করোনাভাইরাস: ব্রিটেনের দুই তৃতীয়াংশ মানুষ ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের মেয়াদ বৃদ্ধির পক্ষে

যুক্তরাজ্যের দুই তৃতীয়াংশ মানুষ করোনাভাইরাস মহামারির বিষয়ে অধিক মনোযোগ দিতে ব্রেক্সিট ট্রানজিশনের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানাতে আগ্রহী। এক সাম্প্রতিক জরীপে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। ২ হাজার বয়স্ক লোকের ওপর পরিচালিত এক জরীপে সকল বয়স, সামাজিক স্তরের লোকজন ও ইউকে রিজিয়নসমূহ এ ব্যাপারে সময় বৃদ্ধির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। এ ক্ষেত্রে রক্ষণশীল ও ব্রেক্সিট পার্টি ভোটারদের সংখ্যা অপেক্ষাকৃতভাবে বেশী।
এই ফোকালডাটা জরীপটি পরিচালিত হয় বিভিন্ন দলের ক্যাম্পেইন গ্রুপসমূহের সমন্বয়ে, গঠিত ‘বেস্ট ফর ব্রিটেন এবং হোপ নট হেইট’। স্কটিশ এবং ওয়েলশ সরকারগুলোসহ অসংখ্য সংস্হা ও প্রেশার গ্রুপগুলো ব্রেক্সিট ট্রানজিশন পিরিয়ড বৃদ্ধির জন্য আহবান জানিয়েছে।

উত্তরদাতাদের দুই তৃতীয়াংশ (শতকরা ৬৪ ভাগ) বলেন যে, তার এই বিবৃতির সাথে একমত যাতে বলা হয়েছে: ‘সরকারের উচিত করোনাভাইরাসের প্রতি যথাযথ মনোযোগ প্রদানের লক্ষ্যে ট্রানজিশনের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য অনুরোধ জানানো’।
তবে ঠিক এক তৃতীয়াংশ (৩৬ শতাংশ ) এই বিবৃতির সাথে একমত যে, ‘ব্রেক্সিট ট্রানজিশনের মেয়াদ অবশ্যই ৩১ ডিসেম্বরে শেষ হতে হবে,এক্ষেত্রে কোন চুক্তি হোক বা না হোক।’
‘বেস্ট ফর ব্রিটেন’ বলেছে উত্তরদাতারা (৮৪ শতাংশ) গত নির্বাচনে লেবার পার্টিকে এবং (৮৩ শতাংশ ) লিবারেল ডেমো-ক্র্যাটদের সমর্থন করে বলে ধারণা করা হয়। কিন্তু প্রথম বিবৃতিটি ঐ সব লোকের দ্বারা সমর্থিত যাদের প্রায় অর্ধেক (৪৪ শতাংশ ) রক্ষণশীল দলকে এবং এক পঞ্চমাংশ (১৯ শতাংশ) ব্রেক্সিট পার্টিকে ভোট দিয়েছিলো।
ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের মেয়াদ বৃদ্ধির সমর্থকদের শতকরা ৫০ ভাগেরও বেশী সকল শ্রেণীর লোক যেখানে ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী লোকজন সর্বাধিক সমর্থক (৭৮শতাংশ) এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সীরা সবচেয়ে কম সমর্থক (যদিও এখনো ৫২ শতাংশ)—এর মানে হচ্ছে এই যে,সকল প্রজন্মের লোকই ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের মেয়াদ বৃদ্ধির পক্ষে।
এসএনপি ব্রেক্সিট আলোচনায় ‘হিট পজ ‘ অর্থ্যাৎ বিরতি প্রদান এবং যখন কর্তৃপক্ষগুলো ভাইরাস মহামারীর মোকাবেলা নিয়ে ব্যস্ত তখন বাস্তবায়নের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছে।
দলটির ব্রেক্সিট মুখপাত্র এমপি ফিলিপ্পা হুইটফোর্ড বলেন, এখন ‘ট্রানজিশন ডেডলাইন’ অর্থ্যাৎ বাস্তবায়নের শেষ সময়সীমার দিকে দ্রুত এগিয়ে যাওয়া হবে দায়িত্বহীন এবং ‘অর্থনৈতিক ও সামাজিক আত্মপীড়নকারি কর্মকান্ড।
যুক্তরাজ্যের ৬৫ শতাংশ লোক, যাদের মধ্যে ৫৫ শতাংশ গত নির্বাচনে রক্ষণশীল দলকে ভোট দেন, চান যে, ব্রিটিশ সরকার ইডব্লিউআরএস—এর সদস্য হোক। ঝুঁকি মূল্যায়ন সংক্রান্ত তথ্য এবং অধিকতর দক্ষতায়, যথাসময়ে ও সমন্বিতভাবে গণস্বাস্হ্য কর্মকান্ড ব্যবস্হাপনা ঝুঁকির তথ্য বিনিময়ের লক্ষ্যে ১৯৯৮ সালে এটা প্রতিষ্ঠিত হয়। এনএইচএস কনসিডারেশন ইডব্লিউ আরএস-এর সদস্যপদকে একটি অগ্রাধিকার হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
তাদের যুক্তি হচ্ছে যদি যুক্তরাজ্য প্রবেশে ব্যর্থ হয় তবে বৈশ্বিক মহামারির বিস্তার মোকাবেলা যেমন – করোনাভাইরাস অধিকতর জটিল হতে পারে।
ভোট সম্পর্কে। ‘বেস্ট ফর ব্রিটেন’ -এর প্রধান নির্বাহী নাওমি স্মিথ বলেন, যখন যু্দ্ধের ন্যায় জরুরী অবস্হা মোকাবেলা করতে হচ্ছে তখন বছরের শেষে ইইউ -এর সাথে আমাদের আলোচনায় জড়িত থাকার বিষয়টি মোটেই যৌক্তিক নয়। এটা কখনো কাম্য হতে পারে না।
অধিকাংশ মানুষ চায় সরকার এমন কিছু করুক যাতে মানুষের জীবন রক্ষা পায় যএবং যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব স্বাভাবিক অবস্হা ফিরে আসুক। এ মুহুর্তে দেশ দুটি ঝড় মোকাবেলা করার মতো অবস্হায় নেই।
হোপ নট হেইট -এর প্রধান নির্বাহী নির লোলিস বলেন, এই জরুরী স্বাস্হ্য সংকটের সময় ‘আর্লি ওয়ার্নিং এন্ড রেসপন্স সিস্টেম -এর মতো ইইউ স্কীমসমূহ এবং ভেন্টিলেশন সংগ্রহ কর্মসূচী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। তিনি আরো বলেন, সরকারকে অবশ্যই রাজনীতিকে একপাশে সরিয়ে রাখতে হবে এবং জরুরীভাবে এসব স্কীম বা পরিকল্পনাসমূহে অংশ গ্রহণের চেষ্টা করতে হবে।
অপরদিকে সরকার বলেছে ,তারা আলোচনার ব্যাপারে সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এটা অব্যাহত আছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button