‘মা, আমি কি মারা যাচ্ছি?’

করোনাভাইরাস কোনো জোক নয়, নিজে নিরাপদ থাকতে এবং অন্যকে নিরাপদ রাখতে ঘরে থাকুন

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ছোট্ট আলফি। বয়স মাত্র ৫ বছর। হাসপাতালের বেডে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। সন্তানের এই কষ্ট দুর করতে না পেরে ঢুকরে ঢুকরে কাঁদছেন অসহায় মা। অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে ছোট্ট শিশুটি বলে ফেলে, আমি কি মারা যাচ্ছি, মা? সন্তানের এ প্রশ্নে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা লরেন ফুলব্রুক। দুই সন্তান নিয়ে ইংল্যান্ডের ওরচেস্টারশায়ারে থাকেন ৩০ বছর বয়সী এই নারী। আলফির ছোট একটি বোন আছে, নাম এসমি।

আলফি কীভাবে আক্রান্ত হলো? এ ব্যাপারে সামাজিক মাধ্যমে বিস্তারিত বলেছেন লরেন। ছোট্ট শিশুদের সাবধানে রাখত অভিভাবকদের অনুরোধ করে বলেন, ‘করোনাভাইরাস কোনো জোক নয়। নিজে নিরাপদ থাকতে এবং অন্যকে নিরাপদ রাখতে ঘরে থাকুন, ঘটনা গত সপ্তাহের। সাতার শিখতে গিয়েছিল আলফি। এরপর থেকেই জ্বর, কাশি। দু’দিন পর তার অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যায়। জ্বর হঠাত খুব বেড়ে যায়। তাই ওকে আর স্কুলে যেতে দেইনি। কিন্তু আলফি বার বারই বলছিল, আমি ঠিক আছি মা। ওর অবস্থা দেখে আমার তা মনে হচ্ছিল না। পরদিন বৃহস্পতিবার ওর জ্বর আরো বেড়ে গেলো। নড়াচড়া করতে পারছিল না। কিছু খেতে পারছিল না, এমনকি পানিও না।’
‘আমি খুব ভয় পেয়ে গেলাম। জরুরি সেবা ১১১ এ ফোন দিলাম। তারা অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়ে দিলো। সাথে এ কথাও জানিয়ে দিলো, আলফিকে হাসপাতালে নেয়া যাবে না। কারণ সেখানে অনেক ভিড়। তারা আলফির জ্বর মেপে দিয়ে বলল, যদি শরীরেরে তাপমাত্রা আরো বাড়ে, ৯৯৯ এ কল দিতে। কিন্তু দুপুরের দিকে ওর অবস্থা আরো খারাপ হয়ে গেলো। বমি, চোখ ব্যাথাসহ নানা সমস্যা দেখা দিলো। তখন দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হলো ওকে।’ ‘সেখানে যেতেই আমাদের মাস্ক পড়তে দেয়া হলো। আইসোলেশনে নেয়া হলো আলফিকে। কোভিড-১৯ এর টেস্ট করা হলো। ফলাফল, পজেটিভ।’
হাসপাতালে গিয়ে তার মনে হলো ভুতুরে কোনো শহরে এসে পড়েছেন তিনি। সবাই মাস্কসহ ভিন্ন ধরণের পোশাক পড়ে আছেন। পুরো শরীর ঢাকা। তারা দ্রুত আলফির জ্বর কমানোর চেষ্টা করলেন। ওষুধ দিলেন। ধীরে ধীরে ওর জ্বর কিছুটা কমলো।
লরেন বলেন, ‘এর পরে আইসোলেশনে থাকার শর্তে আমাদের ছেড়ে দিলেন। শুক্রবার আমরা বাড়ি ফিরলাম। এখন সে কিছুটা সুস্থ। ঘুম থেকে উঠে প্রথমবারের মত কিছু খেতে চেয়েছে। তবে তার জ্বর এখনো আছে।’
সবশেষে লরেন বলেন, ‘কারো সহানুভূতি পাওয়ার জন্য এই কথাগুলো বলিনি আমি। সতর্ক করার জন্য বলেছি। আমার ছেলে যখন যন্ত্রনায় কাতরাতে কাতরাতে বলছিল, মা আমি কি মারা যাচ্ছি? কষ্টে আমার বুকটা ভেঙে যাচ্ছিলো।’
লরেনের এই পোস্ট কম সময়ের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায়। পরে তিনি আরো একটি পোস্ট দেন, যেখানে সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button