ব্রিটেনে বেতনসহ ছুটির মেয়াদ অক্টোবর পর্যন্ত বর্ধিত
করোনা পরিস্থিতে ছুটিতে কর্মীদের মজুরি পরিশোধ সংক্রান্ত ব্রিটিশ চ্যান্সেলর ঋষি সুনাক ফারলো স্কীমের (অর্থাৎ কর্মহীনভাবে ঘরে থাকা লোকজনের বিষয়ে পরিকল্পনা) মেয়াদ বৃদ্ধির একটি ঘোষনা দিয়েছেন আজ মঙ্গলবার। তিনি বলেন, সরকার কর্মী এবং কোম্পানিগুলোর লকডাউনে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্তে সমর্থন দিয়েছে এবং সেখান থেকে বেরিয়ে আসাতেও সমর্থন দেবে। কর্মীরা তাদের মাসিক মজুরির ৮০ শতাংশ পাবেন বলে নিশ্চিত করেন সুনাক। তবে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, আগামী আগস্ট থেকে এই প্রকল্পের ব্যয় ভাগাভাগি করার কাজ শুরু করতে কোম্পানিগুলোর প্রতি আহ্বান জানাবে সরকার। বেতনসহ ছুটির মেয়াদ বাড়ানো হলে এতে অনেক কর্মী আসক্ত হতে পারে; এমন ধারণা প্রত্যাখ্যান করেছেন ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী।
শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ২০ লাখ মানুষ এর জন্য আবেদন করেছেন। তিনি করদাতা কর্তৃক অর্থায়নকৃত এই চাকুরী রক্ষন স্কীমের বিবরন চূড়ান্ত করছেন, যা ৭৫ লাখ শ্রমিককে তাদের মজুরীর ৮০ শতাংশ প্রদান করছে। এর পরিমান মাসিক ২৫০০ পাউন্ড পর্যন্ত।
ফারলো স্কীম অর্থাৎ এই স্হগিত শ্রমিক বিষয়ক পরিকল্পনা আগামী জুন মাসে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিলো, কিন্তু চ্যান্সেলর নিয়োগ দাতাদের তাদের স্টাফদের কাজকর্মে ফিরে যাওয়ার বিষয়টি সহজ করার জন্য পার্ট টাইমের সুবিধা প্রদান করবেন প্রত্যাশা করেন। তবে তিনি করদাতা অর্থায়নকৃত এই সহায়তা ৭০ শতাংশ এমনকি ৬০ শতাংশে নামিয়ে আনতে চান।
মিঃ সুনাক ইউনিভার্সেল ক্রেডিটের জন্য আবেদনকারী বিপুল সংখ্যক মানুষের সংখ্যা হ্রাসের লক্ষ্যে অক্টোবর পর্যন্ত ফারলো স্কীমের জন্য একটি অস্হায়ী মেয়াদ বৃদ্ধির ঘোষনা প্রদান করেন। গতকাল মন্ত্রীবর্গ এই মর্মে প্রকাশ করেন যে, সরকার এখন গত মার্চের মাঝামাঝি থেকে আবেদনকৃত প্রায় ২০ লাখ ইউনিভার্সেল ক্রেডিট দাবি প্রোসেস করেছে, যখন লক ডাউন ঘোষনা করা হয়।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী উইল কুইন্স গতকাল এমপিদের বলেন যে, প্রচুর আবেদন সত্বেও ইউনিভার্সেল ক্রেডিটের জন্য দশ জনের মধ্যে নয় আবেদনকারীকে ‘পূর্ণ ও যথাসময়ে’ অর্থ প্রদান করা হবে।
গতকাল বরিস জনসন এই মর্মে মোটামুটি নিশ্চিত করেন যে, স্কীমটি জুনের পরেও কোন না কোনভাবে অব্যাহত থাকবে।
তিনি এমপিদের উদ্দেশে বলেন: এই সংকট কালে আমাদেরকে সমাজের স্বল্প আয়ের লোকজনের দেখাশুনা করতে হচ্ছে, যারা কঠোর শ্রম দেয়। আমরা তাদের দেখভাল করা অব্যাহত রাখবো। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা জিম, নাইটক্লাব এবং অন্যান্য অবকাশ ও আতিথেয়তা ক্ষেত্রে কাজ করছে এবং মাসাধিককাল যাবত কর্ম থেকে বিরত রয়েছে তারাও এ ধরনের সুবিধার আওতায় রয়েছে বলে তিনি মনে করেন। কিছু আতিথেয়তাকে কমপক্ষে ৪ জুলাই পর্যন্ত চালু রাখার একটি প্রত্যাশা তাদের রয়েছে বলে তিনি জানান, যদি এটা একটি কঠিন কাজ এবং তা নির্দিষ্ট কিছু অবস্হার ওপর নির্ভর করবে।
তিনি বলেন, আমরা এই লক্ষ্যে কাজ করছি যাতে কিছু চাকুরী আবার চালু হয়ে যায়। অত:পর মধ্য মেয়াদে তা চালু থাকবে। আমি নিশ্চিত যে, যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি অত্যন্ত সহিষ্নু এবং তা পুনরায় প্রত্যাবর্তন করবে।
তিনি বলেন, আমাদেরকে অনেক কিছু খেয়াল রাখতে হচ্ছে, যদি আমরা খুব দ্রুত একটি ভ্যাকসিন না পাই তবে আমাদেরকে আরো ভাবতে হবে কী ভাবে আমাদের ব্যবসা গুলোকে মহামারি থেকে নিরাপদ রাখতে পারি। এই স্কীমের জন্য মিঃ সুনাককে অসংখ্য সতর্ক বাণী নিয়ে কাজ শুরু করতে হয়েছে।
দ্য রিজোলিউশন ফাউন্ডেশন চাইছে সরকার যেনো জুনের পরেও ফারলো স্কীম আংশিকভাবে অব্যাহত রাখে এবং ফারলো (স্হগিত) শ্রমিকেরা কর্মহীন অবস্হায় তাদের মজুরীর ৮০ শতাংশ পায়। বর্তমানে স্কীমের সুবিধা পেতে কর্মচারীদের সম্পূর্ন কর্মহীন হতে হবে।
ফাউন্ডেশনের প্রধান টরস্টেন বেল বলেন, সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত খাত সমূহের জন্য এই স্কীম দীর্ঘদিন ধাপে ধাপে চালু রাখা উচিত। চাকুরী রক্ষনের এই স্কীমের খরচ প্রায় ৫০ বিলিয়ন পাউন্ডে পৌঁছতে পারে। এটা একটি বিপুল পরিমান অর্থ এবং এই মহামারি কর্তৃক হুমকির সম্মুখীন আমাদের স্বাস্হ্য, অর্থনীতি ও জীবন যাত্রার জন্য তা ব্যয় কল্যাণকর বলে বিবেচিত হবে।
ট্রেজারি কমিটির চেয়ারম্যান চাকুরী রক্ষা ও সরকারী রাজস্বের ওপর চাপ কমানোর লক্ষ্যে ফারলো স্কীমে সহায়তা ৮০ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ৬০ ও ৪০ শতাংশ করার পক্ষপাতী, যাতে এর সুরাহা সহজতর হয়।
তিনি বলেন, জুনের শেষ থেকে চাকুরীদাতাদের ও ফারলো ব্যয়ে কিছু অবদান রাখা উচিত। এছাড়া ফারলোতে থাকা স্টাফদের পার্ট -টাইম কাজে উৎসাহিত করা উচিত।
1/ The job retention scheme will be extended, for four months, until the end of October.
By that point, we will have provided eight months of support to British people and businesses. Until the end of July, there will be no changes to the scheme whatsoever. pic.twitter.com/gQznY4c2Ir
— Rishi Sunak (@RishiSunak) May 12, 2020