চীন যেভাবে করোনাভাইরাসের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করলো
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ এবং তার প্রতিরোধ ও প্রতিকারের বিষয়টি পর্যালোচনা করলে চীন সরকারের প্রশংসা করতেই হয়। চীন সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের কারণে দেশটির মধ্যে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করা গেছে। রেডিও তেহরানকে দেয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে একথা বলেছেন চীন আন্তর্জাতিক বেতারের নিউজ এডিটর মোহাম্মদ তৌহিদ।
তিনি বলেন, করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার জন্য চীন অতি দ্রুততম সময়ে দুটি বিশেষায়িত হাসপাতালসহ ১৪টি বড় আকারের অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরি করেছিল- যা সত্যিই বিস্মিত হওয়ার মতো।
চীনের উহান প্রদেশ থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে এবং এখন বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে বিশেষ করে পাশ্চাত্য জগৎ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে যে, প্রাথমিক পর্যায়ে চীন বিষয়টিকে খুব একটা গুরুত্ব দিয়ে দেখে নি যে কারণে এত বড় আকারে ছড়িয়ে পড়েছে।এ প্রসঙ্গে মোহাম্মদ তৌহিদ বলেন, আমরা দেখেছি যে চীন সরকার অর্থাৎ কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে উহান প্রশাসনের উপর বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কারণ উহান প্রশাসন প্রথম দিকে চেয়েছিল এই পরিস্থিতিকে নিজেদের মতো করে নিয়ন্ত্রণ করার। কিন্তু পরবর্তীতে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করার বিষয়টি তাদের আওতার বাইরে চলে যায়। তখন কেন্দ্রীয় সরকার হস্তক্ষেপ করে। আর আমি দেখেছি যে কেন্দ্রীয় চীন সরকার উহানের করোনা পরিস্থিতির উপর হস্তক্ষেপ করা মাত্রই দেশজুড়ে প্রাথমিকভাবে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। উহান থেকে করোনাভাইরাস যখন গোটা হুবেই প্রদেশে ছড়িয়ে যায় তখনই কেন্দ্রীয় চীন সরকার এটির দেখভাল শুরু করে। তারপরই গোটা দেশজুড়ে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরোপ করা হয় যাতে এর সংক্রমণ শুধুমাত্র হুবেই প্রদেশের মধ্যেই সীমিত রাখা যায়। কিন্তু তারপর আমরা দেখেছি যে আশপাশের কয়েকটি প্রদেশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে। তারপর সরকার আরও কঠোর হয় যাতে অন্তত চীনের মধ্যেই এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। যাতে করে চীনের বাইরে কম ছড়ায়।
তবে প্রতিটি পদক্ষেপের সমালোচনা এবং আলোচনা হতেই পারে। একেক জন এক এক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে যার যার অবস্থান থেকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমি যখন সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিষয়টি বিবেচনা করি এবং ভাইরাস সংক্রমণ এবং তার প্রতিরোধ ও প্রতিকারের বিষয়টি পর্যালোচনা করি তখন আমি চীন সরকারের প্রশংসা করতে বাধ্য হই। কারণ বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা বা ‘হু’ চীনের এইসব পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে। এখানে আমরা জানি যে চীনের পক্ষে পক্ষপাতিত্ব করার কোনো সুযোগ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেই। WHO বলেছে চীন যদি নানারকম পদক্ষেপ না নিত তাহলে সারাবিশ্বে এই করোনাভাইরাস আরো ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ত। অনেক পরে এসে যখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাকে বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে ঘোষণা করল হয়তোবা আরও অনেক আগে এই ‘বৈশ্বিক মহামারি’ ঘোষণা করতে হতো।