আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহার শুরু
আফগানিস্তানে তালেবানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তির অংশ হিসেবে দেশটি থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। চুক্তি অনুযায়ী, আগামী ১৩৫ দিনে আফগানিস্তানে অবস্থানরত মার্কিন সেনার সংখ্যা ১২ হাজার থেকে ৮ হাজার ৬০০-তে নামিয়ে আনা হবে।
তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র শান্তিচুক্তি করে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি। ওই চুক্তিতে আফগানিস্তানের সরকার অংশ নেয়নি। তবে তালেবানের সঙ্গে আফগান সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর আগে প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি জানিয়েছিলেন, তালেবানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার পূর্বশর্ত হিসেবে তালেবান বন্দিদের মুক্তি দেয়া হবে না। কিন্তু বিভিন্ন প্রতিবেদন বলেছে, সোমবার দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসা গানি চলতি সপ্তাহে অন্তত এক হাজার তালেবান বন্দিকে মুক্তি দিতে পারেন।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে প্লেন হামলা চালানো হয়। এতে প্রায় ৩ হাজার লোক নিহত হয়। এর জন্য আল-কায়েদাকে দায়ী করে মার্কিন প্রশাসন। এরপরেই তাদের নির্মূল করতে আফগানিস্তানে সেনা পাঠায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু বিচিত্র সব ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ আছে ওই ঘটনা নিয়ে। যেমন: মার্কিন সরকার বা ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা এ হামলার পেছনে ছিল, ওই আক্রমণে কোন ইহুদি মারা যান নি, আসলে কোন বিমান টুইন টাওয়ারে বা পেন্টাগনে আঘাত করেনি – এই রকম নানা কিছু। আরেকটি বড় তত্ত্ব হচ্ছে – ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের দুটি টাওয়ার ধসে পড়েছিল বিমানের আঘাতে নয়, বরং ভবনটির ভেতরে বিস্ফোরক বসিয়ে তা উড়িয়ে দেয়া হয়েছিল।
আজ এত বছর পরও এসব তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা-বিতর্ক শেষ হয়নি। টুইন টাওয়ারে হামলার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ছড়ায় প্রথম ষড়যন্ত্র তত্ত্ব। ডেভিড রস্টচেক নামের এক ইন্টারনেট ব্যবহারকারী লিখলেন, “কেউ কি খেয়াল করেছেন যে ওয়ার্ল্ড টেড সেন্টার ভবনটি বিমানের আঘাতে ধ্বংস হয় নি? নাকি শুধু আমিই এটা বুঝেছি?” তার কথা ছিল, ভবন দুটিতে বিমান আঘাত করেছে এবং প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এটা ঠিক কথা – কিন্তু যেভাবে টাওয়ার দুটি ভেঙে পড়েছে তার জন্য এর ভেতরে সঠিক জায়গায় বিস্ফোরক বসাতে হতো। এ কাজটা করতে হলে কাউকে অনেক সময় নিয়ে করতে হবে। প্রশ্ন হলো: প্লেনগুলোর তাহলে কী কাজ ছিল?
পরে অবশ্য তদন্ত করে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, বিমানের আঘাতের পর আগুনে টাওয়ার দুটির কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ওপরের তলাগুলো ভেঙে পড়তে থাকলে তার চাপে পুরো ভবনটিই ভেঙে পড়ে যায়। কিন্তু এখনো কিছু লোক আছেন যারা এ কথা বিশ্বাস করেন না। মার্কিন বাহিনীর হামলায় তৎকালীন তালেবান সরকারের পতন ঘটলেও গত দেড় যুগেও তালেবানকে আফগানিস্তান থেকে নির্মূল করতে চরমভাবে ব্যর্থ হয় আমেরিকা।