ হাসান, মাওলানা জুনাইদ ও মাওলানা ফরহাদ প্রমুখ। সেমিনারে অনুষদের প্রায় অর্ধশতাধিক ছাত্র বাংলা, আরবি, উর্দু, ইংরেজি ও ফার্সি ভাষায় গবেষণামূলক তথ্যবহুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী সভাপতির বক্তব্যে বলেন, হযরত ইব্রাহীম (আ.) আল্লাহর একত্ববাদের দাওয়াত দিতে গিয়ে তৎকালীন প্রতাপশালী রাজা নমরুদের রোষাণলে পড়েন। এমনকি দ্বীনের জন্যে জ্বলন্ত অগ্নিকু-ে নিক্ষিপ্ত হন। যুগে যুগে প্রত্যেক নবীগণ বাতিলের মুকাবেলায় অসীম ধৈর্য্য ও ত্যাগের দৃষ্টান্ত রাখেন। আমরা যদি কুরবানীর প্রকৃত চেতনা ধারণ করে আমাদের জীবন পরিচালনা করি তাহলে আমাদের জীবন সফল ও সার্থক হবে, ইন্শাআল্লাহ্।
হেফাজত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৫ মে দ্বীনের হেফাজতের লক্ষ্যে শাপলা চত্বরে যারা সর্বোচ্চ ত্যাগ’স্বরূপ শাহাদাত বরণ করেন তাদের রক্ত কখনো বৃথা যেতে পারে না, তাদের জীবন স্বার্থক। দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে মুনাজাতের মাধ্যমে সেমিনার সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।