মুরসির জন্য পুরো পরিবার নিয়ে রাজপথের আন্দোলনে সমর্থকেরা
মুরাদ মাহমুদ মিসরের একজন বেসামরিক চাকুরে। তিনি কিছু অর্থ জমিয়েছিলেন হজের উদ্দেশ্যে। কিন্তু এখন তা তিনি ব্যয় করছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুরসিকে পুনর্বহালের দাবিতে চলমান তিন সপ্তাহের আন্দোলনে নিজের পুরো পরিবারকে নিয়োজিত রাখতে। মুরাদের ৩৯ জন আত্মীয় রাবা আল আদাবিয়া মসজিদের সামনে মুরসি সমর্থকদের বিক্ষোভ সমাবেশে সর্বক্ষণ উপস্থিত থাকেন। সারা দেশ থেকে এ ধরনের শত শত পরিবার যোগ দিয়েছে এ বিক্ষোভে। তারা মুরসিকে পুনর্বহালের আগে রাস্তা ছাড়বে না বলে অঙ্গীকার করেছে। রয়টার্স। রমজানের দিনের রোদের প্রখরতা থেকে রক্ষা পেতে ছোট্ট ছোট্ট তাঁবুতে রয়েছেন অনেকে। তারা এখানেই রাত কাটান। একটি তাঁবুতে বসে আছেন ৫১ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। তিনি বললেন, আমার ছেলে কাউকে আমার তাঁবুতে আসতে বললে কেউ দ্বিধা করে না। ছোট ছেলেরা খেলনা তলোয়ার নিয়ে খেলছে। গরমের তীব্রতা কমানোর জন্য এক ব্যক্তি বোতলের পানি ছিটাচ্ছেন। কখনো কখনো রাবা আল আদাবিয়া মসজিদের রাস্তাটিকে মনে হয় বিশাল সামার ক্যাম্প। আবার কিছুক্ষণ পরে তা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সারাদিন স্বাভাবিক থাকলেও সন্ধ্যায় হাজার হাজার মানুষ নেমে আসেন রাস্তায়। যেন সারাদিনের কাজের শেষে তারা সন্ধ্যায় বিক্ষোভে যোগ দিতে আসেন। মুসলিম ব্রাদারহুডের পক্ষে আন্দোলনের এ দৃশ্য মিসরের সেনাবাহিনীকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলছে। রাবা আল আদাবিয়া মসজিদের সামনে সবাই সর্বক্ষণ অবস্থান করেন এমন নয়। অনেকে দূর থেকে আসেন। আবার স্বল্প সময়ের জন্য বাড়িতে ফিরে যান। কিন্তু কয়েক হাজার মানুষ পবিত্র রমজান মাসে প্রখর তাপমাত্রা উপেক্ষা করে সেখানে সর্বক্ষণ কাটান। মুরাদ মাহমুদ ও তার স্ত্রী-সন্তানেরা পালাক্রমে ঘুমান পাশে রাখা গাড়িতে বা ওই ছোট্ট তাঁবুটিতে। দুপুরের পর মহিলারা বাড়িতে গিয়ে ইফতারসামগ্রী তৈরি করে ফিরে আসেন। মুরাদের কিশোর ছেলের এখন স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি চলছে। অতএব সে-ও আছে সর্বক্ষণ। আমর আল দিব নামে এক আইটি চাকুরে বিনা বেতনে ছুটি নিয়েছেন আন্দোলনে থাকার জন্য। তিনি বলেন, মুরসিকে পুনর্বহাল না করা পর্যন্ত আমরা এখানে প্রয়োজনে দুই বছর, তিন বছর থাকব। এভাবে শত শত পরিবার রাস্তায় অবস্থান নিয়েছে তিন সপ্তাহ ধরে। তারা এখানেই সারছেন ইফতার ও সেহরি। স্বতঃস্ফূর্তভাবে রয়েছেন তারা। আর নিজেদের সঞ্চয় ব্যয় করছেন মুরসিকে পুনর্বহালের আন্দোলনে।