যাদের নীরব কান্নায় কাঁদছে আসমান
বৈধকাগজপত্রের অভাবে করোনা মহামারীতে কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখী বিলেতের ইমিগ্র্যান্টরা
তাদের সহযোগীতায় সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান
অজ্ঞাত মহামারী করোনা ভাইরাসের আঘাতে আজ সারা বিশ্ব যেন জীবন্ত মৃত্যুপুরী। মানুষ বেঁচে থাকার লড়াইয়ে নিজেকে বাজি রাখছে নিরন্তন। কেউ জানেনা এর শেষ কোথায়? বেচে থাকার জন্য লড়াইয়ে থাকা মানুষগুলো জানেন না আগামীকাল কি ঘটতে যাচ্ছে।
ব্রিটেনে বৈধকাগজপত্রের অভাবে থাকা একটি বিশাল জনগোষ্ঠী আজ বেঁচে থাকার সংগ্রামে লিপ্তl তাদের নীরব কান্নায় নিভৃতে সব যেন আজ আঁধারে মলিন l যাদের নীরব কান্নায় কাঁদছে আসমান! তাদের আজ কেউ নেই!
এ যেন এক কঠোর এবং কঠিন যুদ্ধ কালীন সময়ে কেউ কারো পাশে দাঁড়ানোর সময় নেই! করোনা মহামারীতে কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখী বিলেতের ইমিগ্র্যান্ট/অভিবাসী মানুষ তাদের সহযোগীতায় সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হচ্ছে মানবতাবাদীদের পক্ষ থেকে।
অন্যান্য দেশের মতো এই মরণব্যাধী ভাইরাস থেকে জনগণকে রক্ষা করতে বৃটিশ সরকার ৩ সপ্তাহের জন্য সবকিছু বন্ধ ঘোষণা করেছে। আর এই জরুরী প্রজ্ঞাপণ জারীর পর বিলেতে বসবাসরত অনেক ব্যক্তি এবং পরিবার যাদের ভিসা সংক্রান্ত বিভিন্ন্ জটিলতা রয়েছে; তারা আজ চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন। যার মধ্যে একটি বিশেষ অংশ, যাদের ভিসার আবেদন কিংবা এসাইলাম আবেদন বছরের পর বছর হোম অফিস ঝুলিয়ে রেখেছে। এরফলে এইসব ব্যক্তি কিংবা পরিবার এবং তাদের সন্তান, স্থানীয় সরকারের পক্ষ থেকে কোন ধরণের আর্থিক কিংবা সামাজিক সুবিধা পাচ্ছেন না।
অন্যদিকে বৃটিশ নাগরিক এবং ভিসাপ্রাপ্ত লোকদের সাহায্যের জন্য সরকার বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ইনকাম সাপোট স্কিম, বাসা ভাড়া সহ বিভিন্ন্ পদক্ষেপ। কিন্তু ইমিগ্র্যান্ট যাদের ভিসা জটিলতার জন্য কোন ধরণের কাজের অনুমতি নেই, এসব লোকদের জন্য সরকার কিংবা চ্যারিটির পক্ষ থেকে কোন কার্যক্রম এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি।
বিলেতে অনেক ইমিগ্র্যান্ট ব্যক্তি ও পরিবার হোম অফিসের গ্যাড়াকলে পড়ে বছরের পর বছর আছেন যাদের কাজের অনুমতি নেই। বন্ধুদের আর্থিক সাহায্যের মা্ধ্যমে তারা প্রতিদিনের জীবনটাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। দৈনন্দিন জীবনের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসটুকু জোগাড় করতে তাদের অনেক কাঠখড় পোড়াতে হচ্ছে। এরমধ্যে অনেকেরেই স্থায়ীভাবে বসবাসের জায়গা নেই। আজ এখানে তো কাল সেখানে। আর যাদের ছেলেমেয়ে রয়েছে, তাদের দুঃখের তো আর শেষ নেই। কারণ তারা হয়তো কোনো পরিবারের সাথে একটি বাসায় একটি ছোট কক্ষে গাদাগাদি করে থাকছেন কারণ তাদের বাড়ি ভাড়া দেয়ার ক্ষমতাটুকু নেই। আবার কিছু সংখ্যক লোকের সীমিত সময়ের জন্য কাজের অনুমতি থাকলেও এই আয় দিয়ে পরিবারের সব খরচ, বাসা ভাড়া ইত্যাদি চালিয়ে নেয়া এখন অসম্ভব হয়ে পড়েছে। কারণ এখন সব কর্মস্থল বন্ধ ঘোষণা করায়, অন্তত বাসা ভাড়ার টাকা আর যাদের ছোট বাচ্চা রয়েছে তাদের খাবারের অর্থ কোথায় থেকে যোগাড় করবেন এই নিয়ে মা -বাবারা দুশ্চিন্তায় আছেন। কারণ সরকার কিংবা স্থানীয় কাউন্সিল থেকে তাদেরকে সাহায্যের কোনো ঘোষণা দেয়া হয়নি।
বর্তমানে এই সংক্রামক রোগের সময়ে যেখানে সবাইকে কোয়ারাইন্টান অর্থাৎ বদ্ধ ঘরে থাকার কিংবা বেশি লোকের সমাগম থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছে, সেই সময় এসব লোকেরা নিরুপায় হয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। বর্তমান সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে এটি খুবই বিপদজ্জনক। এমনকি তাদের অনেকেই স্থানীয় হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত; শুধু মাত্র বৈধ কাগজপত্রের অভাবে। এই স্পর্শকাতর বিষয়টি নিয়ে ব্রিটেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
দ্যা গার্ডিয়ানের সূত্রমতে, গ্রেটার লন্ডন অথরিটি তাদের এক রিপোর্টে বলেছে, ব্রিটেনে প্রায় ৩৩২,০০০ শিশু ও তরুণ (১৮-২৫ বছর) রয়েছে যাদের এখন পযন্ত কোনো বৈধ কাগজপত্র হয়নি যার মধ্যে ১৩৩,০০০ শুধুমাত্র লন্ডন শহরে অস্থায়ী আর অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করছে। এদের সমাজে কোনো স্থায়ীভাবে থাকার কোনো সুযোগ নেই। এরা বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে সঠিক চিকিৎসা আর পুষ্টিকর খাবারের অভাবে।
ইন্ডিপেন্ডেট নিউজে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একজন এসাইলাম আবেদনকারী বলেন, তিনি ওয়াকফিল্ডের একটি অস্থায়ী হোস্টেলে প্রায় ৩০০ লোকের সাথে থাকতেন যেখানে প্রতিদিনের খাবারের সময় একটি রুমে প্রায় ৬০ জন একসাথে বসে খেতে হয়। আমাকে একটি রুমে ২ জনের সাথে ঘুমাতে হয় যেখানে আমাদের দুরত্ব ১ মিটারের চেয়ে কম। কিন্তু এই মহামারী করোনা ভাইরাসের খবর শুনে আমি আমার জীবন নিয়ে ভীত হয়ে পড়ি কারণ এনএইচএস সবাইকে ২ মিটার দুরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করার জন্য উপদেশ দিয়েছে। আর এই হোস্টেলে করোনা ছড়ানোর আশংকা সবচেয়ে বেশি। যদি এটি ছড়িয়ে পড়ে তাহলে এক ভয়াবহ অবস্থায় রূপ নিবে। কিন্তু আমি এই বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না এই ভয়ে যদি এই অযুহাতে আমার এসাইলেম আবেদন নাকচ করে দেয়া হয়। করোনা সংক্রমণের ভয়ে গত বুধবার লকডাউনের পর তিনি এই সেন্টার ত্যাগ করে এক বন্ধুর বাসায় অস্থায়ীভাবে উঠেছেন।
বিরোধী দল লেবার পার্টির শ্যাডো হোম সেক্রেটারী ডায়ান এবোট বলেন, এই বিষয়টি অগ্রহণযোগ্য এবং অমানবিক। এই মহমারী করোনার প্রতিরোধে সবাইকে নিয়ম মেনে চলতে হবে বিশেষভাবে কর্তৃপক্ষকে সবার সুস্বাস্থ্য এবং জীবন রক্ষার্থে সব ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে হবে।
ইবকোন অলোয়া এবং এন্ড্রু বাইন যারা ব্রিটেনে বৈধভাবে বসবাস করলেও উইন্ডরাস স্ক্যান্ডাল অর্থাৎ হোম অফিসের ভুলের কারণে আজ তারা বৃটিশ নাগরিকত্ব হারিয়ে কখনোও রাস্তা, পার্ক কিংবা কারো সাথে থাকছেন। তাদের মতো অনেকে আজ বিলেতের মাটিতে দুঃসময় আর করোনায় জীবন হারানোর ভয়ে আছেন। যদিও লকডাউন ঘোষণার পর সরকারের পক্ষ থেকে গৃহহীণ লোকদের হোটেল এবং রেস্ট হাউসগুলোতে থাকার ব্যবস্থা করা হয়ে কিন্তু এরপর অনেক গৃহহীন এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
তবে সম্প্রতি হোম অফিস মন্ত্রী ক্রিস ফিলিপ বলেছেন, যেসব এসাইলাম আবেদনকারী ভিসা পেয়েছেন অথবা যাদের আবেদন প্রত্যাখান হয়েছে কিন্তু এখনোও সরকারী ঘরগুলোতে অস্থায়ীভাবে আছেন, তাদেরকে আগামী তিন মাস করোনা লকডাউনের সময় যেন এখান থেকে বের করে না দেয়া হয়।
বিলেতে অবস্থিত ব্রিটিশ বাংলাদেশী চ্যারিটিগুলো বিগত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশের দারিদ্রপীড়িত জনগণের জীবনের মান উন্নয়নে কাজ করে আসছে। এদেশে অবস্থিত বাঙালীরা খুবই দানশীল যারা দানের অধিকাংশ অর্থ এসব সামাজিক সংস্থার উন্নয়নমূলক কাজে দান করেন। এছাড়া বাঙালী কমিউনিটিতে অনেক বিত্তবান এবং ব্যবসায়ী রয়েছেন যারা দেশ-বিদেশে অনেক সেবামূলক কাজে অর্থ ব্যয় করেন।
তবে এদের মধ্যে অনেক এসাইলাম আবেদনকারীর সরকারী ঘরগুলোতে থাকার সুযোগ নেই কারণ এই সুবিধা খুবই সীমিত। ৩০ বছর বয়স্ক ইরিত্রিয়া থেকে আগত মোহাম্মদ বলেন, আমার এসাইলাম আবেদন প্রত্যাখান হয়েছে। আমার থাকার কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা নেই। এই করোনা মহামারীতে আমি অনেক জায়গায় যাচ্ছি শুধুমাত্র একমুঠো খাবারের জন্য। কিন্তু আমি প্রায়ই অভুক্ত থাকি তাই করোনায় নয়, না খেয়ে মারা যা্ওয়ার ভয়ে আছি।
বর্তমানে ব্রিটেনে করোনা লকডাউন ঘোষণার পর কয়েক হাজার বাঙালি ইমিগ্র্যান্ট বিশেষত এসাইলাম আবেদনকারী এবং যাদের বৈধ কাগজপত্র কিংবা কাজের অনুমতি নেই তারা দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন। পূর্বে তাদের বন্ধু এবং পরিচিতজনরা সাহায্য করলেও এখন কাজ-কর্ম সবকিছু অচল হয়ে পড়ার কারণে তারা এটিকে চালিয়ে নিতে পারছেন না। আর ঐসব ভুক্তভোগী ব্যক্তি এবং পরিবার বিভিন্ন্ সামাজিক হেনস্থার ভয়ে অপরিচিতজনের কাছে সাহায্য চাইতে সংকোচ বোধ করছেন। পাশাপাশি সরকার এবং স্থানীয় চ্যারিটির পক্ষ থেকে এই বিশেষ লোকদের সাহায্যের কোনো পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত চোখে পড়েনি। কিন্তু তারা আমাদের মতোই মানুষ যাদের পরিবার এবং সন্তান রয়েছে। হয়তো কয়েক মাসের বাচ্চার দুধ আর অন্যান্য খাবারের নূন্যতম অর্থটুকু সেই অসহায় মা-বাবার কাছে নেই। যারা একা থাকেন তারা বৈধ কাগজপত্রের অভাবে স্থায়ীভাবে বাসায় থাকতে পারছেন না। জায়গার অভাব আর ভাইরাসের ভয়ে কারো বাসায় গিয়ে উঠতে পারছেন না। এসব ব্যক্তিরা কোনো মানবিক সাহায্য অথবা আবিচারের জন্য বিচার চাইতে পারেন না যদি কেউ দুর্বলতার সুযোগ নেয় কিংবা পুলিশ, ভিসা অফিসের হয়রানীর শিকার হতে হয়।
ইমিগ্রেশন সলিসটিরগন করোনা লকডাউন চলাকলীন সময়ে এসব ভূক্তভোগী ব্যক্তি এবং পরিবারকে নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, আজ তাদের জন্য আমরা কিছুই করতে পারছি না; শুধুমাত্র প্রার্থনা করা ছাড়া। তাদের বেশিভাগই আইনগত কারণে কাজ করতে পারছেন না: যার মধ্যে কিছু সংখ্যক লোক আর্থিক সাহায্য পান যা দিয়ে একজন মানুষের পক্ষে বেচেঁ থাকা এই শহরে খুবই কঠিন। তবে মানবিক কারণে সরকারের পক্ষ থেকে এদেরকে সাহায্য করা প্রয়োজন। এই সহায়সম্বলহীন মানুষদের বিলেত ছাড়া আর কোনো নিরাপদ আশ্রয়স্থল নেই।
তবে করোনা মহামারী প্রতিরোধে লকডাউনের সময়কাল হয়তো আরো বৃদ্ধি পেতে পারে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। আর এতে যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা এসব ভুক্তভোগীদের। অজানা শংকা আর অনেক প্রশ্ন তাদের মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। কোথায় যাবেন তারা? না খেয়ে কি মরতে হবে? সন্তান নিয়ে কি রাস্তায় থাকতে হবে? আর যদি করোনায় আক্রান্ত হই তাহলে তো বিনা চিকিৎসাতে মরতে হবে কারণ শুধুমাত্র বৈধকাগজ/ভিসা নেই এই অজুহাতে বিলেতের মাটিতে একজন সাধারণ মানুষের মতো বাচাঁর অধিকারটুকু নেই…..।
এদেশে ব্রিটিশ বাংলাদেশীরা এই করোনাভাইরাসের দু:সময়ে ব্যাক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও কেয়ার সেন্টারে কর্মরত ডাক্তার এবং নার্সদের ফ্রি খবার ও অন্যান্য সুযোগসুবিধা দিয়ে যাচ্ছেন যা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। কিন্তু এসব ভুক্তভূগি বাংলাশেীদের এই দু:সময়ে কোন ধরনের সাহায্য চাওয়ার বা পাওয়ার কোন জায়গা নেই। আজ সময় এসেছে বিলেতে লকডাউনের প্রভাবে বৈধকাগজপত্রের অভাবে করোনা মহামারীতে কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখী বিপর্যস্ত এসব ভুক্তভোগী বাঙালীদের পাশে দাড়ানোর।
বিলেতে অবস্থিত ব্রিটিশ বাংলাদেশী চ্যারিটিগুলো বিগত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশের দারিদ্রপীড়িত জনগণের জীবনের মান উন্নয়নে কাজ করে আসছে। এদেশে অবস্থিত বাঙালীরা খুবই দানশীল যারা দানের অধিকাংশ অর্থ এসব সামাজিক সংস্থার উন্নয়নমূলক কাজে দান করেন। এছাড়া বাঙালী কমিউনিটিতে অনেক বিত্তবান এবং ব্যবসায়ী রয়েছেন যারা দেশ-বিদেশে অনেক সেবামূলক কাজে অর্থ ব্যয় করেন। এদেশে ব্রিটিশ বাংলাদেশীরা এই করোনাভাইরাসের দু:সময়ে ব্যাক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও কেয়ার সেন্টারে কর্মরত ডাক্তার এবং নার্সদের ফ্রি খবার ও অন্যান্য সুযোগসুবিধা দিয়ে যাচ্ছেন যা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। কিন্তু এসব ভুক্তভূগি বাংলাশেীদের এই দু:সময়ে কোন ধরনের সাহায্য চাওয়ার বা পাওয়ার কোন জায়গা নেই। আজ সময় এসেছে বিলেতে লকডাউনের প্রভাবে বৈধকাগজপত্রের অভাবে করোনা মহামারীতে কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখী বিপর্যস্ত এসব ভুক্তভোগী বাঙালীদের পাশে দাড়ানোর।
আসুন আমরা এসব প্রশ্নের উত্তর খুজঁতে নয় কিংবা সাহায্যের নামে সোস্যাল মিডিয়াতে ছবি আর ভাইরাল হ্ওয়ার জন্য নয়; বরং শুধুমাত্র সৎ আর সঠিক উদ্দেশ্য নিয়ে প্রভুকে খুশি করার জন্য এসব ভুক্তভোগী পরিবার আর লোকদের পাশে ভালোবাসা আর সাহায্যের হাতটুকু বাড়িয়ে দেই।
তাদের কান্নাটুকু শুধু প্রভুই শুনেন কারণ তারা কাউকে বলতে পারে না কিংবা শব্দ করে কাঁদতে পারে না শুধুমাত্র লজ্জা আর ভয়ে। আপনাদের মনে আছে সেই তিন বছরের এক যুদ্ধাহত সিরিয়ান শিশু মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার ঠিক আগ মুহূর্তে বলেছিল, ‘আমি আল্লাহকে সব বলে দিবো’।
অথবা শেষ বিচারের দিন যখন প্রভু আমাদের জিজ্ঞেস করবেন, সেইদিন আমি ক্ষুদার্থ ছিলাম, তখন তুমি কোথায় ছিলে? এই আমিটা হলো সেই ভুক্তভোগী মানুষেরা যারা আজ নিরবে কষ্ট সহ্য করে যাচ্ছে।
একদিন যদি সেই শিশু প্রভুকে সব বলে দেয় কিংবা প্রভু আমাদের প্রশ্ন করেন; এজন্য কি আমরা প্রস্তুত আছি?
এই মহামারী করোনা হয়তো আমাদের জন্য একটি পরীক্ষা স্বরুপ এসেছে যে, আমরা মানুষ হিসেবে এই বিপদের ক্ষণে অন্য মানুষের জন্য কি করছি?
মনে আছে ভূপেন হাজারীকার সেই বিখ্যাত গানটি…
মানুষ মানুষের জন্য
জীবন জীবনের জন্যে
একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না ও বন্ধু।