করোনাভাইরাস
৭০ বছরের মধ্যে যুক্তরাজ্যে গাড়ি বিক্রির হার সর্বনিম্ন, ৭৬ শতাংশ হ্রাস
এপ্রিলে শতকরা ৯৭ ভাগ হ্রাস, ঐ মাসে মাত্র ৪ হাজার নতুন কার নিবন্ধিত
করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউনের দরুন যুক্তরাজ্যে নতুন কার বিক্রির হার গত এপ্রিলে শতকরা ৯৭ ভাগ হ্রাস পায়। ঐ মাসে মাত্র ৪ হাজার নতুন কার নিবন্ধিত হয়। এটা ১৯৪৬ সালের পর থেকে সর্বনিম্ন বিক্রির সংখ্যা। ইন্ড্রাষ্টির ট্রেড বডির প্রাথমিক পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে। সোসাইটি অব মোটর ম্যানুফ্যাকচারারস্ এন্ড ট্রেডার্স (এসএমএমটি) জানায়, ঐসব বিক্রির মধ্যে ৭০ শতাংশ কোম্পানী সমূহের গাড়ির বছরে যুক্ত হয় এবং মহামারির আগে এগুলোর অর্ডার দেয়া হয়। ২০১৯ সালের একই মাসে ১৬৭০০০ নতুন কারের রেজিস্ট্রেশন অর্থাৎ নিবন্ধন হয়। কোভিড-১৯ এর বিস্তার ঠেকানোর কাজে সহায়তা হিসেবে ডিলারশীপ বন্ধ থাকায় চাহিদা ভেঙ্গে পড়ে। তবে কিছু সরবরাহ এখনো অব্যাহত আছে।
এসএমএমটি -এর চীফ এক্সিকিউটিভ মাইক হাউয়েস বলেন, পুরো এপ্রিল মাস যুক্তরাজ্যের শো-রুমগুলো বন্ধ থাকার ফলে মার্কেটের সবচেয়ে দুঃবস্হায় অবাক হওয়ার কিছু নেই। এই পরিসংখ্যান নজিরবিহীনভাবে ভয়াবহ কারণ এই খাতের ওপর লাখো মানুষের জীবিকা নির্ভরশীল।
অ্যাস্টন মার্টিন ল্যাগোন্ডা এবং জাগুয়ার ল্যান্ড রোভারসহ কিছু গাড়ি প্রস্তুতকারক এ মাসেই আবার গাড়ি উৎপাদন শুরু করতে যাচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন শ্রমিকদের নিরাপদ ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এক সময়ে যে পরিমান গাড়ি তৈরী করা হয়েছে তা এখন কীভাবে করা যাবে। ইন্ডাষ্ট্রির বিশ্লেষকরা এই বলে সতর্ক করেছেন যে, খাতটির ভবিষ্যত প্রত্যাশা, যা কোভিড -১৯ এর আগেই জটিল হয়ে পড়েছিলো, তার এখন বিষাদময়।
ক্লোজ ব্রাদার্স মোটর্স ফাইন্যান্স -এর সেইলস্ ডিরেক্টর সীন কেম্পল বলেন, মারাত্মক পতনের আশংকা আগে থেকেই ছিলো এবং এখন যুক্তরাজ্যের কার ইন্ডাষ্ট্রিকে একটি হোঁচট খাওয়ার মতো রাস্তা দিয়ে চলতে হবে।
তিনি আরো বলেন, যখন লকডাউন উঠতে শুরু করেছে, তখন আমাদের প্রয়োজন গ্রাহকদের ফিরে আসার বিষয়টি লক্ষ্য রাখা, যাতে শো-রুমগুলোতে অলসভাবে পড়ে থাকা গাড়িগুলোর বিক্রি ত্বরান্বিত হয়। লকডাউনের পর আমরা ইতোমধ্যে ইউরোপের গাড়ির বাজারে ডিলারদের তাদের স্টক পুনর্বিবেচনা ও মূল্য পুনঃনির্ধারন করতে দেখেছি।
সীন কেম্পল বলেন, একটি অনিবার্য প্রত্যাহারের পর ভবিষ্যত কম নিশ্চিত। উৎপাদনের ওপর বিধি নিষেধের ফলে স্হগিত হওয়া উৎপাদন ও বন্ধ গাড়ি রফতানি সংক্রান্ত সরবরাহের বিষয়গুলো আমাদেরকে শুরু করতে হতে পারে। দীর্ঘ মেয়াদে, চাহিদা প্রবনতার পরিবর্তন হতে পারে।
কঠিন অর্থনৈতিক পরিস্হিতিতে ক্রেতারা প্রায়শ: নতুন গাড়ি ক্রয় বাদ দিয়ে পুরোনো গাড়ি ক্রয়ের দিকে ঝুঁকে। যদিও করোনাভাইরাস গণপরিবহন ব্যবহারে বিরক্ত লেকজনকে অধিক গাড়ি ক্রয়ে আগ্রহী করতে পারে। যদি বিপুল সংখ্যক লোকজন পুরোনো, কম উপযুক্ত গাড়ি কিনে এবং বাস ও ট্রেন কম ব্যবহার করে, তবে ২০৫০ সাল নাগাদ ব্রিটেনের উচ্চাভিলাষি ‘জিরো কার্বন’অর্থাৎ শুণ্য কার্বন নিঃসরণের লক্ষ্য মাত্রা অর্জনের গতি দুর্বল হয়ে পড়তে পারে, যা চলমান জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধের জন্য একটি যথেষ্ট উচ্চাভিলাষি লক্ষ্য নয় বলে অনেক পরিবেশবিদের অভিমত।