১ লাখ ৪০ হাজারেরও বেশী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্ত
প্রথম দিনেই ১০ লাখ কর্মহীন স্টাফের জন্য সরকারী সাহায্যের আবেদন
ব্রিটিশ সরকার কয়েক লাখ ‘স্হগিত শ্রমিকের’ মজুরী প্রদানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে অর্থ সহায়তা দিচ্ছে
ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, স্কীমটি প্রচারের কয়েক ঘন্টার মধ্যে ১ লাখ ৪০ হাজারেরও বেশী ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ১০ লাখ কর্মহীন স্টাফের জন্য সরকারী সাহায্যের আবেদন করেছে। চ্যান্সেলর বলেন, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলো ‘করোনাভাইরাস জব রিটেনশন’ স্কীম থেকে ৬ দিনের মধ্যে নগদ অর্থ পাবে, যা ফারলো (স্হগিত শ্রমিক) হিসেবে পরিচিত তাদের স্টাফদের মজুরীর শতকরা ৮০ ভাগ সরকারী অর্থের দ্বারা পরিশোধের মাধ্যমে তাদেরকে একটি ছুটির মধ্যে রাখতে পারবে।
এইচএম রেভিনিউ এন্ড কাস্টমস (এইচএমআরসি) অনুসারে, স্কীম চালুর প্রথম আধ ঘন্টার মধ্যে নিয়োগ দাতারা ৬৭ হাজার চাকুরীর জন্য দাবি উত্থাপন করেন। করোনাভাইরাস মহামারির সময় অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখার লক্ষ্যে একটি ব্যাপক। সরকারী প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে মিঃ সুনাক গত মাসে পরিকল্পনা সমূহ ঘোষণা করেন।
প্রাত্যহিক ডাউনিং স্ট্রিট প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, এই অপরাহ্নের ৪ ঘটিকার মধ্যে (সোমবার ২০ এপ্রিল) ১ লাখ ৪০ হাজার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে এবং যে মন্জুরী তারা পাবে তা ১০ লাখেরও বেশী লোকের মজুরী পরিশোধে সহায়ক হবে।
সুনাক বলেন, ১০ লাখ লোক, যদি তারা ‘ফারলো’ (স্হগিত শ্রমিক) না হতো, তবে তারা তাদের চাকুরী হারানোর ঝুঁকিতে পড়তো। যুক্তরাজ্য কখনো এ ধরনের অর্থনৈতিক সংকট দেখেননি। তবে সরকার অর্থনীতি রক্ষায় ‘আদর্শ ও সনাতন চিন্তাধারা’ এক পাশে সরিয়ে রেখেছে।
তিনি আরো বলেন, নতুন স্কীম অর্থাৎ পরিকল্পনার লক্ষ্য হচ্ছে, আমাদের অর্থনীতির উৎপাদনশীল ক্ষমতাকে চাঙ্গা রাখা যাতে আমরা এই সংকটে সেতুবন্ধন গড়তে পারি।
মিঃ সুনাক ‘ফারলো’ স্কীমের ব্যয়ের পরিমাণ কিংবা এর সময়সীমা নির্ধারণে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, আমরা এখনো এ ব্যাপারে কোন হিসাব করিনি — এটা হচ্ছে স্কীম চালুর প্রথম দিন এবং আমার প্রত্যাশা আগামী দিনগুলোতে এই সংখ্যার বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে।
ব্যবসায়সমূহকে বুধবার পর্যন্ত পে-রোলের শেষ সময়সীমা হিসেবে আবেদন করতে হবে। আর আবেদন গ্রহণের দিন থেকে ৬ কার্যদিবসের মধ্যে অর্থ প্রদান করা হবে। রিজোলিউশন ফাউন্ডেশন থিংক ট্যাংক -এর প্রধান নির্বাহী টোরস্টেন বেল বলেন, এই স্কীমে দাবির প্রথম ধাপে ৩ মাস পর্যন্ত ব্যয় হবে ৪ দশমিক ২ বিলিয়ন পাউন্ড।
থিংক ট্যাংক এই মর্মে পূর্বাভাস প্রদান করে যে, প্রায় ১ কোটি ৭ লাখ লোক আগামী ৩ মাসে ‘ফারলো’ অর্থাৎ ‘স্হগিত শ্রমিক’ কিংবা বেকার হতে পারে। এক্ষেত্রে স্বল্প মজুরীর খাতগুলো সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
স্কীমটি গৃহস্হলীতে করোনাভাইরাস লকডাউনে ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসের লক্ষ্যে সরকারের মাল্টি বিলিয়ন পাউন্ড অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্যাকেজের অংশ।
নিয়োগ দাতারা সাময়িক ছুটিতে থাকা লাখ লাখ শ্রমিকের জন্য দাবি করবেন বলে প্রত্যাশা, এর মাধ্যমে মাসিক ২৫০০ পাউন্ড পর্যন্ত শ্রমিকদের মজুরীর শতকরা ৮০ ভাগ মেটানো হবে এই সরকারী অর্থে।
তবে স্কীমটি নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে। এর বিরোধীদের বক্তব্য হচ্ছে যে, শত শত সদ্য ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানও এর ফাঁক গলিয়ে ঢুকে পড়বে।
এ সুবিধা পেতে হলে কোম্পানী গুলোর ২৮ ফেব্রুয়ারীর পূর্ব পর্যন্ত পে-রোল থাকতে হবে, এর ৩ সপ্তাহ আগে মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য বরিস জনসন যুক্তরাজ্যে লকডাউন ঘোষনা করেন। বিরাধিতার মধ্যে ট্রেজারি নতুন স্টাফ গ্রহণে ১৯ মার্চ পর্যন্ত কাট-অফ পয়েন্ট নির্ধারণ করেন। তবে ফাইন প্রিন্ট প্রকাশ করে যে, নিয়োগ দাতাদের অবশ্যই ঐ তারিখের পূর্বের তাদের কর্মচারীদের বিষয়ে এইচএমআরসিকে অবহিত করতে হবে যার অর্থ হচ্ছে, কিছু লোক এখনো বাদ পড়ছে।
ইতোমধ্যে মিঃ সুনাক মহামারির সময় ক্ষুদ্র ও মাঝারি ধরনের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষায় শতভাগ সরকারী সহায়তাপুষ্ট ব্যবসায়িক ঋণ প্রদানের একটি আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন।
তিনি বলেন, ঋণ প্রদানকে দ্রুতকরণের বিষয়ে তিনি অত্যন্ত সহমর্মি, যদিও সরকারী গ্যারান্টি সত্বেও বাণিজ্যিক ঋণদাতারা অর্থ প্রদানে ব্যর্থ হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, ডাটা থেকে প্রতীয়মান হচ্ছে যে, ক্ষুদ্র ব্যবসায়কে ইতোমধ্যে ১২০০০ ঋণ দেয়া হয়েছে, যার গ্রহণের হার ৮০/৯০ শতাংশ, আর আবেদন রয়েছে ৩৫ হাজার।
5/ As we look ahead and start to plan for our recovery, it is critical we don’t just maintain companies and jobs that already exist.
But that we also encourage the businesses, jobs and technologies of the future. https://t.co/Y6ulSecuwI
— Rishi Sunak #StayHomeSaveLives (@RishiSunak) April 20, 2020