ব্রিটেনে করোনাভাইরাসের প্রথম টিকা প্রয়োগ

ব্রিটেনে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের পরীক্ষামূলক প্রথম টিকা দেওয়া হলো। এটি ইউরোপেও মানবদেহে প্রথম টিকা প্রয়োগ। আজ বৃহস্পতিবার দুজন স্বেচ্ছাসেবীর দেহে এই টিকা দেওয়া হয়। প্রথম ধাপে প্রায় ৮শ’র বেশি স্বেচ্ছাসেবীর দেহে এটা প্রয়োগের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এদের মধ্যে অর্ধেক কোভিড-১৯ এর জন্য টিকা গ্রহণ করবেন। আর বাকিরা গ্রহণ করবেন কন্ট্রোল ভ্যাকসিন যা মেনিনজাইটিস থেকে সুরক্ষা দেয়, তবে করোনা ভাইরাস থেকে নয়।
প্রথম টিকা নেওয়া দুজনের মধ্যে একজনের নাম এলিসা গ্রানাটো। তিনি বলেন, ‘আমি একজন বিজ্ঞানী, তাই আমি বৈজ্ঞানিক এই প্রক্রিয়াটিকে সহায়তা করতে চেয়েছি।’

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দল বিজ্ঞানী করোনা ভাইরাসের টিকা তৈরির কাজ শুরু করেন। জেনার ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী অধ্যাপক সারাহ গিলবার্ট এই গবেষণার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ব্রিটিশ সরকার ও ব্রিটেনের কয়েকটি দাতব্য সংস্থার অর্থায়নে ২০০৫ সালে গড়ে তোলা হয় জেনার ইনস্টিটিউট। উদ্দেশ্য সংক্রমণজনিত রোগ নিয়ে গবেষণা আর টিকা তৈরি।
অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনোলোজি অধ্যাপক বিজ্ঞানী সারাহ গিলবার্ট বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে এই ভ্যাকসিনের প্রতি আমার আত্মবিশ্বাস রয়েছে।’ কার্যকর একটি ভ্যাকসিন তৈরির গবেষণায় সাধারণত ১৮ মাস লেগে যায়। তারপরও তার টিম এখন যে টিকা তৈরি করছে সেটি সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকেই ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে বলে তিনি আশা করছেন।
এখন পর্যন্ত বিশ্বে করোনা ভাইরাসের ৮০টির মতো ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। এরই মধ্যে মানবদেহে প্রয়োগ করা হয়েছে তিনটি যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও যুক্তরাজ্যে।
উদ্ভাবকদের ধারণা জ্বর বা একটু গা ব্যথা হতে পারে ভ্যাকসিনটি নেওয়ার পর। প্রায় সব ভ্যাকসিনেরই এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। কার্যকারিতা ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিশ্চিতভাবে জানা যাবে পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরেই।
সারাহ গিলবার্ট জানান, কার্যকরী হলে শিশু থেকে বয়স্ক সবাইকে এই ভ্যাকসিনের আওতায় আনা যাবে।
আশার কথা হলো, ভ্যাকসিনটি যদি কার্যকরী হয় তাহলে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় পৃথিবীর সব মানুষের জন্য দ্রুততম সময়ে এটি উন্মুক্ত করবে।
যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক বলেন, ‘সাধারণ সময়ে টিকা তৈরির এ পর্যায়ে পৌঁছাতে বছরের পর বছর লেগে যায়, এবার এখন পর্যন্ত যে কাজ হয়েছে তাতে তিনি গর্বিত।’
ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী হ্যানকক করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রস্তুতের এ প্রচেষ্টায় সব ধরনের সহায়তা করার প্রতিশ্রম্নতি দিয়ে এ প্রক্রিয়ার জন্য নতুন করে তহবিল বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদে করোনাভাইরাসকে হার মানানোর সবচেয়ে ভালো পন্থা হচ্ছে টিকা।
উল্লেখ্য, দ্রুত পরীক্ষা সম্পন্ন করার জন্য ইম্পেরিয়াল কলেজকে ২ কোটি ২৫ লাখ পাউন্ড দিয়েছে বৃটিশ সরকার। অক্সফোর্ডকেও দেয়া হয়েছে ২ কোটি পাউন্ড।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button