করোনাভাইরাস
তুরস্ক চীনের পরেই দ্বিতীয় দেশ হিসেবে দূরশিক্ষণ চালু করেছে
অনলাইনে দূরশিক্ষনের সুবিধা পাচ্ছে তুরস্কের প্রায় ২ কোটি শিক্ষার্থী
যখন বিশ্বজুড়ে ১৫০ কোটিরও বেশী শিক্ষার্থী মুখোমুখি শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত, তখন তুরস্ক চীনের পরেই দ্বিতীয় দেশ হিসেবে দূরশিক্ষণ চালু করেছে। তুরস্কের শিক্ষামন্ত্রী জিয়া সেলকুক বলেন, আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বিশ্বব্যাপী সাফল্য অর্জন করেছি। দূরশিক্ষণের ক্ষেত্রে চীন ও তুরস্কের কাছাকাছি বিশ্বে আর কোন দেশ নেই যে তার জনগণকে দেশজুড়ে শিক্ষা প্রদান করছে। চীনের ‘ক্লাউড ক্লাসরুম’ অর্থাৎ ‘মেঘ শ্রেণীকক্ষ’ নামক একটি পদ্ধতি রয়েছে যা ১০ কোটিরও বেশী লোককে তাৎক্ষণিক দূরশিক্ষণ প্রদান করে।
শিক্ষামন্ত্রী আরো জানান, তুরস্ক বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে এবং এর অবকাঠামো শক্তিশালী করেছে।আমরা এটা করছি তুরস্কের শিক্ষা ব্যবস্হার রুপান্তর ও এটাকে সময়োপযোগী করার জন্য। তথ্য উপাত্ত অনুযায়ী, নভেল করোনাভাইরাস বিশ্বের ১৮৪ টি দেশের দেড়শ’ কোটিরও বেশী অর্থ্যাৎ ৮৭ শতাংশ শিক্ষার্থীর পড়াশোনায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে।
যখন অনেক দেশ করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে স্কুলসমূহ বন্ধ করে দিয়েছে তখন তুরস্ক ও চীন ঐসব গুটিকয়েক দেশের মধ্যে দুটি যারা অনলাইনে শিক্ষা অর্থাৎ দূরশিক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তুরস্কের ১ কোটি ৮০ লাখ শিক্ষার্থী অনলাইন ও টিভির মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণ করছে। দেশটির এডুকেশন ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক (ইবিএ) এবং সরকারী সম্প্রচারকারী টিআরটি-ইবিএ এটা পরিচালনা করছে।
ইবিএ এই মর্মে নিশ্চিত করেছে যে, প্রত্যেক শিক্ষার্থী যেনো মানসম্মত শিক্ষা পেতে পারে, যা সুষ্ঠু শিক্ষাদান নিশ্চিত করে।ইজমিরের একটি শিশু এবং সিরনাকের একটি গ্রামের কিংবা উরফার ছোট্ট জেলার একজন তরুণ এবং ইস্তান্বুলের একটি শিশু একই ধরনের শিক্ষার সুবিধা পাবে এবং তারা তা গ্রহণ করতে পারবে কোন ধরণের আর্থ – সামাজিক প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই। আমরা তুরস্কের সকল অঞ্চলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য সমান মান প্রদান করবো।
তিনি বলেন, এখন নগরীর মধ্যভাগের একটি স্কুল এবং পাহাড়ি এলাকার একটি স্কুলের দূরত্ব শুধু একটি পদক্ষেপ মাত্র।
শিক্ষার্থীরা ১৬ শ’ লেসন এর পাশাপাশি ২০ হাজারেরও বেশী ইন্টারেক্টিভ অর্থাৎ মিথষ্ক্রিয়া সন্জাত প্রকৃতির কনটেন্ট বা উপাদান পাবে।
তুরস্কের তিনটি শীর্ষস্হানীয় মোবাইল অপারেটরও শিক্ষার্থীদের ডাটাসহ ৮ গিগা-বাইটের ফ্রি ইন্টারনেট সুবিধা দেবে যাতে তারা অনলাইন শিক্ষা গ্রহন করতে হবে। মন্ত্রী বলেন, নতুন নতুন অ্যাপলিকেশনের মাধ্যমে প্রতিদিন ইবিএকে সম্প্রসারিত করা হবে। মানসম্মত পাঠ্যক্রম ছাড়াও এটা ইতোমধ্যে শিল্পকর্ম ক্রীড়া ও বৈজ্ঞানিক কর্মকান্ডকে পদ্ধতীটির মধ্যে সন্নিবেশিত করেছে। আমাদের ছেলেমেয়েরা নিরাপদ ও নিশ্চিতবোধ করতে পারে যে, গোটা প্রক্রিয়াটি আমাদের সরকারের নিয়ন্ত্রনাধীন রয়েছে। লাখ লাখ শিশু যাতে একই সময়ে পদ্ধতীটি ব্যবহার করতে পারে সেই লক্ষ্যে আমরা একটি ইবিএ নিয়ন্ত্রন কেন্দ্র স্হাপন করি।
পদ্ধতীতে কমপক্ষে ৫ হাজার বই ও ২ লাখ ৪০ হাজার প্রশ্ন রয়েছে শিক্ষকদের ব্যবহারের জন্য। এছাড়া এই সিস্টেম বা পদ্ধতিতে লাইভ ক্লাশসমূহের পরীক্ষা নিয়ে থাকে যেখানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী একে অপরকে দেখতে পান। যদি পাইলট কর্মসূচীটি কার্যকর প্রমাণিত হয় তবে ২ কোটি ৭০ লাখেরও বেশী শিক্ষার্থী এ ধরনের ক্লাশে যোগদান করতে পারবে।
আমাদের কেন্দ্রসমূহের ২৪/৭ টেকনিক্যাল টিমগুলো তাৎক্ষণিকভাবে যে কোন সমস্যা সমাধান করবে। করোনাভাইরাস মহামারির ক্ষতিকর প্রভাব দূরীকরণে শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারসমূহকে সহায়তা করতে একটি সাইকো-সোশিও সাপোর্ট সেন্টার (সামাজিক – মনস্তাত্ত্বিক সহায়তা কেন্দ্র) ও স্হাপন করেছে।
প্রত্যেক প্রদেশে একটি হটলাইনের মাধ্যমে পরামর্শকরা শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় সকল প্রকার পরামর্শ প্রদান করছেন। এছাড়া প্রতিবন্ধী কিংবা হাইপার অ্যাক্টিভিটি সম্পন্ন ছেলে মেয়েসহ ভিন্ন প্রকৃতির শিশুদের শিক্ষাদানের জন্য তাদের পিতামাতাদের জন্য বিশেষজ্ঞদের তৈরী ভিডিও রয়েছে।
মন্ত্রী সেলকুক পিতামাতা ও শিক্ষাকর্মীদের উদ্দেশে আরো বলেন, এই প্রক্রিয়ায় আমাদের ছেলেমেয়েদের বই পুস্তক পাঠ করতে হবে। একথা ভুলবেন না যে, প্রতিটি বই আপনাদের ভবিষ্যত পেশা, পারিবারিক জীবণ ও বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে অবদান রাখবে। মুভি দেখুন, মান সম্পন্ন সংগীত শুনুন এবং সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যাপারে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখুন।
ইবিএ প্লাটফর্মের স্কুলের বই, মিথষ্ক্রিয় পুস্তক, অ্যাপ্লিকেশন, পরীক্ষা এবং এর পাশাপাশি মিথষ্ক্রিয় বিষয়াদি, গবেষণা, সারাংশ, ইনফো গ্রাফিক্স, প্রোজেক্ট ডকুমেন্টস, শিক্ষকদের জন্য কনটেন্ট বা বিষয়সমূহসহ আরো অনেক কিছু রয়েছে।
পদ্ধতীতে কমপক্ষে ৫ হাজার বই ও ২ লাখ ৪০ হাজার প্রশ্ন রয়েছে শিক্ষকদের ব্যবহারের জন্য। এছাড়া এই সিস্টেম বা পদ্ধতিতে লাইভ ক্লাশসমূহের পরীক্ষা নিয়ে থাকে যেখানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী একে অপরকে দেখতে পান। যদি পাইলট কর্মসূচীটি কার্যকর প্রমাণিত হয় তবে ২ কোটি ৭০ লাখেরও বেশী শিক্ষার্থী এ ধরনের ক্লাশে যোগদান করতে পারবে।