ব্রিটেনের প্রথম হিজাব পরা বিচারক
মিডল্যান্ডস সার্কিটের সহকারী বিচারক হিসেবে রাফিয়া নিয়োগ পেয়েছেন গত সপ্তাহে
হিজার পরেই বিচারকের আসনে বসলেন রাফিয়া আরশাদ। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে রীতিমতো ইতিহাস গড়েছেন। মেট্রো নিউজ বলছে, তিনিই দেশটির প্রথম ‘হিজাবি’ বিচারক। আজ থেকে ৩০ বছর আগে রাফিয়া আরশাদকে লোকে বলত এই পোশাকে আইনজীবী হওয়া যাবে না। তখন তিনি কিশোরী। চোখে-মুখে বিচারক হওয়ার স্বপ্ন। মানুষের কথায় সেই স্বপ্ন ছাড়েননি। ছাড়েননি হিজাব পরার অভ্যাসও। কঠিন মনের জোরে রাফিয়া এতদিন বাদে বলতে পারছেন, ইচ্ছা থাকলে সব হয়! ৪০ বছর বয়সী রাফিয়া শুধু আইনজীবীই হননি হয়েছেন বিচারপতিও। রাফিয়া নিয়োগ পেয়েছেন গত সপ্তাহে। মিডল্যান্ডস সার্কিটের সহকারী বিচারক হিসেবে।
তিন সন্তানের মা রাফিয়ার ইচ্ছা সব মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখবেন, ‘এটা অবশ্যই আমার থেকে বড়। আমি জানি এই অর্জন শুধু মুসলিম নারীদের জন্য নয়, সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অনেকে আমাকে মেইল করছেন। শুভকামনা জানাচ্ছেন। অনেক হিজাব পরা নারী বলছেন তারা এতদিন ভাবতেন হয়তো ব্যারিস্টার হতে পারবেন না। আমি সব মানুষের জন্য এই ভালোবাসা নিয়ে কাজ করে যেতে চাই।’
রাফিয়ার এই যাত্রা কতটা কঠিন সেটি বোঝা যায় তার পরের কথায়, ‘মাঝেমাঝে এখনো নানা ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। আমার পরিবার থেকে ১৯ বছর আগে আমার এক সাক্ষাৎকারের সময় হিজাব না পরার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। বাড়ির লোকেরা বলছিলেন, এটি পরলে আমার নম্বর কমে যাবে। আমি তাদের কথা শুনিনি।’
‘আমি নিজের সিদ্ধান্তে অটল ছিলাম। আমি যেমন তেমনই থাকতে চেয়েছি। ওই সাক্ষাৎকারে আমি টিকে যাই। ভালো বৃত্তি পাই। সেই ঘটনা আমাকে আরও আত্মবিশ্বাসী করে।’
পৃথিবীর সবাইকে একটি সমাজের নানা বৈচিত্র্যকে সম্মান করার আহ্বান জানিয়ে রাফিয়া বলছেন তিনি হিজাবের জন্য যেমন চাকরি পাননি তেমনি হিজাবের জন্য চাকরি আটকেও থাকেনি, ‘আমাকে নিয়োগ দেয়ার সময় কর্মকর্তারা জানতেন না যে আমিই প্রথম হিজাব পরা বিচারক হতে যাচ্ছি। আমাকে নেয়া হয়েছে মেধার ভিত্তিতে; হিজাব পরি সেজন্য নয়।’