সন্ত্রাসবিরোধী আইন আরো কঠোর করছে ব্রিটেন
অভিযুক্ত কারাবন্দিদের ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে কঠোরতা আনতে যাচ্ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী
সন্ত্রাসবিরোধী আইন আরো কঠোর করতে যাচ্ছে ব্রিটেন। বিশেষ করে সন্ত্রাসী হামলায় অভিযুক্ত কারাবন্দিদের ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে আইনে কঠোরতা আনতে যাচ্ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। গত রোববার লন্ডনের স্ট্রিটহ্যাম হাই রোডে সুদেশ আম্মাম নামে এক ব্যক্তি ছুরি নিয়ে হামলা চালায়। এতে আহত হয় দুজন। এর পরই সন্ত্রাসবিরোধী আইন কঠোরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এ পরিস্থিতিতে বরিস জনসন ঘোষণা দেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিষয়ে আইনে মৌলিক পরিবর্তন আনা হবে। এ বিষয়ে তার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল বলেন, এরই মধ্যে যেসব কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে, তার ওপর ভিত্তি করেই নতুন পদক্ষেপগুলো নেয়া হবে। যাতে করে সন্ত্রাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা আগেই জেল থেকে ছাড়া না পায়, সেজন্য নতুন আইন করা হবে। তার মতে, এ ধরনের ব্যক্তিদের অবশ্যই কারান্তরীণ থাকা উচিত।
ব্রিটিশ রাজনীতিবিদরা আগে থেকেই বারবার দেশটির সন্ত্রাসবিরোধী আইন কঠোর করার কথা বলে আসছেন। তাদের এ দাবি আরো জোরালো হয় গত নভেম্বরের পর। কারণ ওই মাসে সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকাণ্ডে অভিযুক্ত এক ব্যক্তি লন্ডন ব্রিজের কাছে হামলা চালিয়ে দুজনকে খুন করে, আহত করে আরো অন্তত তিনজনকে। এরপর পুলিশের গুলিতে তার মৃত্যু হয়।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ওই হামলার পর থেকে তার সরকার সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বেশকিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমের সবগুলো উপাদান আরো শক্তিশালী হয়েছে। পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে কারাদণ্ডের সময় বাড়ানো ও পুলিশের জন্য আরো বেশি অর্থায়ন।
জেলে ইসলামী চরমপন্থীদের ব্যবস্থাপনা নিয়ে পর্যালোচনাকারী আয়ান আচেসন বলেন, কারাগার পরিষেবায় চরমপন্থী সন্ত্রাসীদের ব্যবস্থাপনার বিষয়ে তেমন কোনো আগ্রহ ছিল না। আমাদের মেনে নেয়া উচিত যে, কিছু মানুষ যারা খুবই বিপজ্জনক, তাদেরকে অনির্দিষ্টকালের জন্য জেলে বন্দি রাখা প্রয়োজন। ব্রিটেনের কাউন্টার টেরোরিজম পুলিশের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা মার্ক রোলে বলেন, শিগগিরই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অভিযুক্ত আরো কয়েক ডজন ব্যক্তি জেল থেকে ছাড়া পেতে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত রোববার লন্ডনের স্ট্রিটহ্যাম হাই রোডে সুদেশ আম্মাম নামে এক ব্যক্তি ছুরি নিয়ে হামলা চালায়। এতে দুজন গুরুতর ও একজন সামান্য আহত হয়। সন্ত্রাসবাদী কাগজপত্র ও বই রাখার দায়ে ২০১৮ সালে সুদেশ আম্মামকে কারাদণ্ড দেয়া হয়। সম্প্রতি তিনি জেল থেকে ছাড়া পান। গত রোববারের হামলার সময় তিনি পুলিশের গুলিতে নিহত হন। হামলার সময় তিনি শরীরে নকল বোমা জড়িয়ে নেন। এর পরই ছুরি হাতে তিনজনের ওপর হামলা করেন। এর আগে আম্মাম আইএসের প্রশংসা করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেন আল কায়েদার একটি অনলাইন পত্রিকা। পাশাপাশি তার বান্ধবীকে বাবা-মাকে হত্যা করার জন্যও উৎসাহ দেন। মূলত ১৭ বছর বয়সেই হাম্মাম সন্ত্রাসী মতবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েন। ২০১৮ সালের দিকে পুলিশ তার কর্মকাণ্ডের বিষয়ে খোঁজ পায়। এরপর ওই বছরের এপ্রিলে উত্তর লন্ডনের একটি রাস্তা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।