টিএকে ও এইচপিজি’কে পিকেকে’র সন্ত্রাসবাদী শাখা হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে ব্রিটেন
ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে পিকেকে এর আত্মঘাতি দল যা টিএকে নামে পরিচিত এবং তার বেশ কয়েকটি সশস্ত্র শাখা এইচপিজি কে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে যা জাতিসংঘ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটো মনোনীত। সরকারের ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে টিএকে এবং এইচপিজিকে আনুষ্ঠানিকভাবে পিকেকে’র ‘‘এলিয়াস’’ হিসাবে চিহ্নিত করা হবে, যা ‘‘দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসবাদের সাথে জড়িত বলে বিবেচিত হয়ে আসছে।’’
বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রি প্রীতি প্যাটেল এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, দেশে এবং জার্মানিতে সাম্প্রতিক হামলা হিংসাত্মক চরমপন্থার দ্বারা উদ্ভূত হুমকিকে আলোচনার আওতায় এনেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রে রিসাইক গ্রুপের বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পিকেকে এবং এর সন্ত্রাসবাদ অভিযান এর কারণে শিশু, মহিলা ও প্রবীণসহ ৪০,০০০ এরও বেশি মানুষের মৃত্যুর কারণ ঘটেছে।
উল্লেখ্য, ১৯৭৮ সালে আবদুল্লাহ ওচালান পিকেকে গঠন করেন, যাদের প্রধান দাবি ছিল তুরস্কের মধ্যে স্বাধীন একটি রাষ্ট্র গঠন। ছয় বছর পর সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করে ঐ সংগঠনটি। সেসময় থেকে এখন পর্যন্ত ৪০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং লক্ষ লক্ষ কুর্দি বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ১৯৯০’এর দশকে পিকেকে স্বাধীনতার দাবি বাদ দিয়ে সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক স্বায়ত্বশাসনের দাবিতে আন্দোলন চালায়। তবে সেসময়ও সশস্ত্র সংগ্রাম অব্যাহত রাখে তারা। ২০১৩ সালে গোপন আলোচনার পর যুদ্ধবিরতির সমঝোতায় আসে তারা।
২০১৫ সালের জুলাইয়ে যুদ্ধবিরতি অকার্যকর হয়ে পড়ে যখন সিরিয়ার সীমান্তের কাছে কুর্দি অধ্যূষিত শহর সুরুকে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৩৩ জন তরুণ অ্যাক্টিভিস্ট নিহত হয়। ইসলামিক স্টেটকে ঐ বোমা হামলার জন্য দায়ী মনে করা হয়। সেসময় পিকেকে তুরস্কের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে হামলায় সহায়তার অভিযোগ আনে এবং তুরস্কের সেনাবাহিনী ও পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এর ধারাবাহিকতায় তুরস্কের সরকার পিকেকে এবং আইএস’এর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে, যেটিকে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সমন্বিত যুদ্ধ’ বলে দাবি করা হয়। সেসময় থেকে হাজার হাজার মানুষ – যাদের মধ্যে বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন – দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কে হওয়া সংঘাতে নিহত হয়েছেন। তুরস্ক সরকার দাবি করে ঐ সংগঠনগুলো সন্ত্রাসী কার্যকলাপ পরিচালনা করছে এবং তাদের নির্মূল করা আবশ্যক।