৩ বছরের মুসলিম বালকের বিশ্বের সেরা আইকিউ সোসাইটিতে যোগদান
স্ট্যানফোর্ড-বিনেট আইকিউ টেস্টে ১৪২ স্কোরের পর তিন বছরের বালক মোহাম্মদ হারিজ নাদিমকে মেনসা ইউকে-তে যোগদানের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তার অবস্থান ৯৯-৭তম পার্সেন্টাইলে। হারিজের মা নূর আনিরা আসিকিন হাশিম বলেন, তিনি জানতেন যে তার ছেলে বিশেষ কিছু হতে চলেছে, যখন সে মাত্র ৭ মাস বয়সে কথা বলতে শুরু করে। হারিজের পিতামাতা আনিরা ও মোহাম্মদ মূলতঃ মালেশীয়। কিন্তু বর্তমানে নর্থইস্ট ইংল্যান্ডের ডুরহামে বসবাস করছেন। উভয়ই প্রকৌশলী। কিন্তু তারা কখনো বুঝতে পারেননি তাদের পুত্র ঠিক কীভাবে বিশেষ হয়ে ওঠতে পারে।
আনিরা বলেন, আমাদের তেমন অভিজ্ঞতা ছিলো না, তাই আমরা শুধু ভেবেছিলাম এমন শিশুতো হয়ই। কিন্তু যখন সে নার্সারীতে যেতে শুরু করে, তখন আমাদেরকে বলা হয় যে, সে অন্যান্য শিশুদের চেয়ে অগ্রসর। তিনি আরো বলেন, নার্সারীতে থাকাকালে হারিজ তার প্রিয় গল্পের সবগুলো বই পড়তে পারতো। এমনকি হারিজের ভাষা ও পড়ার দক্ষতাকে যা আরো আকর্ষনীয় করে তা হচ্ছে ইংরেজী, অথচ তার বাড়িতে কথাবার্তায় এই ভাষা ব্যবহার করা হয় না।
আনিরা জানান, আমরা বাড়িতে তার সাথে মালে ভাষায় কথাবার্তা বলি। হারিজ জানেনা সে কতোটুকু চালাক। ওয়েবসাইট অনুসারে ব্রিটিশ মেনসা’র একজন সদস্য হতে হলে একজনকে অবশ্যই একটি আইকিউ টেস্টে জনসংখ্যার ২ শতাংশের মধ্যে অবস্থান করতে হয়।
গনিত, পাঠ, মুখস্তকরণ এবং প্রশ্নাবলীর যৌক্তিক চিন্তা ভাবনার সমন্বয়ে গঠিত স্ট্যানফোর্ড-বিনেট আইকিউ টেস্ট সমাপ্তির পর হারিজকে মূল্যায়ন করেন শিক্ষাগত মনোস্তত্ত¡বিধ লিন ক্যানডল, যিনি ‘গিফটেড চিলড্রেন’ অর্থাৎ ঐশ্বরিক দানপ্রাপ্ত শিশুদের বিষয়ে বিশেষজ্ঞ। আনিরার প্রত্যাশা, হারিজ তার সম্ভাবনার বিকাশ সাধনে প্রয়োজনীয় সহায়তা পেতে সক্ষম হবে।
আনিরা বলেন, আমরা শুধু স্পষ্ট হতে চাই, কীভাবে আমরা তাকে সাহায্য করতে পারি। আমরা চাইনে সে অনুভব করুক যে সে নিরুত্তাপ, একই সময়ে আমরা চাইনে সে অনুভব করুক যে, তাকে পেছনে থেকে ঠেলা হচ্ছে। আমরা চাই স্বাভাবিক শিশুরা যা করে সে সেইসব সাধারন কাজগুলোই করবে।
আনিরা হারিজকে তার ‘ক্ষুদ্র ব্রেইনবক্স’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, তা সত্বেও অন্য সব দিক দিয়ে সে একটি সাধারন ৩ বছরের শিশুর মতোই। আনিরা বলেন, সে পাডলসে লাফ দিতে, আঁকাআঁকি করতে, গান গাইতে ভালোবাসে তার বয়সী অন্যান্য শিশুদের মতোই। তার প্রিয় টিভি অনুষ্ঠানগুলো হচ্ছে ‘স্টোরি বটস্’ এবং ‘নুম্বার ব্লকস্’। তবে সে অপেক্ষাকৃত বেশী বয়সী সঙ্গী ও বয়স্কদের সাথে কথাবার্তা বলতে পছন্দ করে। তিনি আরো বলেন, হারিজ মহাকাশ ও সংখ্যা বিষয়ে প্রশ্ন করে ও কথা বলে। সে বই পড়তে ভালোবাসে।
আনিরা ও মোহাম্মদ এই ভেবে রোমাঞ্চিত যে, তাদের শিশুপুত্র হারিজ মেনসা’য় গৃহীত হয়েছে এবং তাদের প্রত্যাশা, সে যা-ই অর্জন করুক সে যেনো বিশ্বকে একটি উত্তম স্থানে পরিণত করতে পারে। আনিরা বলেন, এটা রোমাঞ্চকর এবং আমরা নিশ্চিত যে, এটা কিছুটা হলেও তার মাঝে আত্মবিশ্বাস প্রদানে সহায়তা করবে যাতে সে ভবিষ্যতে সমাজের কল্যাণ সাধন করতে পারে।