টাওয়ার হ্যামলেটস ও সিলেটের মধ্যে কার্যকর টুইনিং লিংক প্রতিষ্ঠার আহবান
লন্ডন সফররত সিলেট প্রেসক্লাব প্রেসিডেন্ট ও দৈনিক কালের কন্ঠের সিলেট ব্যুরো প্রধান আহমেদ নুর লন্ডন এবং সফররত সিলেটের ডাকের চীফ ফটোগ্রাফার সাংবাদিক আবদুল বাতিন ফয়সল গত মঙ্গলবার টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র লুতফুর রহমানের আমন্ত্রণে মেয়র কার্যালয় পরিদর্শনে যান এবং সেখানে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সফররত দুই সাংবাদিক টাউন হলের মেয়র কার্যালয়ে পৌছলে নির্বাহী মেয়র লুতফুর রহমান ও তার কেবিনেটের সদস্যরা তাদেরকে স্বাগত জানান।
মতবিনিময়কালে সাংবাদিক আহমদ নূর নির্বাহী মেয়রের কর্ম পরিধি সম্পর্কে অবগত হন এবং বহির্বিশ্বে এই প্রথম কোন বাংলাদেশী একটি কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়রের আসনে সমাসিন হওয়ায় গর্ববোধ করেন। তিনি কমিউনিটির উন্নয়নে গৃহিত মেয়র লুতফুর রহমানের বিভিন্ন যুগান্তকারী পদক্ষেপের ভূূয়শী প্রশংসা করেন। বিশেষ করে সেন্ট্রাল গভনমেন্টের ব্যাপক ফান্টিং কার্টের মধ্যেও স্টুডেন্ট মেনটেইনেন্স অ্যঅলাউন্স ও স্কুল মিলস চালু রাখাকে মেয়রের অসাধারণ কৃতিত্ব বলে উল্লেখ করেন। আহমদ নুর বলেন, টাওয়ার হ্যঅমলেটসকে আমরা লন্ডনের এক টুকরো বাংলাদেশ বলে মনে করি। প্রবাসী বাংলাদেশীরা যদি লন্ডনে এসে এক টুকরো বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারেন, তাহলে সিলেটকে কেন এক টুকরো লন্ডনে রূপান্তরিত করতে পারবেন না? আমি মনে করি, প্রবাসীরা এ ক্ষেত্রে আন্তরিক হলে খুব সহজেই সেটা সম্ভব। বাংলাদেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রবাসীদেরকে হয়রানী প্রশ্নে তিনি বলেন বাংলাদেশের মন্ত্রী, এমপিরা বৃটেনে যখন বেড়াতে আসেন তখন তাদের উপর চাপ প্রয়োগ করা উচিত। প্রবাসীদের সমস্যার প্রতি নজর না দিলে প্রবাসীরা কেন তাদেরকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানাবে।
মেয়র লুতফর রহমান দুই সাংবাদিককে মেয়র কার্যালয় পরিদর্শনে যাওয়ায় ধন্যবাদ জানান। তিনি টাওয়ার হ্যামলেটসের সকল কমিউিনিটির মানুষ- বিশেষ করে বাংলাদেশীদের জীবনমান উন্নয়নে তার কর্মপ্রচেষ্ঠার কতা উল্লেখ করে বলেন, মানুষের আশা-আকাংখার প্রতিফলন ঘটাতে আমার কেবিনেট আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচেছ। তিনি বলেন, আমরা টাওয়ার হ্যামলেটসকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্ঠা করছি। এই বারার পলিসি সকলের জন্য সময়। তবে বাংলাদেশী কমিউনিটির চাহিদা বেশী হওয়ায় তাদের প্রতি আমরা প্রাধান্য দিচ্ছি। তিনি বলেন, শিক্ষা ক্ষেত্রে আমরা অগ্রাধিকার দিয়ে যাচ্ছি। টাওয়ার হ্যামলেটস থেকে প্রতি বছর প্রায় ৪০০ ছেলে মেয়ে ইউনিভার্সিটিতে যায়। এদের উল্লেখযোগ্য অংশ বাঙ্গালী। লেখাপড়ায় মেয়েরা ভালো করছে। টাওয়ার হ্যামলেটসের স্কুলগুলোর শিক্ষাথীরা ভালো ফলাফল অর্জন করছে। সন্ত্রাসী কর্মকন্ডে আমাদের বারার ছেলে মেয়েদের সম্পৃক্ততা নেই। তিনি বিলেতের বাংলা মিডিয়ার ভূয়শী প্রশাংসা করে বলেন, স্থানীয় প্রশাসনে বাংলা মিডিয়া শক্তিশালী ভুমিকা পালন করছে। তিনি সফররত দুই সাংবাদিকের সুস্বাস্থ্য ও উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন।
নির্বাহী মেয়রের কমিউনিটি মিডিয়া এডভাইজার মুহাম্মদ জুবায়ের এর স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া মত বিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন ডেপুটি মেয়র কাউন্সিলার অহিদ আহমদ, সোস্যাল কেয়ার এডভাইজার কাউন্সিলার গোলাম রব্বানী, কেবিনেট মেম্বার ফর সোস্যাল কেয়ার কাউন্সিলার আব্দুল আসাদ, ডকল্যান্ডের কাউন্সিলার মাইয়ুম মিয়া, এমপ্লয়মেন্ট কেবিনেট মেম্বার কাউন্সিলর শফিকুল হক, লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের ভাইস াপ্রেসিডেন্ট ও জনমতের ম্যঅনেজিং ডাইরেকটর আমিরুল ইসলাম চৌধুরী, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পটাদক ও সাপ্তাহিক পত্রিকা সম্পাদক এমদাদুল হক চৌধুরী, সাপ্তাহিক লন্ডন বাংলা সম্পাদক বিশিষ্ট কমিউনিস্ট নেতা কে এম আবু তাহের চৌধুরী, সাপ্তাহিক সুরমা সম্পাদক আহমদ ময়েজ, সাপ্তাহিক বাংলা মিরর সম্পাদক আব্দুল করিম গনি, সাপ্তাহিক নতুন দিনের নির্বাহি সম্পাদক তাইছির মাহমুদ, চ্যানেল এস এর চীফ ক্যামেরাম্যান সুভাস দাস ও এটিএন বাংলা ইউেিকর প্রতিনিধ আবদুল কাদির।
ডেপুটি মেয়র অহিদ আহমদ বলেন, আমরা টাওয়ার হ্যামলেটসকে উন্নয়নের মডেল হিসেবে বহির্বিশ্বে তুলে ধরার চেষ্ঠা করছি। বিভিন্ন দেশ থেকে অনেক নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি আমাদের বারায় আসেন। তারা আমাদের সাথে সাক্ষাত করে আমাদের কর্মকান্ডের প্রশংসা করেন। অনেকেই আমাদের পলিসি অনুসরন করে থাকেন।
সাংবাদিক এমদাদুল হক চৌধুরী নির্বাহী মেয়রের বিভিন্ন সাহসী পদক্ষেপের কতা উল্লেখ করেন। প্রসংগত তিনি ৫ মিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় সাপেক্ষে পূর্ব লন্ডনের বাঙ্গালী কমিউনিটির ঐতিহ্যের ধারক ব্যাংক্রপট লাইব্রেরী রক্ষায় মেয়রের ভুমিকার কথা উল্লেখ করেন।
সাংবাদিক আবদুল বাতিন ফয়সল তাকে মেয়র কার্যালয়ে আমন্ত্রন জানানোর জন্য ধন্যবাদ জানান এবং নির্বাহী মেয়রের বিভিন্ন কর্মকান্ডের ভূয়শী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, লন্ডন সফরে এসে প্রবাসী বাংলাদেশীদের নানা সাফল্য দেখে তিনি অভিভূত হয়েছেন। বাংলাদেশীরা নিজেদের দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি প্রবাসে নিজেদের অবস্থানও অনেক সম্মানজনক স্থানে নিয়ে গেছেন। এটা নিয়ে আমরা গর্ববোধ করতে পারি।