তার ভ্রমণে আশা ও অনুপ্রেরণা ছড়িয়েছে
পায়ে হেঁটে লন্ডন থেকে মক্কার পথে এক ব্রিটিশ মুসলিম
‘তুরস্কের আতিথেয়তায় আমি নির্বাক’
ইসলামকে একটি শান্তিপূর্ণ ধর্ম বলে বিশ্বকে দেখানোর চেষ্টা করে ব্রিটিশ নাগরিক ফরিদ ফিয়াদি (৪০) লন্ডন থেকে মক্কার পথে পায়ে হেঁটে হাজার হাজার মাইল পথ অতিক্রম করেছেন। ম্যানচেস্টারের বাসিন্দা, ডিজাইনার এবং উদ্ভাবক ফিয়াদি ইস্তাম্বুল থাকাকালীন তাঁর চলমান যাত্রা শোনালেন আনাদোলু এজেন্সিতে। তিনি তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করতে এবং বিশ্বকে প্রমাণ করতে যে মুসলমানরা শান্তিতে রয়েছে তার জন্য তিনি ওয়াক ফর পিস নামে একটি প্রকল্প চালু করেছিলেন।
‘‘একজন মুসলমান হিসাবে আমি বিশ্বাস করি যে আমরা প্রত্যেকেই এই ধর্মের একজন দূত, আমাদের কাঁধে একটি বড় দায়িত্ব রয়েছে বিশ্বের সেরা উপায়ে ইসলাম ও মুসলমানদের প্রতিনিধিত্ব করা। আমি খুব শান্তিপূর্ণভাবে কিছু করার চেষ্টা করেছি এবং ইসলামকে দেখানোর চেষ্টা করেছি।’’ যদিও তার প্রথম উদ্দেশ্যটি ছিল সাইকেলের মাধ্যমে তীর্থযাত্রা করা, পরে অন্যরাও সেই পথে যাত্রা শুরু করে জানতে পেরে তিনি পায়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
আমি খুব উত্তেজিত ছিলাম, মক্কায় তীর্থযাত্রা করা মুসলমানদের একটি ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা – পায়ে হেঁটে যাওয়া সম্মান ও আশীর্বাদের। তিনি বলেন, ‘‘আমি এই যাত্রাটি ৩ নভেম্বর ২০১৯ এ শুরু করেছিলাম। আমি আশাবাদী যে, পবিত্র নগরী মক্কায় আগামী জুলাই নাগাদ পৌঁছাতে সক্ষম হব। যখন সারা পৃথিবী থেকে লক্ষ লক্ষ ধর্মপ্রান মুসলমান প্রতি বছর হজ করতে সৌদি আরবে যাবেন।’’
ফিয়াদি জানিয়েছেন, অভিজ্ঞতার অভাবে তাকে তিনবার ট্রলি পরিবর্তন করতে হয়েছিল এবং পথে পথে সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছিল। এছাড়াও অনেক বিপজ্জনক অভিজ্ঞতা রয়েছে। দীর্ঘদিনের যাত্রা থেকে হাঁটুতে ব্যথা হ্রাস করার জন্য তিনি প্রতি রাতে ওষুধ এবং ভিটামিন গ্রহণ করার পরেও তিনি এখন পর্যন্ত চার জোড়া জুতা পরিবর্তন করেছেন।
ফিয়াদি ব্যাখ্যা করেছিলেন যে বসনিয়া, আলবেনিয়া এবং তুরস্ক – মুসলিম দেশগুলি যে পথে তিনি পেরিয়ে গেছেন – তাঁর স্থনীয় লোকেরা বিশেষভাবে আনন্দিত হয়েছিলেন। তিনি তুরস্ক এবং তুর্কি সম্প্রদায়ের মধ্যে যে আতিথেয়তা পেয়েছিলেন তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
ফিয়াদি ব্যাখ্যা করেছিলেন যে, তিনি ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে বিশ্বকে একটি বার্তা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েছেন। ‘‘আমার অর্জন এই বার্তা দিচ্ছে যে ইসলাম শান্তির ধর্ম, মুসলমানরা শান্তিকামী মানুষ’’, তিনি আশাবাদী, এটি তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে। ‘‘আমি এটি করছি এবং বিশ্বের সবচেয়ে পবিত্র জায়গায় যাচ্ছি, আমি বিশ্বকে এবং মুসলমানদের কাছেও একটি বার্তা দিতে চাই, আপনি যখনই বিশ্বের কাছ থেকে আপত্তি পান, তখনই শুদ্ধ ইচ্ছা, শুদ্ধ হৃদয় রাখুন। শান্তি এবং ভালবাসার সাথে আপনার হৃদয়কে বিশ্বের কাছে উন্মুক্ত করুন’’ তিনি বলছিলেন। ফিয়াদি জানিয়েছেন, তিনি তাঁর যাত্রা নিয়ে একটি বই লেখার পরিকল্পনা করছেন এবং একটি ফটো গ্যালারী খোলার আশা করছেন।