ইউরোপের অভিবাসন আইন পরিবর্তনের দাবি
অভিবাসন প্রত্যাশী আফ্রিকার শত শত মানুষের মৃত্যুর শোকে মুহ্যমান ইতালি। দারিদ্র্যের কষাঘাত থেকে মুক্তি পেতে নৌযানে করে ইউরোপে এসেছিলেন তারা। ইতালির দ্বীপ লাম্পেডুসায় ভূমধ্যসাগরে তাদের মৃত্যু হয়। এখনও দু’শতাধিক মানুষ নিখোঁজ রয়েছে।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতি বছর গ্রীষ্মে কাজের খোঁজে হাজার হাজার আফ্রিকান নাগরিক উত্তাল সাগর পাড়ি দিয়ে ইতালির দক্ষিণাঞ্চলে যান।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী এ বছর অভিবাসন প্রত্যাশী অন্তত ২৫ হাজার মানুষ ইতালিতে এসেছেন। গত ২০ বছরে ভাগ্য অন্বেষণের জন্য মাছ ধরা নৌকায় চড়ে ইতালিতে ঢুকতে গিয়ে ১৭ থেকে ২০ হাজার মানুষ মারা গেছেন। এভাবে মৃত্যু সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
এদিকে এ ঘটনার পর ইউরোপের অভিবাসন আইনের সমালোচনা করে আইন পরিবর্তনের দাবি করেছেন অনেকে। জাতিসংঘ মহাসচিব বলেছেন, তিনি আশা করেন অচিরেই আইনে পরিবর্তন আসবে, পরিবর্তিত আইনে অভিবাসনের অধিকারের প্রতি আরও সম্মান দেখানো হবে এবং আরও বেশি মানুষ ভাগ্য অন্বেষণের জন্য ইউরোপে আসতে পারবেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক কমিশনার সেসিলিয়া মামস্ট্রোয়েম এমন পরিবর্তনের জন্য ইউরোপ অঞ্চলের দেশগুলোকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য মনিকা ফ্রাসোনি মনে করেন, ‘ইতালি অভিবাসীদের চাপ সামাল দেয়ার জন্য প্রস্তুত নয়। তাই ইইউকে অবশ্যই দায়িত্ব নিতে হবে।’
উল্লেখ্য, লাম্পেডুসা দ্বীপের কাছে মাছ ধরা ওই নৌযানে পানি উঠতে শুরু করে। আতঙ্কিত যাত্রীরা কোস্টগার্ডদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য একটি কম্বলে আগুন জ্বালালে পুরো নৌকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। মর্মান্তিক এ ঘটনায় অন্তত ৩০০ মানুষ মারা গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ১৬৫ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করলেও তার আগেই লাশ হয়ে যান ১১১ জন মানুষ। তবে আরও অনেক লাশ ভূমধ্যসাগরে ভেসে যেতে দেখেছেন বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবর অনুযায়ী, সোমালিয়া এবং ইরিত্রিয়ার ৪০০ থেকে ৫০০ অভিবাসন প্রত্যাশী মানুষ বৃহস্পতিবার লিবিয়ার মিসরাতা থেকে পাড়ি জমিয়েছিলেন ইউরোপের উদ্দেশে।