ইংল্যান্ডের কাউন্সিল গুলোতে ২০ শতাংশ বাজেট কর্তনের আশংকা
ইংল্যান্ড কাউন্সিল সমূহের আশংকা করোনাভাইরাস মহামারির দরুন তাদেরকে ২০ শতাংশ বাজেট কর্তন করতে হবে এবং সমাজ সেবা সহায়তা ক্ষেত্রে ৩.৫ বিলিয়ন পাউন্ডের ঘাটতি মোকাবেলা করতে হবে। লেবার পার্টির দাবি, লকডাউনের ফলে যখন পার্কিং চার্জের মতো রাজস্ব আয় নেই বললেই চলে তখন কর্তৃপক্ষগুলোকে পাল্টা উর্ধমুখী ব্যয় নির্বাহ করতে গিয়ে ১০ বিলিয়ন পাউন্ডের ঘাটতি মোকাবেলা করতে হচ্ছে।
লেবার পার্টির বিশ্লেষন অনুসারে, জমার খাতে ২১ শতাংশ পর্যন্ত কর্তন করতে হতে পারে। স্হানীয় সরকার সমাজ সেবা খাতে ৩.৫ বিলিয়ন পাউন্ড পর্যন্ত ঘাটতি দেখা দিতে পারে, যেখানে ২২৫০০০ বয়স্ক সমাজ সেবার জায়গাগুলো এই আর্থিক সনে ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে তাদের অভিমত।
গত মঙ্গলবার সরকার সোশ্যাল কেয়ার বা সমাজ সেবার জন্য একটি অধিকতর ৬০০ মিলিয়ন পাউন্ড প্রদানের কথা ঘোষনা করে,যেখানে গত ২ মাসে কাউন্সিলসমূহকে ৩.২ বিলিয়ন পাউন্ডের সর্বোচ্চ অর্থ প্রদানের বিষয়টি রয়েছে।
কমিউনিটি মন্ত্রী রবার্ট জেনরিক গত বুধবার হাউস অব কমন্সে বলেন: আমি বলেছিলাম আমরা কাউন্সিলসমূহের পেছনে দাঁড়াবো এবং তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী অর্থ প্রদান করবো।আমরা ঠিক তা-ই করছি।
উত্তর লন্ডনের ইজলিংটন কাউন্সিলের নেতা রিচার্ড ওয়াটস বলেন, এটা অনিবার্য যে,কর্তৃপক্ষকে তাদের বার্ষিক সোশ্যাল কেয়ার অর্থাৎ সমাজ সেবা বাজেটের ৯০ মিলিয়ন পাউন্ড কর্তন করতে হবে। কাউন্সিলের মোট ব্যয়ের অর্ধেকেরও বেশী সমাজ সেবায় ব্যয় হয়। তাই বাজেটে কর্তন করতে গেলে সমাজ সেবায় হাত দিতেই হবে। আমার সন্দেহ এছাড়া প্রায় সবই বন্ধ করে দিতে হবে, এক মাসের বিন কালেকশনে পরিবর্তন আনতে হবে এবং অর্থের পরিমান এতো বেশী যে শেষ পর্যন্ত সোশ্যাল কেয়ার বা সমাজ সেবার দিকে যেতে হবে।
লোকাল গভর্নমেন্ট এসোসিয়েশান (এলজিএ) -এর সভাপতি এবং সেন্ট্রাল বেডফোর্ড শায়ার কাউন্সিল এর রক্ষনশীল দলের নেতা জেমস জেমিসনের হিসাব অনুযায়ী, কাউন্সিলসমূহকে চলতি বছরের সংকট মোকাবেলায় প্রায় ১৩ বিলিয়ন পাউন্ড ব্যয়ের সম্মুখীন হতে হবে।
লেবার পার্টির বিশ্লেষন অনুসারে, মোট ২২৫০০০ টি বয়স্ক সমাজ সেবার স্হান ঝুঁকিতে পড়বে, যেগুলোর মধ্যে ১৭৮ টি হচ্ছে দীর্ঘ মেয়াদী ‘কেয়ার প্লেইস’ অর্থাৎ সেবার জায়গা।
এলজিএ লেবার গ্রুপ ও নিউ ক্যাসল সিটি কাউন্সিলের নেতা নিক ফোবর্স বলেন, কাউন্সিল গুলো বর্তমানে অর্থায়নের ক্ষেত্রে যে শূণ্যতা মোকাবেলা করছে, তা ভয়াবহ।
সমাজ সেবা ব্যাপকভাবে কাউন্সিলসমূহ কর্তৃক অর্থায়নকৃত। আমাদের ব্যয়ের একটি বড়ো অংশ এর দ্বারা গঠিত। আমাদের একটি আইনানুগ দায়িত্ব হচ্ছে বাজেটকে ভারসাম্যপূর্ন করা তাই যতক্ষন না অর্থায়নের শুণ্যতাটুকু পূরন হচ্ছে, ততক্ষন কর্তনই অনিবার্য।
কাউন্সিলগুলো দশক ব্যাপী স্বল্প অর্থে অধিক সংখ্যক লোকের সেবা চালিয়ে যাবার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তবে যতক্ষন না সরকার এক্ষেত্রে এগিয়ে আসছে ততক্ষন কাউন্সিলগুলো শুধুমাত্র ঐসব লোককে সুরক্ষার জন্য কাজ করতে সক্ষম হবে যাদের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশী।
ছায়া কমিউনিটি ও স্হানীয় সরকার মন্ত্রী স্টিভ রীড বলেন, এই সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো, যা পারে তা সে করবে – যদি আমাদের কোন প্রিয়জন দেখতে পায় যে তার প্রয়োজন মুহূর্তে তার কাছ থেকে সেবা প্রত্যাহার করা হচ্ছে তবে সেটা হবে বিপর্যয়কর ও অগ্রহনযোগ্য।
কাউন্সিলগুলো করোনাভাইরাস মহামারির সময় কার পার্কসমূহ বন্ধ থাকায় গত এপ্রিলে কোন আয় করতে পারেনি। হাজারো লোক ইউনিভার্সেল ক্রেডিটের আশ্রয় নেয়ায় কাউন্সিল ট্যাক্সে মারাত্মক কর্তন সৃষ্টি হয়েছে। মহামারির দরুন বাণিজ্যিক সম্পত্তি থেকে আয়ও মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে।
লেবার পার্টির মতে, যদি লোকাল কাউন্সিলগুলো কর্তনের ক্ষেত্রে তাদের সোশ্যাল কেয়ার বাজেটে হাত না দেয় তবে তাদেরকে সকল লাইব্রেরী, শিশু পার্ক ও অবকাশ কেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হবে এবং পার্ক সমূহে ব্যয় করতে পারবে না এমনকি স্ট্রিট লাইট গুলোও আর জ্বালাতে পারবে না। এ অবস্হায় কোন উইন্টার গ্রিটিং পরিচালনা সম্ভব হবে না।
গৃহ সংস্হান, কমিউনিটি ও স্হানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের জনৈক মুখপাত্র বলেন, সরকার কাউন্সিল সমূহের সাথে ঘনিষ্টভাবে কাজ করে যাবে এবং এই জাতীয় আপৎকালীন সময়ে সহায়তা দিয়ে যাবে। এছাড়া ডিপার্টমেন্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রদেয় ২.৬ বিলিয়ন পাউন্ড পরিশোধের বিষয়টিও বিলম্বিত করবে এবং তারা এপ্রিলের প্রথম ভাগ পর্যন্ত সমাজসেবা মন্জুরী হিসেবে ৮৫০ মিলিয়ন পরিশোধ করেছে।