প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে বাংলাদেশ

জয় এনে দিলেন বহু আকাঙ্ক্ষিত সে জয়। দুই দশক ধরে যা করা সম্ভব হয়নি, সেটাই করে দেখালেন মাহমুদুল হাসান। জয় ডাকনামের এই ডানহাতি ব্যাটসম্যানের দারুণ এক ইনিংস বাংলাদেশকে যেকোনো ধরনের ক্রিকেটে প্রথম বিশ্বকাপ ফাইনালের স্বাদ এনে দিল আজ। সাকিব-তামিম-মুশফিকেরা পারেননি। ঘরের মাঠে ফেবারিট তকমা গায়ে লাগিয়েও সেটা করে দেখানো হয়নি মেহেদী হাসান মিরাজ-সাইফউদ্দিনদের। দক্ষিণ আফ্রিকায় অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে তাই ফেবারিটের ছোট তালিকায় বাংলাদেশ ছিল না। কিন্তু মাহমুদুল-তৌহিদ-শরিফুলদের দল সব হিসাব বদলে দিয়ে চলে গেল ৯ ফেব্রুয়ারির ফাইনালে। সেখানে বাংলাদেশের জন্য অপেক্ষা করছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত।

পচেফস্ট্রুমের মাঠ বাংলাদেশের জন্য বহু পরিচিত হয়ে উঠেছে। এখানেই থিতু হওয়া বাংলাদেশ দল এ মাঠেই কোয়ার্টার ফাইনালে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে সেমিতে উঠেছিল। এ মাঠেই নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হয়ে নিজেদের দাপট দেখাল বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের ছুড়ে দেওয়া ২১২ রানের লক্ষ্য ৬ উইকেট হাতে রেখেই ছুঁয়েছে বাংলাদেশ দল। ম্যাচের বাকি ছিল আরও ৩৫ বল।

পচেফস্ট্রুমে পরে ব্যাট করলে স্পিনাররা দাপট দেখান। তবু আজ ফিল্ডিং বেছে নিয়েছে বাংলাদেশ। সিদ্ধান্তটা যে সঠিক ছিল, সেটা প্রমাণ করেছেন বোলাররা। প্রথম ২০ ওভারে নিউজিল্যান্ডকে একদম চেপে ধরেছিলেন তাঁরা। ২১তম ওভারে যখন তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ফার্গুস লেলম্যান ফিরছেন, দলের রান তখন মাত্র ৫৯। ইনিংসের অর্ধভাগ পেরোনোর সময়ও নিউজিল্যান্ডের রান ছিল ৭৪। ওই রানেই চতুর্থ উইকেট হারিয়েছে কিউই যুবারা।

এরপরই প্রতিরোধ শুরু হয়েছিল নিউজিল্যান্ডের। লিডস্টোনকে নিয়ে ৬৭ রানের জুটি গড়েছেন বেকহাম হুইলার গ্রিনাল। শেষ ১০ ওভারে এ দুজন ঝড় তোলার অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু তখনই আঘাত হেনেছেন শরিফুল ইসলাম। লিডস্টোনকে (৪৪) বোল্ড করে দেন এই বাঁহাতি পেসার। অন্য প্রান্তে নিয়মিত উইকেট পতন হলেও হুইলার গ্রিনাল একপ্রান্ত ধরে রেখেছেন। তাঁর কারণেই দুই শ পেরোতে পেরেছিল নিউজিল্যান্ড। প্রথম ৮ ওভারে মাত্র ১৫ রান দিয়ে ২ উইকেট পাওয়া শরিফুলের শেষ দুই ওভারে ৩০ রান দিতে বাধ্য হয়েছেন গ্রিনালের কারণেই। ৭৫ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন এই ব্যাটসম্যান।

পচেফস্ট্রুমে স্পিনাররা দাপট দেখাচ্ছেন এবার। নিউজিল্যান্ড দলেও আছেন তিনজন স্পিনার। তাই বাংলাদেশের কাজটা সহজ ছিল না। প্রথম ১০ ওভারের মধ্যে দুই ওপেনার পারভেজ হোসেন ও তানজিদ হাসান ফিরে যাওয়ায় শঙ্কাও জেগেছিল। আরও একবার সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হবে না তো। ৬৮ রানের জুটিতে হৃদয় ও মাহমুদুল পরিস্থিতি সামাল দিলেন। শাহাদাতকে নিয়ে আরেকটি ১০১ রানের জুটিতে ম্যাচ নিয়ে শঙ্কা শেষ করলেন। দারুণ স্ট্রোক প্লের সঙ্গে স্ট্রাইক বদলে নিয়ে কখনো চাপ বাড়াতে দেননি। নিজের সেঞ্চুরি পেয়েই অবশ্য ফিরেছেন মাহমুদুল। ১২৭ বলে ১০০ করা মাহমুদুল ফিরলেও জয় না নিয়ে মাঠ ছাড়েননি শাহাদাত (৪০*)।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button