পবিত্র মাহে রামাদানে সবার সুস্থ্যতা কামনা করলেন মেয়র জন বিগস

পবিত্র রামাদান মাস শুরুর প্রাক্কালে টাওয়ার হ্যামলেটস বারার মুসলিম কমিউনিটিকে শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানিয়েছেন। এক বার্তায় মেয়র বলেন, টাওয়ার হ্যামলেটসের অগনিত বাসিন্দা পুরো একটি মাস ইসলামি ক্যালেন্ডারের সবচেয়ে পবিত্রতম আধ্যাত্মিক মাস রামাদান পালন করবেন। এসময়ে স্বাস্থ্যবার্তা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শগুলো অনুসরণ করা খুবই গুরুত্বপুর্ণ, বিধায় করোনাভাইরাসের চলমান প্রাদুর্ভাবের সময় লোকজনের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও নিরাপদ রোজা পালন নিশ্চিত করতে টাওয়ার হ্যামলেটসের জিপি সার্ভিস সহযোগিতা করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, এটি স্মরণে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, যারা অসুস্থ্য অথবা দীর্ঘকালীন স্বাস্থ্য সমস্যা যাদের রয়েছে, তাদের জন্য রোজা রাখা অর্থাৎ উপবাস থাকাটা বাধ্যতামূলক হিসেবে বিবেচিত হয়না। এ ব্যাপারে বিস্তারিত উপদেশ প্রকাশ করেছে এনএইচএস। রমজানের সময় যদি আপনার মধ্যে করোনাভাইরাসের লক্ষণগুলো দেখা যায়, তাহলে পানিশূন্যতা এড়াতে রোজা ভাঙ্গার জন্য আমরা আপনাকে বিশেষভাবে পরামর্শ দিচ্ছি। যদি আপনি নিশ্চিত না হন, তাহলে অনুগ্রহ করে এনএইচএস এর পরামর্শ নিন।
সর্বাবস্থায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার গুরুত্ব তুলে ধরে মেয়র তাঁর বার্তায় বলেন, আমাদের সকলকে সুরক্ষিত রাখতেই সামাজিক দূরত্ব অর্থাৎ অন্যের কাছ থেকে নিজেকে ২ মিটার দূরে রাখার বিধানটি বিধান কার্যকর রয়েছে। তাই, এ সময়ে প্রযুক্তির সুবিধা ব্যবহার করে নানা উপায়ে রোজা রাখার পাশাপাশি পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের সাথে সংযুক্ত থাকা যাবে। তিনি বলেন, আপনি রোজা পালন করেন কিংবা না করেন, আমাদের সকলের কাজ হচ্ছে বাড়ির মধ্যে অবস্থান করা। এই কাজের মাধ্যমে আপনি যেমন এনএইচএস-কে রক্ষা করছেন, তেমনি জীবন বাঁচাতেও সহায়তা করছেন।
স্প্রিং সিজন বা বসন্তকাল শুরু হওয়ার কথা উল্লেখ করে মেয়র বলেন, আমরা এপ্রিলের দ্বিতীয়ার্ধে প্রবেশের সাথে সাথে মওসুমের পরিবর্তনগুলো লক্ষ্য করতে শুরু করেছি। উষ্ণ আবহাওয়া ও লম্বা দিন নিয়ে হাজির হয়েছে বসন্ত। যদিও এই পরিবর্তন আমাদের অনেকের মধ্যেই স্বস্তি বোধ নিয়ে আসতে পারে, কিন্তু লকডাউন বা অবরুদ্ধকালীন নানা ব্যবস্থাদি কার্যকর থাকায় বর্তমান সময়টি সকলের জন্যই নিঃসন্দেহে অনেক চ্যালেঞ্জের। পরিবর্তনের এই সময়ে যারা পরস্পরের খোঁজ খবর নিচ্ছেন এবং সরকারের নির্দেশনাগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করছেন, তাদের সকলকে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
মেয়র আবারও সবাইকে যে চারটি কারণে ঘরের বাইরে যাওয়া যাবে, সেটা সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, সত্যিকার অর্থেই যদি আপনার প্রয়োজন রয়েছে, এমন কোন সামগ্রী কেনাকাটা করতে হয়, একা একা অথবা আপনার সাথে বাস করেন এমন একজনকে সাথে নিয়ে দিনে মাত্র একবারের জন্য ব্যায়াম করতে, চিকিৎসার প্রয়োজনে অর্থাৎ ফার্মেসিতে যাওয়া বা অন্য কোন অসহায় ব্যক্তির জন্য অত্যাবশকীয় সামগ্রী পৌঁছে দেয়ার জন্য এবং যে কাজ ঘরে বসে করা সম্ভব নয়, শুধুমাত্র সেই কাজের নিমিত্তে কর্মস্থলে যাওয়া আসা করতে আপনি ঘরের বাইরে যেতে পারবেন। তবে যতটুকু সম্ভব কম ঘরের বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করা উচিত।
এদিকে কাউন্সিলের অপর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনাভাইরাস মহামারীর কারনে এবছরের এই পবিত্র মাসটি সম্পূর্ণ এক ভিন্ন পরিবেশে পালিত হবে। মূলত, রামাদান হচ্ছে সকলের একত্রিত হওয়া এবং এক কমিউনিটি হয়ে ওঠার উপলক্ষ। কিন্তু এবার সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিতান্তই প্রয়োজন না হলে বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থেকে নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করার সরকারি পরামর্শগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করা প্রত্যেকের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত মসজিদগুলো বন্ধ থাকবে, কিন্তু আপনি পরিবারের অপরপর সদস্য, অর্থাৎ আপনার সাথে বসবাস করছেন, তাদের নিয়ে একসাথে নিজ ঘরেই নামাজ বা ইবাদত করতে পারেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মুসলিম কাউন্সিল অব বৃটেন, ইস্ট লন্ডন মস্ক এবং ‘ওপেন ইফতা’ কর্তৃক রামাদান বিষয়ক নির্দেশিকা ও তথ্যাবলী প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে রামাদান মাসে ঘরে অবস্থান করেও কিভাবে নিজের কমিউনিটির সাথে সম্পৃক্ত থাকা যাবে, সেসম্পর্কিত সহায়তামূলক তথ্য পাওয়া যাবে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button