করোনা ভাইরাস সম্পর্কে লন্ডনের স্বাস্থ্য সেবাগুলোর পরামর্শ
সম্ভবত: এটা আশ্চর্য হওয়ার কোন বিষয় নয় যে, লন্ডনের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ বারা কেনসিংটন এন্ড চেলসীতে বিপুল সংখ্যক করোনাভাইরাসে সংক্রমণের ঘটনা ধরা পড়েছে। মার্চের ১০ তারিখ পর্যন্ত এ সংখ্যা ছিলো ১৫, এটা নিঃসন্দেহে উদ্বেগের বিষয়। কেনসিংটন এন্ড চেলসী হচ্ছে লন্ডনের সবচেয়ে ক্ষুদ্র বারা, যেখানে ১ লাখ ৫৬ হাজার ১৯৭ জন মানুষের বসবাস। কিন্তু যখন ব্রিটেনের সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল থেকে এর বাসিন্দারা ফিরে আসেন, তখন এটা অনেক বেড়ে যায়। এই বারার প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ১২৮৮৪ জন মানুষের বাস। যেহেতু এটা একটি ঘনবসতিপূর্ন এলাকা, তাই এখানে অন্যান্য স্থানের চেয়ে বেশী দ্রæতগতিতে ভাইরাস ছড়ানোর আশংকা বিদ্যমান। তবে এখনো উদ্বেগ ততোটা দেখা যাচ্ছে না, এটা ভালো লক্ষণ। সম্প্রতি রয়াল বারা অব কেনসিংটন এন্ড চেলসী কাউন্সিল মূলতঃ উদ্বিগ্ন না হওয়ার জন্য তাদের ওয়েবসাইটে একটি বিবৃতি প্রচার করেছে। এতে বলা হয়েছে: সরকার ও এনএইচএস এই ভাইরাস মোকাবেলায় সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
‘পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড’ এ ব্যাপারে কিছু পরামর্শ দিয়েছে, যার মধ্যে উত্তম বার্তাটি হচ্ছে লোকজনকে নিয়মিত হাত ধূতে হবে, ফ্লুর মতো লক্ষণ বিশিষ্ট লোকজনের নিকট থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকতে হবে এবং যদি আপনি কোন আক্রান্ত এলাকা সফর করে আসেন তবে ১১১ নম্বরে ফোন করতে হবে।
‘চেলসী এন্ড ওয়েস্ট মিনিস্টার হসপিটাল ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট’ বলেছে, তাদের হাসপাতালে কোন ড্রপ-ইন বা রেখে যাওয়া কিংবা সেলফ রেফার্ড অর্থাৎ নিজ উদ্যোগে আসা কোন করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হয়নি। তাই যদি আপনার মাঝে করোনাভাইরাস থাকার উৎসর্গ থাকতে পারে বলে মনে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়, তবে আপনার উচিত আপনার জিপি কিংবা কোন হাসপাতালে সাক্ষাতের চেয়ে এনএইচএস এর ১১১ নম্বরে ফোন করা। তাই মূলত: ঠিক দরোজার চৌকাঠ থেকে ফিরে যাবেন না!
পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ডকে লোকজনের প্রতি কিছু মানসম্পন্ন পরামর্শ প্রদানের জন্য ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। তবে এগুলোতে নিজেদের সুরক্ষার জন্য লোকজন কী করবেন এবং কী করবেন না, সে সম্পর্কে বলা হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে:
যা করবেন-
– সাবান ও পানি দিয়ে বার বার হাত ধূতে হবে- অন্তত: ২০ সেকেন্ড এটা করুন।
– যখন কাজে যাবেন কিংবা ঘরে ফিরবেন সর্বদা হাত ধুবেন।
– যদি সাবান ও পানি পাওয়া না যায়, তবে হ্যান্ড সেনিটাইজার জেল ব্যবহার করুন।
– যখন কাশি বা হাঁচি দিবেন তখন, একটি টিস্যু কিংবা আপনার জামার হাতা দিয়ে মুখ ঢাকবেন, হাত ব্যবহার করবেন না।
– ব্যবহৃত টিস্যু সরাসরি একটি বিন বা বাক্সে ফেলুন এবং এরপর হাত ধূয়ে ফেলুন।
– যারা অসুস্থ তাদের কাছে যাতায়াত এড়িয়ে চলুন।
যা করবেন না-
– যদি হাত পরিষ্কার না থাকে, তবে হাত দিয়ে চোখ, নাক বা মুখ স্পর্শ করবেন না।
‘ইমপিরিয়েল কলেজ হেলথ কেয়ার এনএইচএস ট্রাস্ট’ বলেছে, অনুগ্রহপূর্বক স্বাভাবিক ভাবেই হাসপাতালসমূহের নির্ধারিত সাক্ষাতকারে উপস্থিত হোন, যদি না আপনি তা করতে অসুস্থ বোধ করেন। যা-ই হোক, যদি আপনি করোনাভাইরাস আক্রান্ত কারো সংস্পর্শে আসেন কিংবা সম্প্রতি এমন আক্রান্ত এলাকা থেকে প্রত্যাবর্তন করেন এবং অসুস্থ বোধ করেন, যদি কাশি, শ্বাস নিতে কষ্ট হয় কিংবা জ্বর হয়, তবে আপনার বাড়িতে অবস্থান করা এবং অনলাইন করোনাভাইরাস সার্ভিস এর ‘এনএইচএস ১১১’ নম্বর ব্যবহার করা কিংবা ‘এনএইচএস ১১১’ নম্বরে ফোন করা উচিত।