ব্রিটিশ স্বাস্হ্যমন্ত্রীর ঘোষনা
এবারের ‘গ্রীষ্মকাল’ বাতিল, বিদেশ ভ্রমনের সম্ভাবনা নেই
ব্রিটিশ স্বাস্হ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক জাতির উদ্দেশে বলেছেন যে, এ বছর ‘গ্রীষ্মকাল বাতিল’, একই সাথে ছুটির দিনগুলোতে বিদেশ ভ্রমনের সম্ভাবনাও অনিশ্চিত। গ্রীষ্মকালীন বিনোদন ও অবকাশ যাপন এবার বাতিল কি-না, এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি এ জবাব দেন। তিনি বলেন,আমি মনে করি বিষয়টি এরকমই হবে। আমরা এ ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত গ্রহন করিনি। তবে এটা স্পষ্ট যে, আমরা কিছু আতিথেয়তা প্রতিষ্ঠান আগামী জুলাই থেকে পুনরায় খুলে দেবো যদি এই ভাইরাসের বিস্তার আমরা সাফল্যের সাথে হ্রাস করতে পারি।
তিনি আরো বলেন, কিন্তু এক ধরনের সামাজিক দূরত্ব রাখার ব্যাপারে অব্যাহত থাকবে। উপসংহারে এটা বলা যায় যে, এই গ্রীষ্মে বড়ো ধরনের বিলাসপূর্ণ আন্তর্জাতিক হলিডে অর্থাৎ ছুটিকালীন উৎসবের সম্ভাবনা নেই। আমি মনে করি, এটাই জীবনের বাস্তবতা।
মিঃ হ্যানককের এই বক্তব্য দেশের ঐসব পরিবারের প্রতি একটি বড়ো ধরনের আঘাত হয়ে এসেছে যারা এখনো ‘এই আশায়’ ছিলেন যে, এই গ্রীষ্মে বাইরে ভ্রমনের কিছুটা সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে এফসিও আবশ্যকীয় ভ্রমন ছাড়া সব ধরনের ভ্রমন নিষিদ্ধ করেছে। তবে আজ রিয়ান এয়ার ঘোষনা করেছে, তারা ১ লা জুলাই থেকে দৈনিক ১ হাজার ফ্লাইট পুনরায় চালু করতে যাচ্ছে, যাতে তাদের ৯০ শতাংশ স্বাভাবিক রুট অন্তর্ভুক্ত। এক্ষেত্রে যাত্রীদের অবশ্যই মুখে মাস্ক পরিধান করতে হবে।
এয়ারলাইনটি জানায় ইনফ্রা-ইইউ ফ্লাইট সমূহের ওপর সরকারের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও এয়ারপোর্টে জনস্বাস্হ্য বিধিমালা সাপেক্ষে ২০২০ সালের ১ জুলাই বুধবার থেকে তারা তাদের ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ফ্লাইটে প্রত্যাবর্তন করবে।
প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন কর্তৃক প্রদত্ত সরকারী রোডম্যাপ অনুসারে যুক্তরাজ্যে আগত সকল ভ্রমনকারীকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।তবে এক্ষেত্রে ফ্রান্স থেকে আগত ভ্রমনকারীদের জন্য এর প্রয়োজন নেই। ইতোমধ্যে স্পেন সকল বিদেশী ভ্রমনকারীদের জন্য ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন ঘোষনা করেছে। এটা শুরু হচ্ছে ১৫ মে থেকে।
স্পেন ব্যাপী বীচ অর্থাৎ সমুদ্র সৈকতগুলো ভ্রমন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর পর্যটকদের স্বাগত জানানোর জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। এজন্য বীচে পর্যটকদের জন্য সানবেদিং স্কোয়ার অর্থাৎ সূর্যস্নানের স্হানকে বেষ্টনীর মধ্যে রাখা হচ্ছে। এভাবে গোটা বীচকে ৭৮০টি স্হান সম্বলিত দড়ি দিয়ে বেষ্টিত ৫টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে, যার প্রতিটির আয়তন ৯ বর্গমিটার। এভাবে একটি রৌদ্র স্নানের স্হান অপরটি থেকে দেড়মিটার দূরত্বে অবস্হিত। এছাড়া সমুদ্রে গোসল করতে নেমে একজন থেকে অপরজন ৬ মিটার দূরত্বে থাকবেন। এক্ষেত্রে নিজেদের স্পট বা জায়গা বুক করার নিয়ম না থাকায় কাউকে এজন্য ভোরে তোয়ালে নিয়ে কাড়াকাড়ি বা টানাটানি করতে হবে না।
কোস্তা ব্রাভার ‘লোরেট ডি মার’ এক্ষেত্রে এক ধাপ এগিয়ে। তারা তাদের বীচ অর্থাৎ সমুদ্র সৈকত গুলোকে তিনটি ভিন্ন অংশে ভাগ করেছে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকানোর জন্য। লোরেট ও ফেনালস্ এই দুটি সবচেয়ে জনপ্রিয় সমুদ্র সৈকতকে কয়েকটি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়েছে এবং এতে পর্যটকদের সংখ্যা সীমিত ও প্রবেশ নিয়ন্ত্রন করা হয়েছে।
প্রতিটি সেক্টরে অতিরিক্ত সাহায্যকারী, লাইফগার্ড ও বাথরুমসহ নিজস্ব সেবা থাকবে। তিনটি সেকশন সৃষ্টি করা হয়েছে একটি বয়োবৃদ্ধদের জন্য, একটি ছেলেমেয়েসহ পরিবারের জন্য এবং অপরটি ছেলেমেয়ে ছাড়া বয়স্কদের জন্য, যেমন দম্পতি, সঙ্গী-সঙ্গিনী কিংবা বন্ধু বান্ধবদের গ্রুপের জন্য।