দুইশ কোটি কাগজের নোট বাজার থেকে প্রত্যাহার করবে ব্রিটেন
এটি যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে সর্বাধিক সংখ্যক টাকার নোট প্রতিস্থাপনের ঘটনা
চার হাজার কোটি পাউন্ডের সমান ব্যাংকনোট ধ্বংস করার মহাযজ্ঞ শুরু করেছে ব্রিটেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘ব্যাংক অব ইংল্যান্ড’। বাজারে প্রচলিত ২০ পাউন্ডের কাগজের নোটগুলো পচিয়ে কম্পোস্ট তৈরি করা হচ্ছে। এই কম্পোস্ট ব্যবহার করা হবে কৃষিজমির উর্বরাশক্তি বৃদ্ধিতে। প্রায় দুইশ কোটি কাগজের নোট বাজার থেকে প্রত্যাহার করা হবে। এর বিপরীতে বাজারে ছাড়া হবে নতুন পলিমারে তৈরি ২০ পাউন্ডের নোট।
ব্রিটেনের মোট ব্যাংক নোটের দুই তৃতীয়াংশের পরিবহন ও নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে বহুজাতিক নিরাপত্তা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জিফোরএস। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা মার্ক সুন্ডারেস বলেন, এটা একটা বিশাল কর্মযজ্ঞ। সাধারণ মানুষ অবশ্য খুব একটা টের পাবে না।
২০০ কোটি ব্যাংক নোট প্রতিস্থাপন- এটি যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে সর্বাধিক সংখ্যক টাকার নোট প্রতিস্থাপনের ঘটনা। ব্রিটেনের পুরনো ২০ পাউন্ডের নোটটিতে রয়েছে বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম স্মিথের ছবি। এটি এরই মধ্যে বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে এগুলো ব্যাংক বা ক্যাশ সেন্টারে ফিরে আসছে। আবার অনেকে এসব নোট তাদের ক্যাশ মেশিনেই রিসাইকেল করছে।
সম্পূর্ণ পুরনো নোট প্রতিস্থাপন করতে কয়েক মাস লেগে যেতে পারে। যথেষ্ট পরিমান নোট ধ্বংস হয়ে গেছে বলে মনে হলে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড বাকি নোটগুলো জমা দিতে আরো ছয় মাস সময় দিতে পারে। অবশ্য নতুন নোট চালু হয়ে গেলে ব্যাংকগুলোকে তাদের হাজারদশেক এটিএম বুথের কিছু অবকাঠামোগত পরিবর্তন আনতে হবে। কারণ নতুন ২০ পাউন্ডের নোটটি পুরনোটির চেয়ে সামান্য ছোট।
২০ পাউন্ডের নোট সর্বশেষ প্রতিস্থাপন করা হয় ২০০৭ সালে, যখন এডওয়ার্ড এলগারের ছবি সম্বলিত নোট প্রত্যাহার করে অ্যাডাম স্মিথের ছবি সম্বলিত নোট আনা হয়। ওই সময় সম্পূর্ণ প্রত্যাহার প্রক্রিয়া শেষ করতে তিন বছর লেগেছিল। তবে এবার একটু দ্রুতই এ কাজ সারবে সরকার। ২০২১ সালের মধ্যেই নোট প্রত্যাহার শেষ হবে। পুরনো ২০ পাউন্ডের নোট প্রত্যাহার শুরু হয়েছে ২০১৯ সালের শুরুর দিকে। স্বয়ংক্রিয় মেশিনে নোটের বান্ডিল থেকে পুরনো নোটগুলোকে আলাদা করার পর কেটে কুচি কুচ করে ফেলা হচ্ছে। একাধিক প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা এ কাজ করছে।
১৯৯০ সাল পর্যন্ত ব্যাংক অব ইংল্যান্ড পুরনো বাতিল নোটগুলো লন্ডন শহরে ব্যাংকের ভবন গরম রাখতে একটি চুল্লিতে পোড়ানো হতো। তবে এবার ৫০ হাজার পাউন্ডের সমান বান্ডিল যখন আসছে সেটিকে একটি জৈবসার (কম্পোস্ট) তৈরির প্লান্টে নেয়া হচ্ছে। উচ্ছিষ্ট খাবার কম্পোস্ট করতে যে প্লান্ট ব্যবহার করা হয় এটি তেমনি। এই কম্পোস্ট ব্যবহার করা হবে কৃষিজমিতে। -বিবিসি