ভাষাসৈনিক প্রফেসর আজিজ ও অধ্যক্ষ মাসউদকে কেমুসাসের সম্মাননা
ভাষা আন্দোলনের সূতিকাগার কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে প্রখ্যাত ভাষাসৈনিক শিক্ষাবিদ প্রফেসর মো. আব্দুল আজিজ ও প্রখ্যাত ভাষাসৈনিক অধ্যক্ষ মাসউদ খান-কে কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ (কেমুসাস) ভাষাসৈনিক সম্মাননা-২০২০ প্রদান করেছে।
কেমুসাসের সাবেক সভাপতি কবি রাগিব হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে কেমুসাস ভাষাসৈনিক সম্মাননা-২০২০ প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তারা এই উভয় ভাষাসৈনিককে একুশে পদকে ভূষিত করার জোর দাবি জানান। বক্তারা বলেন ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে আমাদের স্বাধীনতা এসেছে। আমাদের জাতিসত্তার বিকাশ ও স্বাধীন স্বার্বভৌম রাষ্ট্রের অন্যতম কারিগর ভাষাসৈনিকেরা। গত শুক্রবার মহান একুশে ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টায় কেমুসাস সাহিত্য আসর কক্ষে আয়োজিত মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষাদিবস উপলক্ষ্যে কেমুসাস ভাষাসৈনিক সম্মাননা অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
ভাষা আন্দোলনের সূতিকাগার কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের এই সম্মাননাকে স্বাগত জানিয়ে উভয় ভাষাসৈনিক আবেগাপ্লুত বক্তব্যে বায়ান্নোর স্মৃতিচারণ করেন। এসময় সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কবি শুভেন্দু ইমাম। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেমুসাসর সহসভাপতি লে. কর্ণেল (অব.) সৈয়দ আলী আহমদ, কেমুসাসের সাবেক সভাপতি হারুনুজ্জামান চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মুজিবুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান এ এইচ মাহমুদ রাজা চৌধুরী।বইমেলা উপকমিটির সদস্যসচিব নাজমুল হক নাজুর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্যে ভাষাসৈনিকদের সংক্ষিপ্ত জীবনী তুলে ধরেন কেমুসাসের সহসভাপতি গল্পকার সেলিম আউয়াল।
সভায় অনুভূতি ব্যক্তকালে অধ্যক্ষ মাসউদ খান বলেন, মাতৃভাষা একটি জাতির মেধাবিকাশ ও বুদ্ধিবিকাশের একমাত্র মাধ্যম। মাতৃভাষার সাথে প্রতিটি মানুষের জীবনের সম্পর্ক রয়েছে। তাই মাতৃভাষার জন্য আমরা জীবন বাজি রেখেছি।
সভায় অনুভূতি ব্যক্তকালে প্রফেসর মো. আবদুল আজিজ বলেন, আজকাল অনেক ভূয়া ভাষাসৈনিক তৈরি হয়েছে। যারা ভাষা আন্দোলনের সাথে কোনোভাবেই জড়িত নয়। তাই আপনারা সজাগ দৃষ্টি রাখবেন যাতে ভূয়া ভাষা সৈনিকের কারণে প্রকৃত ভাষা সৈনিকেরা আড়াল না হয়।
সভাপতির বক্তব্যে কবি রাগিব হোসেন চৌধুরী বলেন প্রখ্যাত ভাষাসৈনিক শিক্ষাবিদ জ্ঞানের বাতিঘর প্রফেসর মো. আব্দুল আজিজ ও প্রখ্যাত ভাষাসৈনিক শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিবিদ অধ্যক্ষ মাসউদ খান আমাদের ইতিহাসের অংশ। তাদেরকে একুশে পদকে ভূষিত করা হোক।
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে কবি শুভেন্দু ইমাম বলেন, প্রফেসর মো. আব্দুল আজিজ ও অধ্যক্ষ মাসউদ খান এই দুজনই ভাষার জন্য সংগ্রাম করেছেন। তাদেরকে সম্মাননা প্রদানের এই অনুষ্ঠান তাৎপর্যপূর্ণ ও মনোমুগ্ধকর।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের প্রাঙ্গনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠণিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে মহান একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষ্যে কেমুসাসের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। পরে কেমুসাসের পক্ষে ভাষাশহিদদের স্মরণে সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়।
এসময় কেমুসাস নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান এ এইচ মাহমুদ রাজা চৌধুরী, সাবেক সভাপতি হারুনুজ্জামান চৌধুরী, সহসভাপতি মো. বশিরুদ্দিন, সহসভাপতি সেলিম আউয়াল, সহ সাধারণ সম্পাদক সাবিনা আনোয়ার, বইমেলা উপকমিটির সদস্যসচিব নাজমুল হক নাজু, পাঠাগার সম্পাদক আহমদ মাহবুব ফেরদৌস, কার্যকরী কমিটির সদস্য এডভোকেট আব্দুস সাদেক লিপন ও সৈয়দ মো. তাহের প্রমূখ।