আক্রান্ত ছাড়াল ২ লাখ, প্রাণহানি ৮২৭২
করোনায় আতঙ্কিত বিশ্বের জন্য স্বস্তির খবর
বিশ্বজুড়ে কঠোর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, লকডাউন ও গণ-আইসোলেশন এবং লাশের স্তুপের মাঝে করোনাভাইরাস মহামারির বিরুদ্ধে বৈশ্বিক লড়াইয়ে আশার খবর হলো বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রাণহানির কেন্দ্র ইতালিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আজ বুধবার কিছুটা কমে এসেছে। ইতালির পাশাপাশি সংক্রমণের সংখ্যা কমেছে দক্ষিণ কোরিয়াতেও। দুই সপ্তাহ আগে দক্ষিণ কোরিয়ায় একদিনে সর্বোচ্চ ৯০৯ জন সংক্রমিত হয়েছিল। কিন্তু মঙ্গলবার দেশটিতে মাত্র ৭৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনেও মঙ্গলবার নতুন করে মাত্র ১৩ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। এরমধ্যে ১২ জন বিদেশ থেকে সংক্রমিত অবস্থায় দেশটিতে ফিরেছেন; অন্যজনের সংক্রমণ ঘটেছে স্থানীয়ভাবে।
নয়াদিল্লিতে প্রথম যে ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছিল; তিনিও সফদারজং হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পর সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন। ফেব্রুয়ারি মাসে চীনের উহানে ১৪টি অস্থায়ী বিশেষায়িত হাসপাতাল তৈরি করা হয়। মঙ্গলবার শেষ হাসপাতালটি বন্ধ ঘোষণার পর কর্মীরা বাসায় ফিরেছেন হাসিমুখে। কোনও রোগী না থাকায় করোনার সুরক্ষা সামগ্রী আকাশে ছুড়ে হাসতে হাসতে হাসপাতাল থেকে চলে যান তারা।
অন্য আরেকটি স্বস্তির খবর হলো- বিজ্ঞানীরা প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি দেখছেন। নেদারল্যান্ডসের রটার্ডম এবং ইউট্রেচট ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক দাবি করেছেন, তারা মানবদেহে এক ধরনের অ্যান্টিবডির সন্ধান পেয়েছেন; যা সফলভাবে করোনাভাইরাসের একজন রোগীকে সুস্থ করে তুলতে পারে।
ব্রিটিশ দৈনিক ডেইলি মিরর বলছে, নেদারল্যান্ডসের গবেষকদের এই দাবি সত্যি হলে শিগগিরই করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির পথ সুগম হতে পারে। এদিকে, ভারতের জয়পুরের সাওয়াই ম্যান সিং হাসপাতালের চিকিৎসকরা করোনাভাইরাসের রোগীর শরীরে এইচআইভি, সোয়াইন ফ্লু ও ম্যালেরিয়ার ওষুধ প্রয়োগ করে ইতিবাচক ফল পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের চিকিৎসকরা এমন একটি প্রযুক্তি সামগ্রী তৈরি করেছেন; যা মাত্র আট ঘণ্টার মধ্যে কেউ করোনা সংক্রমিত হয়েছেন কিনা তা জানিয়ে দেবে। এমনকি বাড়িতে বসে নিজেরাই এই পরীক্ষা করতে পারবেন।
জাপানের ওষুধ প্রস্তুতকারক তাকিদা ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি বলেছে, তারা করোনাভাইরাসের নতুন একটি ওষুধ তৈরি করছে। অন্যদিকে কানাডার অ্যন্টারিওর একদল গবেষক করোনার সুস্থ রোগীদের রক্তের প্ল্যাজমা নিয়ে এই ভাইরাসের অনুরূপ একটি ভাইরাস তৈরি করেছেন; যা করোনার পরীক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি সাধন করতে পারে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রথমবারের মতো প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হয় কর্তৃপক্ষ। তখন থেকে নতুন এই ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে প্রাণ গেছে ৮ হাজার ২৭২ জনের। এছাড়া এতে আক্রান্ত হয়েছেন দুই লাখ ৮ হাজার ২০২ এবং সুস্থ হয়েছেন ৮২ হাজার ৯০২ জন।