২০ বছরে সর্বোচ্চ
ব্রিটেনে কর্মসংস্থান বাড়লেও কর্মজীবীদের মধ্যে বেড়েছে দারিদ্র্য
ব্রিটেনের দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করা ১০টি শিশুর মধ্যে সাতটিই এ কর্মজীবী দরিদ্র্য পরিবারের
ব্রিটেনে কর্মজীবী মানুষের মধ্যে দারিদ্র্য বাড়ছে। ২০১৮ সালে টানা তৃতীয় বছরের মতো এ প্রবণতা অব্যাহত থাকতে দেখা গেছে। এর অর্থ দেশটিতে কর্মসংস্থান বাড়লেও তা মানুষের জীবনযাপনের মান উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। দ্য জোসেফ রন্ট্রি ফাউন্ডেশন নামে একটি দাতব্য সংস্থার জরিপে এমন তথ্য দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে কর্মজীবী পরিবারের মধ্যে প্রায় ৫৬ শতাংশই দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছিল। যেখানে ২০ বছর আগে এ ধরনের পরিবারের মধ্যে দারিদ্র্যের হার ছিল ৩০ শতাংশ। প্রতিবেদনে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে, ব্রিটেনের দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করা ১০টি শিশুর মধ্যে সাতটিই এ কর্মজীবী দরিদ্র্য পরিবারের।
এদিকে এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভুগছে সিঙ্গেল ফ্যামিলিগুলো। চাকরির বেতন দিয়ে তারা জীবনযাত্রার ব্যয় সঙ্কুলান করতে পারছেন না। ২০১৮ সালের জরিপ অনুযায়ী, কর্মজীবী দরিদ্র পরিবারের মধ্যে ১০টির তিনটিই সিঙ্গেল পেরেন্ট (মূলত সিঙ্গেল মাদার)। যেখানে ২০১১ সালে এ হার ছিল ১০ জনে দুই জন।
এখানে আরেকটি উদ্বেগের বিষয় হলো, সবচেয়ে গরিবরা সবচেয়ে নিম্নমানের স্বাস্থ্য পেয়ে থাকে এবং তাদের চাকরিও খুব অনিশ্চিত। সরকারের সাম্প্রতিক নীতির বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ হিসেবে এটি বলা যেতে পারে। দেখা যাচ্ছে, কর্মজীবীদের মধ্যে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ব্যাপক বেড়েছে। ১৯৯৮ সালে যেখানে ছিল ৯ দশমিক ৯ শতাংশ, ২০১৮ সালে এসে তা একলাফে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৭ শতাংশ।
যুক্তরাজ্যের ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ফ্রান্সিস ও’গ্রেডি বলেন, দারিদ্র্য ভাতা এবং অনিশ্চিত চাকরির ওপর ভিত্তি করে গঠিত ব্যবসায়িক মডেল ভেঙে ফেলতে হবে। ‘জিরো আওয়ার কন্ট্রাক্ট’ নিষিদ্ধ করা উচিত। সেই সঙ্গে ন্যূনতম মজুরি ঘণ্টায় কমপক্ষে ১০ পাউন্ড করতে হবে। ‘জিরো আওয়ার কন্ট্রাক্ট’ ব্যবস্থায়, চাকরিদাতা কর্মীকে নিয়মিত বেতন দেন না। তবে ডাক পড়লে কর্মীকে অবশ্যই কাজে যোগ দিতে হয়।
জরিপের তথ্য মতে, যুক্তারাজ্যে বর্তমানে ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছে। মোট জনসংখ্যার হিসাবে প্রতি পাঁচজনে একজনেরও বেশি মানুষ গরিব। এর মধ্যে ৪০ লাখ শিশু, ২০ লাখ পেনসনভোগী।
যুক্তরাজ্যের মান অনুযায়ী, ঘরভাড়া দেয়ার পর পরিবারের আকার অনুযায়ী মধ্যমমানের আয়ের ৬০ শতাংশের কম উপার্জন করলে সেই পরিবারকে দরিদ্র বলে ধরে নেয়া হয়। পরিবারের আয় বলতে চাকরি, আত্মকর্মসংস্থান, রাষ্ট্রীয় সুবিধা বা ভাতা এবং উত্তরাধিকা সূত্রে প্রাপ্ত সম্পদ থেকে উপার্জনের মোট পরিমানকে বুঝায়।