মুফতি তকী উসমানী
মসজিদেই জুম্মা, ঘরে পড়তে হবে যোহর
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে মসজিদে জামাত ও জুম্মায় মুসুল্লির সংখ্যা সীমিত করে দেওয়া হয়েছে, সে প্রেক্ষিতে মসজিদে মসজিদে ও ঘরে জুম্মার নামাজ আদায় করা যাবে কিনা সে নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। মুফতি মাওলানা তকী উসমানী এক মৌখিক ফতোয়ায় সরকারের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে শুধু মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় করা যাবে মন্তব্য করে বলেন, ঘরে জুম্মা আদায় করা যাবে না, যোহর পড়তে হবে। বাংলাদেশের প্রখ্যাত আলেম মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদের সাথে হোয়াটসআপ বার্তায় মাওলানা উসমানী এই বক্তব্য প্রদান করেন।
ফতোয়ায় মাওলানা তকী উসমানী বলেন, ইফতা বিভাগের সহকর্মীদের সাথে পরামর্শ মোতাবেক আমাদের সিদ্ধান্ত এই যে, মসজিদে জুম্মার নামাজ করতে হবে, ঘরে পড়তে হবে যোহর। যেহেতু সরকারিভাবে মসজিদে যেতে নিষেধ করা হয়েছে, তাই সাধারণ মুসল্লিরা অক্ষম ও মাজুর হিসেবে চিহ্নিত হবে, অক্ষম ও মাজুরদের যোহর পড়তে হবে, এটিই ফুকাহাদের মত। অচিরেই এই বিষয়ে লিখিত ফতোয়া প্রদান করা হবে। মাওলানা উসমানী এর কিছু দলীলও বর্ণনা করেছেন।
‘সাধারণভাবে একশহরে সব মুসুল্লী একটি মসজিদে জমায়েত হয়ে জুম্মার নামাজ আদায় করবেন, এটিই ছিল ইসলামী রীতি। পরবর্তীতে প্রয়োজনে শহরে একাধিক জুম্মা আদায়ের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এখন ঘরে ঘরে জুম্মা আদায়ের অনুমতি দেওয়ার তো কোন প্রয়োজন বা অর্থ থাকতে পারে না। ইসলামী ইতিহাসে এর কোন দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় না।’ মাওলানা উসমানী যোগ করেন।
মাওলানা তকী উসমানী আরও বলেন, যেহেতু জুম্মার জন্য সরকারি অনুমতি প্রয়োজনীয় এবং ঘরের ক্ষেত্রে এমন অনুমতি পাওয়া যায় না, তাই ঘরে জুম্মা আদায় করা যাবে না। পাশাপাশি জুম্মায় অংশগ্রহণে সবার অনুমতি থাকতে হবে, তার প্রচার থাকতে হবে। যেহেতু ঘরে ঘরে জুম্মা আয়োজন করলে অনুমতি ও প্রচারের প্রাসঙ্গিকতা আসছে না, তাই জুম্মা আদায় করা যাবে না।
‘ঠিক এ কারণেই, জুফার আহমদ উসমানী লেখেন, মক্কায় জুম্মা ফরজ হওয়া সত্ত্বেও জুম্মা আয়োজন করা হয়নি। তবে নবীজি সাঃ মদিনায় ইসলামের প্রতিনিধি মুসআব বিন উমায়ের রাঃ কে মদিনায় জুম্মা আয়োজনের নির্দেশ দেন। এর থেকে বুঝা যায়, মক্কায় জুম্মা আয়োজনে প্রচার করা অসম্ভব হবার প্রেক্ষিতে মক্কায় জুম্মা আদায় করা হয়নি। এখান থেকেও ঘরে ঘরে জুম্মা না আদায়ের বিষয়টি বুঝে আসে। এখন ঘরে ঘরে জুম্মা আদায় করার অনুমতি থাকলে মক্কাতেও ঘরে ঘরে জুম্মা আদায়ের সুযোগ ছিল।’
অবশ্য মাওলানা তকী উসমানী বলেন, তবে যেহেতু এটি ইজতেহাদী বিষয়, তাই কোন নির্ভরযোগ্য আলেম দলীল-প্রমাণের ভিত্তিতে ভিন্নমত পোষণ করলে, সেটা মানারও সুযোগ আছে। যদিও সেটা আমাদের গৃহীত মত নয়।